মোঃ হাবিবুল্লাহ হাবিব, ফুলবাড়ীয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি ঃ
আজ ৮ ডিসেম্বর ফুলবাড়ীয়া হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে
ফুলবাড়ীয়া থেকে হানাদার মুক্ত হয়েছিল। মুক্ত দিবস উপলক্ষে আজ সকাল
১০টায় বিজয় র্যালী, ১১টায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ চত্তরে আলোচনা সভা,
সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন
করছে ফুলবাড়ীয়া মুক্তিযুদ্ধা সংসদ। ৭১ সালের এই দিনে ফুলবাড়ীয়ার
লক্ষিপুরে ভারী অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত পাকবাহিনীর সাথে উপজেলার লক্ষীপুর
বাজারে সন্মুখ সমরে লিপ্ত হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধারা। সন্মুখ সমরে খতম
হয়েছিল ৬৮ পাকহানাদার বাহিনীর সদস্য। ৬৮ জন পাকহানাদার খতমের খবর
ময়মনসিংহ গিয়ে পৌছলে পাকবাহিনী প্রতিশোধ নেয়ার জন্য লক্ষীপুর
গ্রামের শতশত বাড়ী ঘর জ্বালিয়ে দিয়ে ৪ জন নিরীহ গ্রামবাসিকে ধরে
এনে লক্ষীপুর বাজারে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায়। ঐ ৪
নিরীহদের এক কবরে লাশ দাফন করা হয় লক্ষীপুর বাজারের পুকুর পাড়ে। নিহতদের
মধ্যে কারী আবু নাছের ছিলেন নব-বিবাহিত। পাকসেনাদের নির্মমতা
থেকে রক্ষা পায়নি মাদ্রাসা ছাত্রও। ওরা হত্যাকরে ফুলবাড়ীয়া কেআই সিনিয়ার
মাদ্রাসার ছাত্র মোহাম্মদ ইলিয়াসকে। উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে
টানা ৭২ ঘন্টা যুদ্ধ হয়েছিল পাকসেনাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের। পাক
সেনারা ইউনিয়ন পরিষদের ছাদের উপর মেশিনগান বসিয়ে বৃষ্টির মত গুলি
করে নির্মম ভাবে মানুষ হত্যা করেছিল। ৫টি গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে
দিয়েছিল পাকসেনারা, ক্যাম্পে ধরে এনে আবাল বৃদ্ধ বনিতা কে বানার
নদীর ব্রীজের উপর সারি বদ্ধভাবে দাঁড় করে গুলি করে লাশ ফেলে দিয়েছিল নদীতে।
প্রতিদিন রক্তে লাল হত বানার নদীর পানি আর লাশগুলো ভেসে যেত ভাটির দিকে।
গণ কবর গুলো আজও অরক্ষিত রয়েছে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন
জানান, ফুলবাড়ীয়া উপজেলার কম্পানী কমান্ডার এস. কে মোজাফরের
নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ফুলবাড়ীয়ায় প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উড়ায়।
হানাদার মুক্ত হয় ফুলবাড়ীয়া। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের থানা কমান্ডার
এবি সিদ্দিক জানান, ফুলবাড়ীয়া মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে বর্নাঢ্য র্যালী
আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।