রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

রিকশায় ‘ধূমপান নিষেধ’

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩ জুন, ২০১৬
  • ৩৮১ বার পড়া হয়েছে

খুলনা: খুলনার বায়তুন-নূর মসজিদ কমপ্লেক্স থেকে শুক্রবার (০৩ জুন) জুমার নামাজ শেষে বের হচ্ছেন মুসল্লিরা।

মসজিদের উত্তর গেটের সামনে রাখা একটি রিকশার দিকে নজর আটকে যায় অনেকের। রিকশায় লেখা-রিকশায় বসে, ‘ধূমপান নিষেধ।’

এগিয়ে গেলেই বলতে থাকেন, নাম আব্দুস সালাম, গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায়। বর্তমানে থাকেন বটিয়াঘাটার কৈয়াবাজার এলাকায়।

রিকশার লেখাটি কে এবং কেন লেখা হয়েছে? প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি লাগাইছি। কারণ রিকশায় বইসে সিগারেট খাইলে আমার চালাইতে কষ্ট অয়। সিগারেট মানুষের অনেক ক্ষতি করে। আমি নিজের জন্মেও সিগারেট-বিড়ি-হুক্কা-চুরুট-জর্দা কিছুই খাই নাই। দুইডা পোলা তাদের এ বিষ খাইতে দেই নাই।’

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘রিকশায় কেউ উঠার আগে সন্দেহ হলে জিজ্ঞেস করি-সিগারেট খায় কিনা। খেলে তাকে আর রিকশায় তুলি না।’

এতে আয় কম হয়? কিনা জানতে চাইলে রিকশাচালক আব্দুস সালাম বলেন, ‘না আয় কম অয় না। আর যা অয় তাতেই আমি খুশি।’

এ লেখায় মানুষ সচেতন হচ্ছে কী? এমন প্রশ্নে খানিকটা হেসে তিনি বলেন, অনেকে রিকশায় উঠার আগে লেখাটা পড়ে ধূমপায়ী না হলেই রিকশায় চড়েন। আর ধ‍ূমপায়ী হলে নিজে থেকেই সরে যান।

নিজের লেখাপড়া সম্পর্কে জানালেন, কোনো দিন স্কুলে যাওয়া হয়নি। তবে মানুষের কাছে ধ‍ূমপানে বিষপান শুনে দোকান থেকে কম্পিউটারে টাইপ করে লেখাটি লেখে পরে তা লেমেনেটিং করে রিকশায় লাগানো হয়েছে।

২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে রিকশায় এ সতর্ক বার্তাটি দিয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা করছেন এই রিকশাচালক।

কথা শেষ করেই রিকশায় নির্ধারিত যাত্রী মসজিদের খতিব মুফতি ইমরান উল্লাহকে নিয়ে নিউ মার্কেটের পেছনের সড়ক বেয়ে চলে যান।

রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলার সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কলেজ ছাত্র আব্দুল্লাহ বলেন, সামাজিক সচেতনা বোধ থেকে অক্ষরজ্ঞানহীন এ রিকশাচালক যে কাজটি করছেন তা দেখে শিক্ষিত লোকদেরও শিক্ষা নেওয়ার আছে।

তামাক নিয়ন্ত্রণে খুলনা জেলা টাস্ক ফোর্স কমিটির সদস্য ও সিয়ামের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট মো. মাছুম বিল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী আইন থাকলেও বাস্তবায়নের গতি অনেক ধীর।

‘আইনের ৪ ধারায় পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপানের শাস্তি হিসেবে তিনশ’ টাকা জরিমানার উল্লেখ রয়েছে। কেউ আইন লঙ্ঘন করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হয়।’

রিকশাকে সাধারণত পাবলিক পরিবহন হিসেবেই  ব্যবহার করেন মানুষ। ধূমপানের ভয়াবহ ক্ষতিকর ধোঁয়া থেকে মানুষকে রক্ষায় আব্দুস সালামের এ উদ্যোগ আইনভঙ্গকারীদের কিছুটা হলেও লজ্জা দেবে।

আইন না জেনেও আইন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। যা তামাক বিরোধী আন্দোলনের উদাহরণ হয়ে থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451