জাহিদুর রহমান তারিক,
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের মৃত মল্লিক ডাক্তারের ক্রয়কৃত জমি জোরপূর্বক দখল করে ১০লাখ
টাকার ফলজ ও বনজ গাছ বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে
থানায় অভিযোগ দিয়ে উল্টো হয়রানী ও সাংবাদিক সম্মেলন করায় গ্রাম
এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের চাপড়ি গ্রামের মৃত
মনছুর আলী মল্লিকের ছেলে চুন্নু মল্লিক ও মেয়ে ছবুরন নেছা। তৎকালিন
সময়ে ছেলে চুন্নু মল্লিক হোমিও চিকিৎসক হয়ে শহরে বিয়ে করে
শহরেই বসবাস শুরু করে এবং মেয়ে ছবুরন নেছাকে বিয়ে দিয়ে ঘর জামাই
হিসেবে রেখে দেওয়া হয়। হোমিও কিচিৎসক মল্লিক কর্মরত কালিন সময়ে
পর্যায়ক্রমে গ্রামে ১২ বিঘা জমি ক্রয় করেন। ওই সময় তিনি জমির কিছু
অংশে ফলজ ও বনজ গাছ রোপণ করেন। এই জমি ডাক্তারে বোনের ছেলে নাসির
ও বসির দেখা শুনা করে আসছিল।
২বৎসর ৭মাস আগে কর্মস্থল শহরের কবি সুকান্ত সড়কের বাড়ীতে হঠাৎ
ষ্ট্রোক করে হোমিও কিচিৎসক মল্লিক মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি মা
গোলেজান নেছা,স্ত্রী সাবানা পারভিন,দুই কন্যা মিশু,মৌশি ও এক ছেলে
পিয়াসকে রেখে গেছেন। এরই মাঝে ভাগ্নে নাসির ও একই গ্রামের
চিকিৎসকের দুর সম্পর্কের ভাগ্নে(আত্মীয়) রশিদের সাথে বাগবিতন্ডা
হয়।
নাসির অবৈধ অস্ত্র উচিয়ে রশিদকে হুমকি দেয়। ওই সময় রশিদ বাদী হয়ে সদর
থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ নাসিরকে গ্রেফতার করে জেল
হাজতে প্রেরন করে। এর আগে অন্য ভাই-বোনকে ফাঁকি দিয়ে নাসির অতি
গোপনে তার ৯৫ বৎসর বৃদ্ধ নানী গোলেজানকে ফুঁসলিয়ে আজমা সম্পত্তি
(মৃত মল্লিক ডাক্তারের) শহরে ৪শতক,গ্রামের ৪বিঘা জমি রেজিষ্ট্রি করে ও
সোনালী ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা ৩লাখ টাকা টিপ সহি দিয়ে উঠিয়ে
নিয়েছে।
নাসির জেল হাজতে যাওয়ার পর পরিবারের মধ্যে বিষয়টি জানাজানির এক
পর্যায়ে ঝিনাইদহ পৌর সভায় মেয়র সাইদুল করিম মিন্টুর উপস্থিতিতে
একটি শালিশী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে গ্রামের জমি ফিরিয়ে দেওয়াসহ
সবকিছুই সমন্বয় করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় নাসির। কিছুদিন
অতিবাহিত করার পর সে ওই শালিশ প্রত্যাখান করে। পরে উপায়ন্তর না পেয়ে
চিকিসকের স্ত্রী শাম্মি খাতুন বিচার চেয়ে পোড়াহাটি ইউনিয়ন
পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরোনের কাছে একটি লিখিত
অভিযোগ দায়ের করে।
এরপর ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে নাসিরকে শালিশী বৈঠকে ডাকা হলে সে
উপস্থিত হয়নি। পরে নাসির প্রশাসন ও গ্রাম্য লোকজনদেরকে ম্যানেজ করে
জোরপূর্বক ১০ লাখ টাকার ফলজ ও বনজ গাছ বিক্রি করে দিয়েছে এবং ১০
বিঘা জমি অন্যের কাছে লিজ ও বন্দুক রেখে আরো ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে
দিয়েছে।
বর্তমানে অসহায় মৃত চিকিৎসকের মেয়ে মৌশিকে দুরাগ্য রোগে
আক্রান্ত হয়েছে। তাকে চিকিৎসা করাতে অনেক টাকার প্রয়োজন। অসহায়
স্ত্রী শাম্মি খাতুন স্বামীর ক্রয়কৃত রেখে যাওয়া সম্পত্তি ভোগদখলের জন্য
বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের
হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এব্যাপারে নাসিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে
তিনি সবকিছু স্বীকার করে জানান মামীর কাছে ৫৭ হাজার টাকা
পাওয়ানা রয়েছে।
এজন্য আমিন এই জমি অন্যের কাছে লিজ দিয়ে টাকা পরিশোধ করে
নিচ্ছি। তিনি আরো জানান,আমি আমার নানীকে দেখা শুনা ও লাখ লাখ
টাকা খরচ করে চিকিসা করিয়ে আসছি। তার সম্পত্তি আমি ছাড়া নেবে
কে ?