রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:৪০ অপরাহ্ন

রাজাপুরে ধর্ষণে সহায়তা, মায়ের বিরুদ্ধে মেয়ের মামলা !

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০১৬
  • ২২০ বার পড়া হয়েছে

ঝালকাঠি সংবাদদাতাঃ-ঝালকাঠির রাজাপুরের কেওতা গ্রামে নিজ গর্ভের

মেয়েকে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগ গর্ভধারিণী মায়ের বিরুদ্ধে

মামলা করেছে তার স্কুল ছাত্রী মেয়ে। মামলায় ওই ছাত্রীর মা উপজেলার কেওতা

গ্রামের মৃত বেলায়েত মৃধার স্ত্রী সেনোয়ারা বেগম (৪৫) ২ নং

আসামী এবং উপজেলার কেওতা মৃত মালেক হাওলাদারের ছেলে ধর্ষক দুলাল

হাওলাদার (৪৫) কে ১ নং আসামী করা হয়েছে। গত সোমবার রাত সোয়া

৮ টার দিকে ত্রি-পল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির ওই ছাত্রী (১৫)

রাজাপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(১)/৩০ ধারায়

এ মামলা করেন। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১০ বছর পূর্বে ওই ছাত্রীর

পিতা নিখোঁজ হওয়ার পরে তাদের দুই বোনকে নিয়ে নানা বাড়িতে

বসবাস করে আসছে তাদের মা সেনোয়ারা বেগম। পিতার অবর্তমানে

প্রায় ১০ বছর ধরেই ধর্ষক দুলাল হাওলাদার তাদের ঘরে আসা-যাওয়া করতো

এবং এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর মায়ের সাথে দুলালের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে

ওঠে। মেয়েরা ছোট থাকায় মায়ের ভয়ে তাহার অপকর্মের কথা কাউকে

বলতে পারেনি। এরপর প্রায় ৫ বছর পূর্ব থেকে এই স্কুল ছাত্রীকে

নানাভাবে ফুসলিয়ে ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন

স্পর্শকাতর অঙ্গপ্রতঙ্গে স্পর্শ করিতে এবং লেখাপড়া করিয়ে বড় করে ওই

ছাত্রীকে বিবাহ করবে বলে দুলাল অবৈধ মেলামেশার কু-প্রস্তাব দেয়। পরে এ

কু-প্রস্তাবের বিষয়টি ওই ছাত্রী তার মাকে জানালে মা তার মেয়েকে বলে

তোর বাপের কি আছে? তার তা খাও পর সে যা বলে তাহা না শুনতে পারলে

বাড়ি থেকে চলে যা বলে হুমকি দেয়। পরে ওই স্কুল ছাত্রী অসহায় হয়ে

বিয়ের প্রলোভনে রাজি হলে ৪/৫ বছর পূর্ব থেকে শতাধিক বার ওই

ছাত্রীকে ধর্ষণ করে দুলাল। মামলা আরও উল্লেখ করা হয়, ধর্ষক দুলাল হাওলাদার

ওই ছাত্রীর ছোট বোন (১১) কেওতা মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর সাথে

খারাপ সম্পর্কের চেষ্টা করছে। তখন ১০ম শ্রেণির ছাত্রী দুলাল বিবাহের

জন্য বললে দুলাল ওই ছাত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি হুমকি দিয়ে বলে

তার সাথে বিবাহ বসতে চাইলে তার পরিনতি ভাল হবে না এবং দুলালের

কাছে অনেক খারাপ ছবি আছে তা প্রকাশ করাও হুমিক দেয় দুলাল। এরপর

০৫/০৮/১৬ থেকে দুলাল ওই ছাত্রীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় এবং ওই

ছাত্রীর মাকে ফুসলিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে ২৬/১০/১৬ তারিখে স্কুল ছাত্রীর

ছোট বোন মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে কাঠিপাড়া গ্রামের মামা

বাড়িতে নিয়ে কাবিন ছাড়া বিবাহ করে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দুলাল

এলাকায় নিজেকে আইনজীবি পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে এলাকায়

নানা অপকর্ম করে আসছে। দুলাল এলাকার স্বামী পরিত্যক্তা একাধিক

নারীদের কাছে সুদে টাকা লাগিয়ে তাদের ঘরে অবাদে আসা-যাওয়ার

সুযোগে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে আসছিলো। দুলাল মা ও দুই মেয়ের

সাথেই অবৈধ সম্পর্ক করে এলাকার সুনাম ক্ষুন্ন করেছে, তার

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এলাকাবাসীর। সরেজমিনে দুলালের বাড়িতে

গেলে ঘরে তালাবদ্ধ দেখা গেছে। অভিযুক্ত দুলাল হাওলাদারের মতামত পাওয়া

না গেলেও তার ভাই সিদ্দিকুর রহমান জানান, ‘‘দুলাল ওই বাসায় যেত,

থাকতো, খাওয়া-দাওয়া করতো এবং ছেলে মেয়েদের পড়াতো। মেয়েকে

বিবাহের কথাও শুনেছি, কিন্তু বিবাহ হয়নি। মেয়ের মায়ের সাথে কোন

সম্পর্ক ছিল কিনা তা জানি না’’। দুলালের ভাই বিষয়টি নিয়ে

সমাধানের জন্যও তাদের বাড়িতে গিয়েছিল। এ বিষয়ে রাজাপুর থানার

ওসি তদন্ত হারুন অর রশিদ জানান, মায়ের সহায়তায় ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের

প্রাথমকি তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০

এর ৯(১)/৩০ ধারায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের

চেষ্টা চলছে এবং ওই ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষার করানোর প্রস্তুতি চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451