মোঃ হাবিবুল্লাহ হাবিব, ফুলবাড়ীয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি ঃ
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলা পাহাড়িঅঞ্চল সন্তোষপুর গ্রামে বাড়ির
আঙ্গিনায় প্রায় শতাধিক প্রজাতির ফল গাছের বাগান করেছে আইয়ূব
আলী।
নাওগাঁও ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামের অল্প শিক্ষিত যুবক আইয়ুব আলী।
দারিদ্রতার অভিশাপের কারনে তেমন লেখা পড়া করতে পারেনি। ২০০৬ সালে বাড়ীর
আঙ্গিনায় ৪০ শতাংশ জমির উপর প্রথমে শুরু করে বনজ নার্সারী।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় ৩ বছর বনজ নার্সারী বাদ দিয়ে, দেশি
বিদেশি ফলের গাছ লাগায়। বর্তমানে বাড়ীর আঙ্গিনাসহ ৩ একর জমিতে
রয়েছে তার ফলের বাগান। বাড়ির আঙ্গীনায় রয়েছে চায়না-৩ লিচু, থাই
বাউকুল, থাই বেদেনা, ড্রাগন ফল, মাল্টা, কমলা, ট্রেংক ফল, ইরাকি লেবু,
থাই জামরুল, থাই বেদেনা, আঙ্গুর, মিষ্টি কামরাংঙ্গা, মিষ্টি তেতুল,
সফেদা, থাই করমচা, পেপে, বিদেশী বেল, আমড়া, কাঠাল, হিম সাগর ও সরবি
কলা, আমেরিকান ক্যানসহ বিভিন্ন জাতের আম গাছ, বারমাসী কলম করা
কাঠাল গাছ ও আঙ্গুর পেয়ারাসহ প্রায় শতাধিক প্রজাতির দেশি বিদেশী
ফলের গাছ। দারীদ্রতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে উপজেলার প্রায় সকলের কাছে
সফল ফলচাষী হিসাবে এখন পরিচিতি লাভ করেছে আইয়ূব আলী। ২০১২ সালে
বাংলাদেশ ফার্মার এসোসিয়েশন আদর্শ কৃষক হিসাবে পরিবেশ
সম্মাননা পান তিনি।
শনিবার সরেজমিনে দেখাগেছে, আইয়ূব আলী বাড়ীর আঙ্গিনায় মাল্টা
গাছের পরিচর্যা করছেন। অর্ধশতাধিক মাল্টা গাছ রয়েছে। প্রিতিটি
মাল্টা গাছে ৪০ থেকে ৫০ টি করে মাল্টা রয়েছে। মাল্টা গুলো সবুজ থেকে
হলুদ আবরণ পরতে শুরু হয়েছে। মাল্টা বাগানের পাশেই রয়েছে ড্রাগন ফলের
বাগান। প্রতিটি গাছেই লাল টকটকে ড্রাগান ফল ধরে রয়েছে। এছাড়াও
বিভিন্ন প্রজাতের প্রায় শতাধিক ফলের গাছ দেখাযায়। বাড়ির আঙ্গীনা
থেকে বছরে কমপক্ষে ৩০/৪০ হাজার টাকার ফল বিক্রি করতে পারেন, কিন্তু
গ্রামের মানুষ ও আত্মীয় স্বজনদের কারনে তিনি বাড়ির আঙ্গিনার ফল
গাছের ফল বিক্রি করেন না। আইয়ূব আলীর বাড়িতে যে কেউ বেড়াতে গেলে,
তাকে গাছ থেকে তোলে টসটসা ফল দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। ২০১৬ সালের
চায়না-৩ জাতের লিচুর, দেশি মিষ্টি কমলা, ট্রেংক ফল, ইরাকি লেবু, মাল্টা,
মিষ্টি কামরাংঙ্গা ও বিভিন্ন প্রজাতের কলমের আমের চারা প্রায় ২ লাখ
টাকা বিক্রি করেছে।
আইয়ূব আলী বলেন, বাড়ীর আঙ্গিনায় ৪০ শতাংশ জমির উপর প্রথমে বনজ ও
পরবর্তীতে ফলের বাগান করি। বর্তমানে বাড়ীর আঙ্গিনাসহ প্রায় ৩ একর
জায়গায় ফলজ গাছের নার্সারী ও বাগান রয়েছে। দুই একর জমিতে
আম,লিচু আর এক একর জমিতে মাল্টার বাগান করেছি। গত বছর আম ও লিচু
বিক্রি করেছি প্রায় ৩ লাখ টাকা। আগামি মৌসুমে বাগান থেকে
পুরোদমে মাল্টা বিক্রি করতে পারবো। তিনি আরও বলেন গ্রামের অনেকেই
বাজার থেকে ক্রয় করে ফল খেতে পারে না। তাদের জন্যই বাড়ীর আঙ্গিনার গাছের
ফল গুলো বিক্রি না করে রেখে দেই। সন্তোষপুর গ্রামে এখন আমার দেখাদেখি
অনেকে ফল গাছের বাগন করেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার ড. নাসরীন
আকতার বানু বলেন,সন্তোষপুরের আইয়ূব আলী সফল একজন ফলচাষী, তার
বাড়ির আঙ্গিনায় অসংখ্য ফলগাছ নিয়ে বাগান করেছে।