মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৬:৫১ অপরাহ্ন

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে রাতের আঁধারে পাল্টে যায় সরকারি গুদামের বস্তার চাল!

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৮
  • ২৯৫ বার পড়া হয়েছে

এম শিমুল খান, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সরকারি খাদ্য গুদামের চাল রাতের আধাঁরে পরিবর্তন হয়ে যায়। সরকারি বস্তার ভাল চাল পাল্টে একই বস্তায় নি¤œমানের দুর্গন্ধযুক্ত চাল সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে খাদ্য পরিদর্শক মো: রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে। উপজেলার রামদিয়া সরকারি খাদ্য গুদামে দীর্ঘ দিন ধরে এ অনিয়ম চলছে। ফলে সরকারের দশ টাকা মূল্যের চালের গুনগত মান নিয়ে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচী এখন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ১৩ অক্টোবর সকালে হাতিয়াড়া ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর দু’জন ডিলারকে নি¤œমানের গন্ধ ও তিতা স্বাদযুক্ত চাল ওই খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহ করা হয়। যে চাল ওই ইউনিয়নের দরিদ্র মানুষ ১০ টাকা কেজি মূল্যে কিনেও খেতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন ভূক্তভোগীরা।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক গুদামের চতুর্থ শ্রেণীর এক কর্মচারী জানান, গুদামের খাদ্য পরিদর্শক মো: রেজাউল করিমের সাথে আতাঁত করে স্থানীয় কালোবাজারি সিন্ডিকেটের হোতা ও উপজেলার সমালোচিত সিকদার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নুর ইসলাম সিকদার টন প্রতি দেড় হাজার টাকার বিনিময় বস্তার চাল পরিবর্তন করে নেন। আর এর সাথে জড়িত রয়েছে খাদ্য গুদামের শ্রমিক সরদার মো: হান্নান মোল্যা ও তার তিন ছেলে জিহাদ মোল্যা, বিল্লাল মোল্যা ও হেলাল মোল্যা। যারা টনপ্রতি ৫শ’ টাকার বিনিময় রাতের বেলা গুদামের চালের বস্তা পরিবর্তন করে থাকেন।
এ ভাবে সরকারের বরাদ্দকৃত ভাল চাল কালোবাজারীদের সাথে যোগসাজস করে চাল পাল্টে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মো: রেজাউল করিম। এতে সরকারের ভাবমূর্তি চরম ভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে।
গত ১৪ অক্টোবর খাদ্য গুদাম থেকে অবৈধ ভাবে চাল বের করার জন্য ভিতরে একটি ট্রাক প্রবেশ করে। এ সময় সাংবাদিকরা গোপনে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। কিছুক্ষণের মধ্যে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার করা ফোন পেয়ে গুদামের সিন্ডিকেট নুর ইসলাম সিকদার ও তার বাহিনীর সদস্যরা এসে অতর্কিত ভাবে উপস্থিত সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। এমনকি সাংবাদিকদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে যায় এবং সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে খাদ্য গুদাম থেকে ট্রাকটি দ্রুত বের করে নিয়ে যান ট্রাক মালিক নুর ইসলাম সিকদার ।
এদিকে, রামদিয়া খাদ্য গুদাম ঘিরে অবৈধ ভাবে চাল ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ দিন ধরে এখানে চালের কালোবাজারি চক্র সিকদার বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। সিকদার বাহিনীর মূলহোতা সিকদার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নুর ইসলাম সিকদারের সাথে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়, গুদাম কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের গভীর সখ্য রয়েছে বলেও ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেথুড়ী ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য বলেন, নুর ইসলাম সিকদার দীর্ঘ প্রায় ১৫/১৬ বছর ধরে অবৈধ চাল ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। একাধিকবার সরকারি অবৈধ চালসহ আটক হয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে মামলায় হয়েছে। তবুও তার অবৈধ ব্যবসা বন্ধ হয়নি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছেন তার অবৈধ চালের ব্যবসা।
এ ব্যাপারে খাদ্য পরিদর্শক মো: রেজাউল করিম তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম মাঈন উদ্দিন বলেন, এ ধরণের ঘটনার সাথে কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451