শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০১:৫৬ অপরাহ্ন

ঔষধ সংকটে চাঁদপুরের সকল কমিউনিটি ক্লিনিক

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০১৭
  • ২৭৭ বার পড়া হয়েছে

মাসুদ হোসেন, চাঁদপুর প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ ২-৩ মাস থেকে চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৪৩ টি কমিউনিটি ক্লিনিক ঔষধ ছাড়াই চলছে চিকিৎসা সেবা। যার কারণে সাধারণ জনগণ চিকিৎসা সুবিধা হতে বঞ্চিত হয়ে পড়েছেন।
গ্রাম অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দোরগোড়ায় পৌছে দেয়ার জন্য সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো স্থাপন করেন। তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রতি ছয় হাজার জনসংখ্যার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে (সাবেক) একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়। উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের স্থানীয় দানশীল ব্যক্তির দানকৃত জমির উপর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় পাকা অবকাঠামো যুক্ত ৪৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক। নিয়োগ দেয়া হয় সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোপাইডার)। এদিকে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো থেকে মানুষ স্বাস্থ্য সেবা পেতে না পেতেই প্রয়োজনীয় ঔষধ সংকট দেখা দেয়। এতে করে গ্রাম অঞ্চলের সাধারণ মানুষ প্রকৃত স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে। ক্লিনিক গুলোতে প্রায় ২-৩ মাস থেকে ঔষধ সরবরাহ না থাকায় চিকিৎসা কার্যক্রম মারাত্ত্বক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি ক্লিনিকে সু-চিকিৎসায় সহায়তা করার জন্য ল্যাপটপ প্রদান করা হলেও অনেক সিসিতে বিদ্যুৎ না থাকায় সেগুলো দায়িত্বরত সিএইচসিপিরা ব্যবহার করতে পারছে না। অনেক সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোপাইডর) ল্যাপটপ গুলো নিজ বাড়িতে নিয়ে রিপোর্ট প্রদান করে থাকেন। এছাড়া ক্লিনিকগুলো সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা থাকলেও যথা সময়ে তা খোলা হচ্ছে না অনেক সিসি। এদিকে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ক্লিনিক গুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকার চিকিৎসা নিতে আসা অসহায় মানুষদের। এতে করে তারা চিকিৎসা সেবা হতে বাধ্য হচ্ছে প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাতুড়ে ডাক্তারদের উপর। ফলে ভোগান্তির পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকা গুণতে গিয়ে সর্বস্বাশান্ত হতে হচ্ছে রোগাক্রান্ত অসহায় মানুষদের। বুধবার (১৯ জুলাই) সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের দাসেরগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ক্লিনিকে প্রায় ২ মাস যাবত কোন ঔষধ নাই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএইচসিপি তাহমিনা আক্তার বলেন- আমাদের কাছে শুধুমাত্র কৃমিনাশক ট্যাবলেট এলবেন্ডাজল ও ভিটামিন “এ” ক্যাপসুল ছাড়া কোন ঔষধ নাই। চিকিৎসা সেবা নিতে রোগীরা ফিরে যেতে হচ্ছে ঔষধ না নিয়েই। তিনি আরও বলেন, ঔষধ থাকাবস্থায় দৈনিক ৭০-৮০ জন রোগীকে সেবা দিয়েছি আর এখন ১০-১৫ জন রোগীকে সেবা দিতেই মুশকিল হয়ে পড়েছে। এছাড়াও এই ক্লিনিকে ডেলিভারি করানোর কথা থাকলেও বাড়তি রুম না থাকায় কোন ডেলিভারি করাতে পারছি না। এবং টিউবওয়েলটিও মাঝে মাঝে নষ্ট হয়ে যায়। এ দিকে ইউনিয়নের কেতুয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মন্জুরুল হক ইয়াসিন ও ভাটেরগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি ওমর ফারুক সুমন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন- চাঁদপুরের সকল সিসি’তে ঔষধ না থাকায় আমরা রোগীদের সেবা দিতে পারছি না। এ ছাড়াও আমাদের সিসি’র স্যানিটেশন, নলকূপ গুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে এবং ক্লিনিকের চারপাশে কাঁটা তারের বেড়া না থাকায় মানুষ গরু ছাগল বেঁধে নষ্ট করে রাখে ক্লিনিকের সৌন্দর্য। ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন মাহমুদ বলেছিলেন কোন বরাদ্ধ এলে আমাদের সমস্যা গুলো সমাধান করে দিবেন। এসব সমস্যার কারনে আমাদের ক্লিনিকগুলোর ভাবমূর্তি দিন দিন ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করবো আমাদের এসব সমস্যার দ্রুত সমাধান করার জন্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451