ঝালকাঠি সংবাদদাতাঃ-সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি, সাড়াদিন আমি যেন ভাল হয়ে চলি। আদেশ করেন যাহা মোরগুরু জনে, আমি যেন সেই কাজ করি ভাল মনে। সাধারণত গুরু বলতে আমরা শিক্ষককেই বুঝি, যিনি আমাদেরকে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। সেই গুরুই যদি না থাকে তা হলে কে শিক্ষা দিবেন। আবার যদি ১১৩ জন শিক্ষার্থীর জন্য গুরু থাকেন এক জন। তা হলে তিনি কতটুকু শিক্ষা দিতে পারেন তা খুব সহজেই বুঝা যায়। এমন একটি গুরুহীন বিদ্যালয়ের খবর মিলেছে ঝালকাঠির কাঠালিয়ায়। যা ২০ নং মধ্য নেয়ামতপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে পরিচিত। যেখানে শিশু শ্রেণিতে ২০, প্রথম শ্রেণিতে ২১ জন, ২য় শ্রেণিতে ২৫ জন, ৩য় শ্রেণিতে ২৩, ৪র্থ শ্রেণিতে ২০ ও ৫ম শ্রেণিতে ১৪। সর্ব মোট ১১৩ জন শিক্ষার্থীর অনুকুলে শিক্ষক রয়েছেন একজন। তিনিই নাকি আবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। ওই বিদ্যালয়ের কর্মরত শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১ বছর যাবৎ আমি একাই বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে আসছি। কিভাবে এত ক্লাশ পরিচালনা করেন জানতে চাইলে তিনি জানায় প্রতিটি ক্লাশে যতটুকু সময় দরকার তা না দিয়ে একটু সময় কম করে দিয়ে কয়েকটি ক্লাশ বেশী নিয়ে থাকি। সব ক্লাশ একার পক্ষে নেয়া সম্ভব হয় না। আবার যে দিন উপজেলায় শিক্ষকদের মাসিক সভা থাকে তখন আমার আত্মীয় স্বজন দ্বারা বিদ্যালয়ে ক্লাশ পরিচালনা করি। তাদেরকে না পেলে মাঝে মাঝে ক্লাশ বন্ধও থাকে। তবে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আমার সাধ্যমত ক্লাশ নেয়ার চেষ্টা করি। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম জানান, একটি বিদ্যালয়ে পাঠদান দিতে কমপক্ষে চার জন শিক্ষক প্রয়োজন। সেখানে একটি বিদ্যালয়ে মাত্র একজন শিক্ষক। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সরকারি বিধি ছাড়া আমরা কিছুই করতে পারি না। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলীর একটি বিধি বিধান রয়েছে। বিধি অনুযায়ী উক্ত বিদ্যালয়ে বর্তমানে কোন ক্রমেই শিক্ষক দেয়া যায় না। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগযোগ করা হয়েছে। তবে আমার পূর্বের শিক্ষা অফিসার দুই মাস পূর্বে অন্য বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে মৌখিক ভাবে ওই বিদ্যালয়ে পাঠদানের অনুমতি দিয়েছেন।