দেশের গণতন্ত্র সুসংহত করতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এজন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বললেন, ‘গেলো বছর স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। তাই জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা প্রণয়ন বাঞ্ছনীয়। আর সেই নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে।’
শুক্রবার বিকেলে গুলশানের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে সরকারকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব দেন তিনি।
প্রস্তাব উত্থাপন করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে এ পর্যন্ত যারা জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে সেসব দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি সব রাজনৈতিক দলের মহাসচিব বা সংশ্লিষ্ট দলের মনোনীত ব্যক্তিদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করবেন। এরপর জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করবেন। একজন প্রাক্তন বিচারপতিকে সিইসি গঠনে সম্পৃক্ত করতে হবে।’
তবে কোন ধরনের ব্যক্তি ইসিতে নিয়োগ পাবেন, আর কে পাবেন না সে বিষয়েও প্রস্তাব রাখেন তিনি। বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং ৪ জন নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত করতে হবে। বাছাই কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে দু’জন এবং নির্বাচন কমিশনার পদে ৮ জন নির্বাচন করবেন। সেখান থেকে একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং ৪ জনকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে চূড়ান্ত করবেন রাষ্ট্রপতি। জেলা জজের পদমর্যাদা সম্পন্ন, ন্যূনতম ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার সম্পন্ন, সিনিয়র আইনজীবী, বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্য থেকে নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত হবেন।’
তিনি বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কাজ করা কোনো ব্যক্তি এবং সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী কোনো ব্যক্তিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার হতে পারবেন না। দেশের গণতন্ত্র সুসংহত করতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এজন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন জরুরি।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতিকে অবশ্যই সব দলের মহাসচিব বা সাধারণ সম্পাদক পর্যায়ে বৈঠক করতে হবে। বিতর্কিত কেউ সিইসি পদে থাকতে পারবেন না। বর্তমানে দেশের দুই রাজনৈতিক জোটের (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন) দুই মূল প্রতিনিধি, সহায়তাকারী আরো দু’জন প্রতিনিধি ওই বৈঠকে থাকবেন।’
বাছাই কমিটি প্রসঙ্গে বেগম জিয়া বলেন, ‘বিতর্কিত নন ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় এমন সাবেক প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি, অবসরপ্রাপ্ত সচিব, বিশ্ববিদ্যায়লের সাবেক অধ্যাপক এবং দক্ষ ও যোগ্য নারীকে রাখতে হবে ৫ সদস্যর বাছাই কমিটিতে। বাচাই কমিটি বিচার বিবেচনা করে যাদের নাম প্রস্তাব করবে তাদের মধ্য থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ৪ জন কমিশনার নিয়োগ দেবেন রাস্ট্রপতি।’