জাহিদ হাসান,সরিষাবাড়ি , জামালপুর থেকে: জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে টানা কয়েকদিনে উপজেলার সর্বত্র ভয়াবহ লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। বিদ্যুতের ভেল্কিবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে জনজীবন। এতে ক্রমেই ফুসে ওঠছে গরমে নাকাল হয়ে পড়া জন সাধারন। আধা ঘন্টা-১ ঘন্টা পরপর ২-৩ ঘন্টার লোডশেডিং ও ২৪ ঘন্টায় অন্তত ২০ ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন সময় কাটাতে হচ্ছে উপজেলাবাসীকে। আর এ ঘটনা সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত আরো মারাত্মক।
গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রায় ১৫ দিন ধরে প্রতিদিন গড়ে ১৭-১৮ ঘন্টা বিদ্যুৎ ছাড়া থাকতে হচ্ছে জন সাধারনকে। প্রচন্ড গরমে সবচেয়ে বেশি শিশু, বৃদ্ধ ও রোগিরা অতিষ্ঠ সময় পার করছে। অপরদিকে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা।
সরিষাবাড়ী অনার্স কলেজের এইচএসসি পডুয়া শিক্ষার্থী মো. জাকারিয়া জানায়, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারনে গরমের মধ্যে লেখাপড়া ব্যাপকভাবে ক্ষতি হচ্ছে। পড়তে বসলেই গরমে গাঁ ঘেমে পানি পড়ায় কিছুতেই পড়াশোনায় মন বসছে না। এতে সামনের পরীক্ষা নিয়ে হতাশ সে।
আরামনগর বাজারের মুদি ব্যবসায়ী ঝরু মিয়া জানান, টানা লোডশেডিং থাকায় ব্যবসা মন্দা চলছে। গরমে দোকানে বসে থাকাই কষ্টকর, এরমধ্যে ব্যবসা জমবে কিভাবে?
জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলায় পিডিবি’র আওতাধীন প্রায় ১১ হাজার ও পল্লীবিদ্যুতের আওতায় প্রায় ৫২ হাজার বৈধ গ্রাহক রয়েছেন। এছাড়া নিয়মের বাইরে টানা ও চোরাই লাইনে রয়েছে আরো দেড়গুন অবৈধ গ্রাহক। এতে গ্রাহকদের সাধারন চাহিদা পুরনে ব্যাপকভাবে হিমশিম খাচ্ছে পিডিবি ও পল্লীবিদ্যুৎ। এ ব্যাপারে স্থানীয় পল্লীবিদ্যুতের এজিএম (অর্থ) তানভির আলম জানান, ‘এ উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের চাহিদা ১১ মেগাওয়াট, কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ ৩ মেগাওয়াট।’ এদিকে পল্লীবিদ্যুতের কন্ট্রোলরুমের গ্রাহকসেবা নাম্বারে শতবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ হয় না বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেন। এতে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত যে কোন দুর্ঘটনা নিয়ে অনাকাঙ্খিত শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
এদিকে পিডিবির আবাসিক প্রকৌশলী জামাত আলী আকন্দ জানান, সরিষাবাড়ীতে পিডিবি’র চাহিদা ৬ মেগাওয়াট, কিন্তু মিলছে সর্বোচ্চ ২ মেগাওয়াট। আশুগঞ্জ থেকে বিদ্যুতের যে লাইনটি এসেছে তার ধারন ক্ষমতার চেয়ে লোড বেশি হওয়ায় এবং শম্ভগঞ্জ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কম থাকায় এ সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি জানান। তবে শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
পিডিবি’র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারী ও সাধারন গ্রাহকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পিডিবির অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজশে নির্ধারিত এরিয়ার বাইরে অবৈধভাবে বিভিন্ন অ লে বিদ্যুতের লাইন সম্প্রসারন করায় পিডিবি’র আওতাধীন বিদ্যুতের ভেল্কিবাজি চরমে ওঠেছে। একশ্রেণির দালালদের মাধ্যমে পিডিবির অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অবৈধ অর্থের মালিক হলেও মিলছে না কাঙ্খিত গ্রাহক সেবা। এতে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা যে কোন সময় ফুসে ওঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতনমহল