সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন

এক মাস ২২দিন বন্ধ থাকার পর আবারো বিদুৎ উৎপাদন শুরু বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রে

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
  • ২৪৪ বার পড়া হয়েছে

 

ফুলবাড়ী দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দেশের একমাত্র কয়লা ভিক্তিক দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটি একমাস ২২দিন কয়লার অভাবে বন্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আবারো উৎপাদন শুরু হয়েছে।

চলতি সনের গত ২২ জুলাই কয়লা সংকটের কারনে বন্ধ হয়ে যায় দেশের একমাত্র কয়লা ভিক্তিক এই বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগওয়াড তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটি। এতে বিদুৎ সংকটে পড়ে দিনাজপুরসহ রংপুর বিভাগের আট জেলা।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রের ম্যানেজার (উৎপাদন) মাহাবুববুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার জানান, বিকেল ৫টায় তাপ বিদুৎ কেন্দ্রিটির ষ্টিমে আগুন দেয়া হয়েছে, তবে বিদুৎ উৎপাদন হয়ে গ্রীডে যোগ হতে রাত্রী ১০টা বাজবে এমনটাই জানিয়েছে তাপবিদুৎ কতৃপক্ষ।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম বলেন, কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিঃ(বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি) কর্তৃপক্ষ কয়লা সরবরাহ করতে না পারায়, গত ২২ জুলাই রাত সাড়ে ১১ টায় তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ করতে বাধ্য হয় তারা। গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা উৎপাদন শুরু হওয়ায়, কয়েক দিনের কয়লা মজুদ করে তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটির ২৭৫ মেগওয়াডের একটি ইউনিটে উৎপাদন শুরু করা হয়েছে, কয়লা সরবরাহ বৃদ্ধি হয়ে পর্য্যায় ক্রমে ১২৫ মেগওয়াড করে ২৫০ মেগওয়াডের বাকি দুটি ইউনিট চালু করা হবে।

উল্লেখ্য বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলন কৃত কয়লা মধ্যে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা ঘাটতি হওয়ায়, গত ১৯ জুলাই বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহম্মদ ও কোম্পানীর সচিব (জিএম প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে প্রত্যাহার করেছে, খনিটির নিয়ন্ত্রন কারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা। একই কারনে মহাব্যবস্থাপক ( মাইনিং এন্ড অপরেশন) এটিএম নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টার) খালেদুল ইসলাম দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিস্কার করেছে। যদিও খনির কর্মকর্তাদের দাবী এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা সিস্টেম লস। তাদের দাবী গত ২০০৭ সাল থেকে খনিটিতে বানিজ্যিক ভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে, এই পর্যন্ত খনি থেকে এক কোটি ১০ লাখ মেটন কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে। ্এর মধ্যে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা সিস্টেম লস হয়েছে।

কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ কয়লা সরবরাহ করতে না পারায় গত ২২ জুলাই বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে বিদুৎ সংকটে পড়ে দিনাজপুরসহ দেশের উত্তারাঞ্চরের আট জেলা।

বিদুৎ সরবরাহ কারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেক্ট্রি সাপ্লাই কোম্পানী লিঃ নেসকো এর রংপুর জোন এর প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন সরকার বলেন, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় প্রতিদিন ৬৫০ মেগওয়াড বিদুতের প্রয়োজন, এর মধ্যে ৫২৫ মেগওয়াড বিদুৎ আসে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্র থেকে, কিন্তু কয়লা সংকটের কারনে গত একমাস ২২ দিন থেকে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রেটি পুরোপুরি বন্ধ থাকায়, বাহির থেকে বিদুৎ এনে এই আট জেলায় সরবরাহ করা হয়েছে, এই কারনে গত এক মাস থেকে বিদুতের কিছু ঘাটতি দেখা দেয়, এখন তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটিতে উৎপাদন পুরোপুরি শুরু হলে বিদুৎতের ঘাটতি পুরন হয়ে যাবে।

এদিকে তাপ বিদুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন রেজিষ্ঠার সুত্রে জানাগেছে, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটি ৫২৫ মেগওয়ার্ড হলেও সেখানে কোনদিন ৫২৫ মেগওয়ার্ড বিদুৎ উৎপাদন হয়নি, গত ২০১৭ সালের সর্বচ্চ উৎপাদন হয়েছে ৩৯৭ মেগওয়ার্ড।

তাপ বিদুৎ কেন্দ্রে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটির তিনটি ইউনিটে প্রতিদিন (জ¦ালানী) কয়লার প্রয়োজন হবে পাচঁ হাজার ২শ টন কয়লা, সেখানে কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে প্রতিদিন কয়লা উৎপাদন হয় তিন হাজার ৫শ থেকে চার হাজার টন, ফলে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটিতে প্রতিদিনে এক হাজার ৫শ থেকে দুই হাজার টন কয়লা ঘাটতি থাকে, ফলে প্রতিদিনে তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটির একটি করে ইউনিট বন্ধ থাকে, এছাড়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটিতে যন্ত্রাংশর ম্যায়াদ কমে যাওয়ায় আশানুরুপ উৎপাদন হচ্ছে না, ফলে ৫২৫ মেগওয়াড বিদুৎ কেন্দ্র হলেও উৎপাদন হয়, তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ মেগওয়াড।

 

বাংলারপ্রতিদিন/ মেহেদী

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451