দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রেক্ষাপটে ছয় দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরমুখী লংমার্চ পুলিশের বাধা আর আয়োজকদের অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে বাতিল হয়ে গেছে।
মাইনরিটি রাইটস মুভমেন্টের ব্যানারে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে এই লংমার্চ শুরু হলেও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় পুলিশের বাধা এবং নিজেদের মধ্যে বিরোধের পর অংশগ্রহণকারীরা ১১টা ৪০ মিনিটে আবার টিএসসিতে ফিরে আসেন।
টিএসসির রাজু ভাস্কর্য চত্বরে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করে মাইনরিটি রাইটস মুভমেন্টের সমন্বয়ক মানিক রক্ষিত বলেন, নিরাপত্তা দিতে পারবে না- এমন কথা বলে পুলিশ আমাদেরকে লংমার্চে যেতে দেয়নি।
তিনি বলেন, মোট পাঁচটি বাস যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত একটি বাস ও তিনটি মাইক্রোবাস নিয়ে তারা যাত্রা শুরু করেছিলেন। ছয় দফা দাবির পাশাপাশি ক্ষত্রিগ্রস্তদের জন্য প্রায় দুই লাখ টাকার সহায়তা নিয়ে তারা যাচ্ছিলেন।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, গতকাল তারা আমাদের কাছে ৩টি মাইক্রোবাস নিয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিল। আমরা অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ তারা মাইক্রোবাসের সঙ্গে অতিরিক্ত একটি বাসও নিচ্ছিল। এত বেশি লোক সেখানে জমায়েত হলে তাদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। তাই আমরা বাধা দিয়েছি। তবে মাইক্রোবাস নিয়ে গেলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ, সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ ও মাইনরিটি রাইটস মুভমেন্ট নামের তিন সংগঠনের ব্যানারে মঙ্গলবার শাহবাগ মোড়ে অবরোধ কর্মসূচি থেকে এই লংমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সে অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ১০দিকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে মন্ত্র পাঠের মধ্য দিয়ে লংমার্চ শুরু হয়। এরপর একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে লংমার্চকারীরা।
সকাল সোয়া ১০টার দিকে তাদের একটি অংশ শাহবাগ মোড়ের দিক থেকে একটি বাসে চড়ে টিএসসি হয়ে শহীদ মিনার সড়কের দিকে যায়। কিন্তু শহীদ মিনার এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার সামনে পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
পুলিশ বাস বাদ দিয়ে তিনটি মাইক্রোবাসে চড়ে তাদের নাসিরনগরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
প্রথমে পুলিশের সঙ্গে তর্ক করলেও এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। একপক্ষ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বাস ছাড়াই লংমার্চে যাওয়ার কথা বললেও আরেক পক্ষ তার বিরোধিতা করে।
বিতণ্ডার এক পর্যায়ে পায়ে হেঁটে লংমার্চ করতে রওনা হন মাইনরিটি মুভমেন্টের একদল কর্মী। শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তে আসতে না পেরে ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে মিছিল নিয়ে আবার রাজু ভাস্কর্যের দিকে ফিরে আসেন তারা।