মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ১১:১০ অপরাহ্ন

শিশুটি কেউ গায়ে হাত দিলে এখনো ভয়ে চিৎকার করে কাঁদে।

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৬
  • ১৫৮ বার পড়া হয়েছে

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ধর্ষণের শিকার পাঁচ বছরের শিশুটির চিকিৎসার জন্য শক্তিশালী মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নয়টি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানরা এই বোর্ডে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাংবাদিকদের জানান, গতকাল বুধবার রাতেই বোর্ড গঠন করা হয়। এর পরপরই বোর্ডের চিকিৎসকরা শিশুটির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। আজ সকাল থেকেই বোর্ডের সদস্যরা সম্মিলিতভাবে শিশুটিকে চিকিৎসা দিতে শুরু করেছেন।

শিশুটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে পরিচালক জানান, তার জীবন নিয়ে এখন আর শঙ্কা নেই। তবে শিশুটির অবস্থা ভালোও বলা যাবে না। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তার শরীরে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হচ্ছে। এখনো তার মানসিক অবস্থা ভালো নয়। কেউ গায়ে হাত দিলে এখনো সে ভয়ে চিৎকার করে কাঁদে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়কারী ডা. বিলকিস বেগম জানান, হাসপাতালে আনার সঙ্গে সঙ্গেই তার চিকিৎসা শুরু করা হয়। শিশুটির গলা থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারালো কিছু দিয়ে কাটা হয়েছে যৌনাঙ্গ। দেখে মনে হয়, ব্লেড দিয়ে কাটা হয়েছে। পায়ে সিগারেটের ছ্যাঁকার চিহ্ন আছে। শিশুটির যৌনাঙ্গে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে বলেও জানান বিলকিস বেগম।

হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসকরা শিশুটির আঘাতগুলো পরীক্ষা করেছেন বলে জানান ওসিসির সমন্বয়কারী। তিনি জানান, আজ সকালে বোর্ডের সব সদস্য শিশুটিকে দেখে একযোগে তার চিকিৎসা শুরু করেছেন। সে ভালো নেই। সে এখনো ভয়ে কাঁদে। কেউ কথা বলতে গেলেও কাঁদছে। তবে অল্প পরিমাণে হলেও খাওয়া-দাওয়া স্বাভাবিক আছে।

আজ শিশুটিকে দেখতে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল। সাংবাদিকদের তিনি জানান, শুরু থেকেই শিশুটির খোঁজখবর নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তার সব খরচ সরকার বহন করছে বলেও জানান তিনি।

পার্বতীপুরে ধর্ষণের শিকার পাঁচ বছরের শিশুটিকে ধর্ষণের ছয় দিন পর গত মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গত ১৮ অক্টোবর পার্বতীপুর উপজেলার জমিরহাট এলাকার তকেয়াপাড়া গ্রামের শিশুটি নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে শিশুটিকে না পেয়ে সেদিনই রাত ১১টার দিকে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা। পরদিন ভোর ৬টায় শিশুটিকে বাড়ির পাশের একটি হলুদক্ষেত থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পরই তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা জানান, ধর্ষণের শিকার হয়েছে শিশুটি।

এরপর গত বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটির বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে একই গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৪২) ও আফজাল হোসেন কবিরাজকে (৪৮) আসামি করে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন। পরে আসামি সাইফুল ইসলামকে দিনাজপুর শহর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451