মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৮ অপরাহ্ন

চিরিরবন্দরে ধানক্ষেতের পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারে সুফল পাচ্ছেন কৃষকেরা

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৬
  • ৩২০ বার পড়া হয়েছে

প্লাবন গুপ্ত শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় চলতি মৌসুমে ধানক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকা দমনে বিষাক্ত কীটনাশক প্রয়োগ না করে প্রাকৃতিক ও কৃষি বান্ধব পাচিং পদ্ধতি ব্যবহারে সুফল পাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

ক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় দমন করতে এককালে ধান ক্ষেতের মাঝে পাখিদের বসার স্থান হিসেবে ব্যবহার করলেও এখন ব্যবহৃত হচ্ছে ফলন সাশ্রয়ী ও পরিবেশ বান্ধব আফ্রিকান ধৈঞ্চা গাছ। যা পরিচিত জিবন্ত পাচিং হিসেবে। এ পদ্ধতিটি স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শক্রমে ধানক্ষেতে বিষাক্ত কীটনাশক প্রয়োগ না করে ক্ষতিকারক পোকা মাকড় দমনে ধৈঞ্চা গাছের জীবন্ত পার্চিং ও ডেড পার্চিং পদ্ধতি এখন ব্যপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে কৃষকদের মাঝে। বিপন্ন পরিবেশ ও জনজীবন রক্ষায় ধানক্ষেতে বিষাক্ত কীটনাশকের পরিবর্তে কীটপতঙ্গভুক্ত পাখিদের সাহায্য কৃষিজাত ফসলের রোগ-বালাই দমনে ক্ষেতের মাঝে বাঁশের কঞ্চি, গাছের ডাল ও ধৈঞ্চা গাছ বপন করা হচ্ছে।

সরেজমিন উপজেলার সাঁইতাড়া, খোচনা, আলোকডিহি, সাতনালা গ্রামের ধানক্ষেতগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, পাখিরা ক্ষেতের বিষাক্ত পোড়াকামড় খেয়ে পার্চিং করা খুঁটি ও ধৈঞ্চা গাছে আশ্রয় নেয়। এতে ধানের খতিকর মাজরা পোকা, পোকার ডিমসহ পোকার বংশ বিস্তার রোধ হচ্ছে। একইভাবে ধান গাছের পাতা মোড়ানো, সবুজ পাতা মোড়ানো ফড়িং ও সাদা ফড়িং এর আক্রমন থেকেও রক্ষা করছে এসব পাখি।

এলাকার কৃষক আজিজুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, সাইদুর রহমান ও পংকজ কুমার বলেন, পার্চিং পদ্ধতি সম্পর্কে আগে তাদের কোন ধারনা ছিল না। এ কারণে সেদিকে তেমন আগ্রহও ছিল না। ব্যবহারে নেমে এর গুণাগুন দেখে হতবাক হয়েছে তারা। তাদের দেখাদেখি এলাকার অন্য কৃষকরাও নিজ উদ্যোগে এ পদ্ধতি গ্রহণ করে ধান ক্ষেতকে পোকামাড়কসহ রোগবালাই থেকে রক্ষা করছেন।
উপজেলা কৃষ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, চলতি রোপা আমন চাষ মৌসুমে উপজেলায় ২৩হাজার ৬ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে কৃষকরা ১৬হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে জীবন্ত পার্চিং ধৈঞ্চা গাছের চারা রোপণসহ ৬হাজার ৫৬১ হেক্টর জমিতে ডেড পার্চিংয়ের ব্যবস্থা করেছেন। যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। ধানক্ষেতে সবুজের মধ্যে ধৈঞ্চা গাছের হলুদ ফুলের সমারোহ প্রকৃতিক সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে। ধৈঞ্চা গাছের হলুদ ফুল শুধু শোভাবর্ধনই করে না বরং এসব হলুদ ফুলে আকৃষ্ট হয়ে ধানক্ষেতে উপকারী পোকা মাকড়ও আসে। রোপা আমন লাগানোর সময় একই সাথে ধৈঞ্চার গাছের চারা লাগানো হয়। ধান গাছের চারার সাথে দ্রুত বেড়ে ওঠে ধৈঞ্চার গাছ। ধৈঞ্চা গাছে ফিঙ্গে, বূলবুলি ও শালিকসহ নানা ধরনের উপকারি পাখি বসার কারণে ক্ষতিকর পোকা মাকড় দমন হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451