রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব করার সমস্যাটির নাম নকচুরিয়া। এ রোগের কারণে রোগীর মূত্রত্যাগের পরিমাণ বেড়ে যায়, এমনকি ঘুমের মধ্যে বারবার ওঠার প্রয়োজন দেখা দেয়। এ সমস্যাটি গর্ভবতী নারী ও বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। ঘুমাতে যাওয়ার আগে পর্যাপ্ত পানি পান করলে এ সমস্যা হতে পারে।
এ ছাড়া শারীরিক সমস্যা, যেমন সিরাপ অ্যাপ্নিয়া, হাইপারপ্যারাথায়রয়েডিজম, ক্রনিক রেনাল ফেইলিউর, ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স, ব্লাডার ইনফেকশন, ইন্টেস্টাইনাল সিস্টাইসিস, ডায়াবেটিস, কঞ্জেস্টিভ হার্ট ফেইলিউর, বিনাইন প্রোস্টেটিক হাইপারপ্ল্যাসিয়া, ইউরেটেরাল পেলভিক জাংশন অবস্ট্রাকশন, ইউটেরিন ফাইব্রোয়েডস, ইটিং ডিজঅর্ডার, ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস, প্রোস্টেট ক্যানসার ইত্যাদি কারণে এ সমস্যা হতে পারে।
সাধারণত রাতে শরীরে প্রস্রাবের উৎপাদন কমে যায়। ফলে ছয় থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত একজন ব্যক্তি প্রস্রাব না করে থাকতে পারে। কিন্তু নকচুরিয়া দেখা দিলে রাতে বারবার ঘুম থেকে উঠে প্রস্রাব করার প্রয়োজন পড়ে। এতে ঘুমের ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটে থাকে।
বিভিন্ন কারণে এ রোগের ক্ষেত্রে যেসব লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে তা হলো বিনাইন প্রোস্টেটিক হাইপারপ্লেসিয়া, মূত্রথলির ক্যানসার, অ-কোষে পানি জমা বা হাইড্রোসিল, লিঙ্গের উত্থানজনিত সমস্যা, অস্টিওপোরোসিস বা অস্থিক্ষয়, কালাজ্বর, কিডনির ক্যানসার, রেবিস বা জ্বলাতঙ্ক, প্রস্টেট ক্যানসার, ব্লাস্টোমাইকোসিস, সেন্ট্রাল অ্যাথেরোস্কে¬¬রোসিস, ফ্যাট এমবলিজম, চ্যাগাস ডিজিজ, শ্যাংক্রয়েড, সাইটোমেগালোভাইরাস ইনফেকশন, এয়ার এমবলিজম, হাইপারকোলেস্টেরোলেমিয়া, লেপ্টোস্পাইরোসিস, স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্স, ওভারফ্লো ইনকন্টিনেন্স, ব্লাডার অবস্ট্রাকশন, পেলভিক অরগান প্রোলেপ্স।
এর সঙ্গে আরও যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায় তা হলো ঘন ঘন প্রস্রাব, প্রস্রাব আটকে যাওয়া, প্রস্রাব করার সময় ব্যথা হওয়া, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, অনিচ্ছায় প্রস্রাব করা, পুরুষত্বহীনতা, তলপেটের নিচের দিকে ব্যথা হওয়া, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, প্রস্রাব কম হওয়া, মূত্রথলির উপসর্গ।
এসব ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধের জন্য করণীয় হলোÑ ঘুমাতে যাওয়ার আগে পানি কম পান করতে হবে। অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। ঘুমানোর আগেই প্রস্রাব করতে হবে। খুব বেশি সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখক : প্রোস্টেট ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ
ইউরোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব
মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
চেম্বার : সেন্ট্রাল হাসপাতাল লিমিটেড, গ্রিনরোড, ধানমডি, ঢাকা
সুত্র, শেয়ার বার্তা