মাসুদ হোসেন, চাঁদপুর প্রতিনিধিঃ ২৫০ শয্যা চাঁদপুর সদর হাসপাতালে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের কাছে সেবা সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। এরপরও ভাল সেবা পাওয়ার আশায় হাসপাতালে রোগীদের উপচেপড়া ভীড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। টিকিট কাটতে হিমসিম খাচ্ছে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। কোন রকমে টিকিট কেটে যদি কাংক্ষিত ডাক্তারকে রুমে না পান, তাহলে ভোগান্তির শেষ থাকে না।
১৬ জুলাই রোববার সকালে আউটডোরে অনেক রোগীর ভিড় জমে যায়। এর মধ্যে চিকুন গুনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীই বেশী। বেলা বারোটা থেকে একটা পর্যন্ত হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় দেখা গেছে ২০৪ নং কক্ষের সামনে ,শিশু বাচ্চা নিয়ে মহিলাদের দীর্ঘ লাইন। সবাই টিকিট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু নির্দিষ্ট চেম্বারে নেই ডাক্তার। তখন রোগীরা বলছে, আমরা অনেক দূর দূরান্ত থেকে হাসপাতালে এসেছি,ডাক্তারও দেখাতে পারছিনা ঔষধও দিচ্ছেনা। তৃতীয় তলায় গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতাল তত্ত্বাবধারক ডাঃ প্রদীপ কুমার দত্তও তাঁর অফিস রুমে নেই। হাসপাতালের বারান্দায় দাড়িয়ে থাকা একজন মহিলা রোগীর কাছে জানতে চাইলে তিনি করুণ সুরে বললেন, আর ডাক্তার। এখানে ডাক্তার দেখাতে আসলেই পুরো দিন শেষ। চিকিৎসার নামে আমাদের সরকারী জেলা হাসপাতালে সাধারন মানুষ তেমন চিকিৎসা পাচ্ছেনা,পাচ্ছে কষ্ট আর দুর্ভোগ। বিড়ম্বনা তো আছেই। ডাক্তারের দৃষ্টি প্রাইভেট হাসপাতাল আর বিভিন্ন প্যাথলজি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর দিকে। এ নৈরাজ্য থেকে কবে মুক্তি পাবে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা দরিদ্র মানুষগুলো। এমনটাই প্রশ্ন স্থানীয় সচেতন মহলের।
জানা যায়, ১৯৩৯ সালে ১০ শয্যা নিয়ে চাঁদপুর সরকারী হাসপাতালটি কার্যক্রম শুরু করে। এ সময় এর নামকরন করা হয়েছিল এলগিন হাসপাতাল। ১ জন মেডিকেল অফিসারের সার্বক্ষনিক তত্ত্বাবধানে এলগিন হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। চাঁদপুর বাসীর দীর্ঘদিনের দাবী ছিল বিদ্যমান হাসপাতালটির শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করে আরো উন্নত মানের সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা । সেই লক্ষে ২০০২ সালে সদর হাসপাতালের উন্নীত করনের কাজ শুরু হয়। উন্নীত করনের কাজ সমাপ্তির পর ২০০৫ সালে নবনির্মিত ২০০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৯ সালে ২৫০ শয্যা হিসাবে পদ সৃষ্টি ও ডিকলারেশান পায়। ২০১৩ সালে ২৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পায়।