মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৮:০৫ অপরাহ্ন

রায়পুরে প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষিত, ভিজানো সুপারিতে পরিবেশ দুষণ

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৬
  • ২১৯ বার পড়া হয়েছে

 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার অধিকাংশ খাল, পুকুর, ডোবা ও ডাকাতিয়া নদীর পানি

ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পানির দূর্গন্ধে মানুষের দূর্ভোগ দিন-দিন বেড়ে

চলছে। পানিতে সুপারি ভিজানোর কারণে পানি দূষিত হয়ে মরে যাচ্ছে ডাকাতিয়া

নদী, খাল ও ডোবার ছোট ছোট মাছ। দূষিত পানি ব্যবহারে প্রতিনিয়ত চর্মরোগসহ

বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। বৃহস্পতিবার সকালে চরবংশী, কেরোয়া ও পৌরসভার

কাঞ্চনপুর গ্রামের তিন ব্যাক্তি নদী ও খাল থেকে সুপারীগুলো অপসারনসহ প্রয়োজনীয়

ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কাছে অভিযোগ করেছেন।

এদিকে চলতি বছর সরকারি ভাবে মৎস্য অফিসের উদ্যেগে ডাকাতিয়া নদী, খাল ও

ডোবায় লক্ষ লক্ষ টাকার মাছের পোণা অবমুক্ত করা হয়। কিন্তু সুপারি ভিজানোর কারণে

অবমুক্ত পোনার ফলা ফল কোন কাজেই আসেনি। অবমুক্ত করা লাখ লাখ টাকার পোন সুপারী

ভিজানোর ফলে মাছ মরে গেলেও এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরেুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের

পক্ষে থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

সরেজমিনে দেখা যায়, রায়পুর খাসের হাট সড়কের ষ্টিল ব্রিজ সংলগ্ন, পৌরসভার তফদার

বাজার হয়ে বাংলাবাজার সড়কে, চরমোহনা, রায়পুর, বামনী, চরপাতা, কেরোয়া,

চরআবাবিল, চরবংশী ইউনিয়নের গ্রামগুলোর এবং কাঞ্চনপুর ও দেনায়েতপুরের অধিকাংশ

ডাকাতিয়া নদী, খাল, পুকুর, ডোবায় সুপারী ভিজিয়েছেন অসাধু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।

বছরের পর বছর ধরে লক্ষ লক্ষ কাহন সুপারী পানিতে ভিজানোর কারণে তা নষ্ট হয়ে গিয়ে

দূর্গন্ধে পরিবেশ দুষণসহ মৎস্য অফিস থেকে অবমুক্ত করা মাছের পোনাগুলো মরে যাচ্ছে।

এছাড়াও এলাকার মানুষের পক্ষে বসবাস করাও বর্তমানে দায় হয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সুপারী ব্যবসায়ী জানান, এখন মৌসুমের শুরুতে

আমরা বেশি লাভের আশায় পানিতে সুপারী ভিজানোর পর এপ্রিল-মে মাসে তা দ্বিগুন

দামে বিক্রি করতে পারি। এজন্য এ ব্যবসার দিকে এখানকার ব্যবসায়ীরা বেশ আগ্রহী

হয়ে পড়ে। প্রশাসনসহ কে-কী বললো তা আমাদের দেখার বিষয় নয়।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাষ্টার আলতাফ হোসেন হাওলাদার জানান, বিভিন্নস্থালে

সরকারি নদী, পুকুর, খাল ও ডোবাগুলো দখল করে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এ

জঘন্ন কাজ করছেন। তারা সুপারী কিনে নদী, খাল, পুকুর ও ডোবাতে ভিজিয়ে পানি ও

পরিবেশ দুষণসহ অবমুক্ত করা ছোট-ছোট মাছগুলো মেরে ফেলছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে

গ্রামের প্রতিটি পুকুর-ডোবার পানি নষ্ট হয়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে।

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শায়েলা জাহান শিমু বলেন, সুপারী

ভেজানো পঁচা পানি ব্যবহারের কারনে চর্মরোগ ও ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগীর

সংখ্যা বেড়ে চলছে। এছাড়াও পানি দূষিত হয়ে মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংশিষ্ট

প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে আমি অনুরোধ জানাই।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, জনসাধারণের জন্য মৎস্য

বিভাগ থেকে বিভিন্নস্থানে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে। তাই ডাকাতিয়া নদী,

খাল, পুকুর ও ডোবাতে সুপারী না ভিজানোর জন্য ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ও

মাইকিং করে ব্যবসায়ীদেরকে সর্তক করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা না শুনায় পরিবেশ দুষণ

ও পানি নষ্ট হয়ে মাছ মরে যাচ্ছে। মাছের প্রজণন ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে। আইন না মেনে

সুপারী ভেজানো হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শিল্পী

রানী রায় বলেন, পানিতে সুপারি ভিজিয়ে পরিবেশ দূষণ ও মাছ মরে যাওয়ার ঘটনা জঘন্য

অপরাধ। নদী, খাল, ডোবায় সুপারি না ভিজানোর জন্য বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে

চেয়ারম্যান ও চিঠির মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে। এর পরেও যদি কোন অসাধু

ব্যবসায়ীদের নদী, খাল, ডোবায় সুপারি ভিজান তা হলে ভ্রম্যমান আদালত করে ব্যবস্থা

গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451