শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

তালায় ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠছে নিবন্ধন বিহীন এনজিও

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৬
  • ৩৭৮ বার পড়া হয়েছে

সেলিম হায়দার,তালা

সাতক্ষীরা তালায় ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠছে নিবন্ধন বিহীন এনজিও। দিনের পর

দিন বাড়ছে এসব এনজিও’র সংখ্যা। অনেকেই প্রশাসনের নজর এড়িয়ে এসব কর্মকান্ড

চালাচ্ছে। এছাড়া প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে, ভূয়া নিবন্ধন নাম্বার ব্যবহার করে চালিয়ে

যাচ্ছে তাদের কার্যক্রম। চক্রটি সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ

টাকা। প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। এসব এনজিও’র

তালিকায় রয়েছে দিশারী মাল্টিপারপোস কোঅপারেটিভ সোসাইটি, দৃষ্টি সঞ্চয় ও

ঋণদান সমবায় সমিতি, প্রাইম মাল্টিপারপোস, সাকস্ধেসঢ়;স মাল্টিপারপোসসহ বেশ

কয়েকটি এনজিও। কিছুদিন পরে সাধরণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে

লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে এসব এনজিও গুলো। সংশ্লিষ্ট এনজিও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের

বাড়ী গিয়ে টাকা চাইলে তারা নানান টালবাহানা করতে থাকে গ্রাহকদের সাথে।

এদিকে এসব এনজিও কর্মকর্তাদের সাথে মুঠোফনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে

তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে কথা হয় দৃষ্টি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সভাপতি

আজগর হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, “ভাই আমরা জানুয়ারী/২০১৬ থেকে কাজ শুরু

করেছি। এখন প্রাথমিক ভাবে সদস্যদের কাছ থেকে সঞ্চয় গ্রহণ কার্যক্রম চলছে।

ভবিষ্যতে যদি আমাদের কোন গ্রাহক কোন সমস্যায় পড়ে ঋণ চায় তাহলে আমরা

তাদেরকে ঋণ দিয়ে আর্থিক সহায়তা করবো।” তবে এ সঞ্চয়ের টাকার উপর কোন লভ্যাংশ

ভবিষ্যতে দিবেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখনো রেজুলেশনে এমন কোন

সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। তবে আমরা কিছু লভ্যাংশ দিতে পারি। তালা উপজেলার

বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের কিছু বাজারে

এসব এনজিও নামের ভুয়া সাইনবোর্ড। যার মধ্যে রয়েছে উপজেলার মাগুরা বাজারে দৃষ্টি

সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এর নামে ২টি সাইন বোর্ড তার একটিতে লেখা

আছে “সমবায় সমিতি ৬৫/সাত” এবং অপরটিতে লেখা আছে “যুউঅ ৬৫/সাত”। এই

প্রতিষ্ঠানটির হ্যান্ডবিল বিবরণীতে দেখা যায় “ইসলামী শরীয়াহ্ধসঢ়; অনুযায়ী

পরিচালিত” ক্ষুদ্র বিনিয়োগ প্রকল্প, গৃহ সামগ্রী বিনিয়োগ প্রকল্প, দ্বিগুণ মুনাফা

প্রকল্প, ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প, দৈনিক সঞ্চয় প্রকল্প, মাসিক সঞ্চয় প্রকল্প, মাসিক লভ্যাংশ প্রকল্প,

হজ্জ্ব প্রকল্প, শিক্ষা প্রকল্পসহ অনেকগুলি প্রকল্পের কার্যক্রম তারা পরিচালনা করে যাচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী জানায়, এখানে একটি অফিস আছে কিন্তু কোন কার্যক্রম

এখানে হয় না। বাইরে গ্রামাঞ্চেলে মহিলাদের নিয়ে সমিতি গঠন করে এবং মাঝে-মধ্যে

মহিলারা এখানে আসা যাওয়া করে। অফিস ঠিক মত খুলতে দেখা যায়না, লোকের দেখাও

তমন মেলেনা। এদিকে ফিস চলাকালীন সময় অফিসে গেলে সংস্থার পরিচালক ও

ম্যানেজারকে পাওয়া যায়নি। তবে মাঠকর্মীদের সাথে কথা বললে নাম না প্রকাশ করার

শর্তে তারা জানান, আমরা এ বিষয় কোন কিছু জানিনা, পরিচালক ও ম্যানেজার ভাল বলতে

পারবে। তাদের বেতনের কথা জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, আমরা ঠিকমত বেতন পায়না।

কথা বলে জানা গেছে, এক একজন কর্মীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা জামানত

হিসাবে নিয়েছে তারা। এ ব্যাপারে তালা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল

হক জানান, “এই নামে আমার দপ্তর থেকে কোন রেজিষ্ট্রেশন দেওয়া হয়নি। তিনি

পরিচালকের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন (যার মোবাইল নং- ০১৯১২-২৯৩৫৭০) এবং

পরিচালক বলেন, যে আমার নিবন্ধন নেই খুব তাড়াতাড়ি নিবন্ধন নিব স্যার।” পরবর্তিতে

তালা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, আমার রেজিষ্ট্রেশনে কোন

প্রকার হজ্জ্ব প্রকল্প, শিক্ষা সঞ্চয় প্রকল্প, দ্বিগুণ মুনাফা প্রকল্প এর আওতাধীন নয়। কিন্তু

সমবায় রেজিষ্টার খাতায় দেখা যায় দৃষ্টি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির নামে একটি

নিবন্ধন আছে সুভাষিনীর। অবৈধ ভাবে মাগুরা বাজারে প্রকল্পের অফিস পরিচালিত হচ্ছে

যা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকট থেকে অনুমোদন নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনার

নিয়ম থাকা শর্তেও খোঁজ নিয়ে জানা যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে এ

বিষয়ে কোন তথ্য তাদের কাছে নেই। এদিকে দৃষ্টি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির

সদস্য মো. মোজাম্মেল মোড়ল ২০১৫ সালের দিকে পাইকগাছা এলাকায় আলোক নামে

একটি এনজিও অফিস পরিচালনা করতেন। কিন্তু বিভিন্ন এলাকার প্রতারণার শিকার হয়ে

মানুষের অভিযোগের মাধ্যমে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কবীর আহম্মদ

মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে প্রতারণা ও এনজিওর কাগজপত্র সঠিক না থাকায় ৬

মাসের জেল ও ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ঠিক তেমনি কাজ পরিচালনা করছে তালা

মাগুরা বাজারে। এলাকাবাসি ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠা নিবন্ধন বিহীন ঐসব

এনজিও গুলির বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তালা উপজেলা নির্বাহী

অফিসার,সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জনুরী হস্তক্ষেপ কামনা

করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451