শষ্য ভান্ডার খ্যাত ঐতিহাসিক চলনবিলের প্রাণকেন্দ্র নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় প্রতিবারের ন্যায় এবারেও
রসুন লাগানোর মওসুমে প্রতিদিন বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে নারী-পুরুষ
দিনমজুরের হাট বসে ভোর ৫টা থেকে বেলা ৯টা পর্যন্ত। এতে দেশের সকল শ্রমিকদের মধ্যে হাজার হাজার
দিনমজুর হাট বসিয়ে এক ভিন্ন ধারার রেকর্ড সৃষ্টি করেছে জনমনে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়- বিনাচাষে রসুন উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টিকারী এলাকা গুরুদাসপুর উপজেলাধীন
বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের নয়াবাজার, কাছিকাটা ও হাজীরহাটসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বিনাচাষে
রসুন বপন ও ধানকাটাসহ গেরস্থালী কাজের জন্য হাজার হাজার নারী-পুরুষ দিনমজুরের হাট বসে। ভোরের
শীতকে উপেক্ষা করে পেটের তাগিদে প্রতিদিন ভোর ৫টায় বিভিন্ন পয়েন্টে ওই সকল দিনমজুররা হাট বসায়।
ওইসব হাট থেকে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য মহাজনরা দিনমজুরদের খরিদ করে নিয়ে যায়।
জানা যায়, গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা, খুবজীপুর, বিয়াঘাট, চাপিলা, নাজিরপুর ও ধারাবারিষা
ইউনিয়নের উদবাড়িয়া, চরকাদহ, খাঁকরাদহ, পাঁচশিষা, সিধুলী, নারিবাড়ী, পলশুরা, বিলসা, বামনবাড়িয়া,
পিপলা, শ্রীপুর, যোগেন্দ্রনগর, বিয়াঘাট বাবলাতলা, কুটিপাড়া, নারায়নপুর, কুমারখালী, মামুদপুর,
বেড়গঙ্গারামপুর, গোপিনাথপুর, চন্দ্রপুর গ্রামে রসুন বপনের জন্য কাছিকাটার হাজীরহাট পয়েন্টে ভোর
৫টা থেকে হাট বসায়। সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলা থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নছিমন-করিমন, ট্রাক ও
বাসের ছাদে চড়ে হাট বসাতে আসে এসব দিনমজুর নারী-পুরুষ এবং সেখান থেকে দিনভাও চুক্তি বা
খন্ডকালীন মজুরি হিসেবে মহাজনের কাছে বেচাকেনা হয়ে থাকে।
মহাজনদের সঙ্গে কথা বললে জানান, যদিও মজুরী একটু বেশী তারপরও হাতের কাছে দিনমজুর পাওয়ায় অনেকটা
উপকৃত হচ্ছে এলাকাবাসী।
তবে কাজ ও তাদের আর্থিক চাহিদা একটু অন্যরকম হলেও প্রতিদিন পুরুষ দিনমজুরের মজুরি ৩শ’ থেকে
সাড়ে ৩শ’ টাকা এবং মহিলা দিনমজুরের জন্য মজরি ২শ’ থেকে আড়াইশ’ টাকা দেয়া হয়। বেলা বাড়লে
বসে থাকা দিনমজুরদের মূল্য কম হয়ে থাকে। আবার সারাদিন না খেয়ে কাজ করার মজুরি এবং তিন সন্ধ্যা
খাবার দিয়ে কাজ করার মজুরির মধ্যেও অনেকটাই পার্থক্য রয়েছে বলে জানান রানীনগরের দিনমজুর মহাতাব
আলী এবং হাসমারির নারী শ্রমিক শাহেরা খাতুন।