শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
রিয়াদ-হৃদয়ের ব্যাটে চড়ে সহজ জয় টাইগারদের প্রবাস ফেরত স্ত্রীকে হত্যার পর রক্তাক্ত দা নিয়ে থানায় স্বামী পুড়ছে সুন্দরবন : সর্বশেষ যা জানাল ফায়ার সার্ভিস কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাইয়ের মনোনয়ন বাতিল আল জাজিরার ব্যুরো অফিসে ইসরায়েলি পুলিশের অভিযান ১৫০ উপজেলায় ৩ দিন মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, ১০ জেলায় সতর্কতা জারি গুগলকে তিন হাজার কনটেন্ট সরাতে অনুরোধ বাংলাদেশের মুফতি মাহাদী হাসান সাভার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিরব ভোট বিপ্লবে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদী রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রাকিবুল হাসান মাসুদ

দিনটি ২৪ এপ্রিল, পোশাক খাতের কালো দিন

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৭
  • ১৬৩ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ

দিনটি ২৪ এপ্রিল। সকাল ৮টা ৪৫। ধুলোময় সাভার বাসস্ট্যান্ড। হাজারো মানুষের চিৎকার ও আর্তনাদে ভারি হয়ে ওঠে সাভারের আকাশ। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নির্মিত রানা প্লাজার ৯তলা ভবনটি ১৫ মিনিটের মধ্যে ৩ হাজার  পোশাক  শ্রমিক নিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। হতভম্ব হয়ে পড়ে বিশ্ব।

যা দেশে বৃহত্তম ও বিশ্বে ৩য় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। ভবনটির প্রথম তলায় ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অফিস ও  দ্বিতীয় তলায় বিপণীকেন্দ্রে এবং তৃতীয় থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত পোশাক কারখানা ছিল। সকালে ব্যস্ত সময়ে এ ধসের ঘটনা ঘটায় নিহত হন ১ হাজার ১৩৬ জন পোশাক শ্রমিক। উদ্ধার হয় ২ হাজার ৪৩৮ জন শ্রমিক। আর সেনাবাহিনী যাচাই-বাছাইয়ের পর ২৬১ জন নিখোঁজের ঘোষণা দেয়।

সাধারণ জনগণ, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজ চালায়। ২০০৭ সালে রানা প্লাজা নির্মাণ করার আগে জায়গাটি ছিল পরিত্যক্ত ডোবা। ভবন নির্মাণ করার আগে বালু ফেলে এটি ভরাট করা হয়। ভবনের ওপরের চার তলা অনুমতি ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে আগের দিন (২৩ এপ্রিল) ভবনটিতে ফাটল দেখা দেয়। যা গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়।

কিন্তু ভবনটি নিরাপদ ঘোষণা করে শ্রমিকদের কাজে আসতে বাধ্য করেন গার্মেন্টস মালিকরা। ঘটনার পর দিন ২৫ এপ্রিল ঢাকা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভবন ও ওই ভবনের গার্মেন্টস মালিকদেরকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। এই দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করতে সরকারিভাবে আলাদা কয়েকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ২৭ এপ্রিল এ ভবনের দু’টি গার্মেন্টসের মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া সাভার পৌরসভার দু’জন প্রকৌশলীকেও গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেয়া হয়। ২৮ এপ্রিল এ ঘটনায় দায়ী ভবন মালিক সোহেল রানাকে বেনাপোল সীমান্ত থেকে ভারতে পালিয়ে যাবার সময় গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনার পরপরই বাংলাদেশের শ্রমবাজার বহির্বিশ্বে ঝাঁকুনির মধ্যে পড়ে। তৈরি পোশাক খাতের সুনাম নষ্ট হয়ে যায়। বিদেশের বাজারে বন্ধ হয়ে যায় বাংলাদেশের জেএসপি সুবিধা। যা আজও বন্ধ রয়েছে। রানা প্লাজা ধসের পর হতাহতদের জন্য প্রায় ১৫২ কোটি টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে বলে ২০১৬ সালের ১৪ জুন  শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১২তম বৈঠক হতে জানা যায়।

যার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল হতে ২২ কোটি ৮৯ লাখ ৭৫ হাজার ৭২০ টাকা, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাস্ট ফান্ড হতে সর্বমোট ২৯ কোটি ৩৯ লাখ ৬০ হাজার ৮৭২ টাকা ও প্রাইমার্ক হতে সর্বমোট ১০১ কোটি ৩২ লাখ ২৯ হাজার ৪৬১ টাকা অনুদান দেয়া হয়।আইএলও ও ক্রেতাজোটের চাপিয়ে দেয়া পোশাক খাতের সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনায় জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা (জাইকা), বিশ্বব্যাংকের সহায়ক প্রতিষ্ঠান আইএফসি, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এএফডি এগিয়ে আসে। ৬ শতাংশ থেকে ১১ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণের প্রস্তাব নিয়ে আসে এসব সংস্থা। সম্প্রতি জাইকার অর্থায়নে পোশাক খাতের সংস্কার ও কর্মপরিবেশের উন্নয়নে ২৬৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কারখানায় কর্মপরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এ সময়ে বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থা আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা দিয়েছে। কারখানায় তদারকি বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ। ক্রেতা ধরে রাখতে এ খাতের উদ্যোক্তারাও বিনিয়োগ করেছেন বড় অঙ্কের অর্থ। এসব কিছুর সুবাদে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে দেশের পোশাক শিল্পে। ফায়ার সেফটি, শ্রমিকদের নানামূখী প্রশিক্ষণ প্রদান, কমপ্লায়েন্সের আওতায় আনা, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন, ডে-কেয়ার সেন্টার, চিকিৎসা কেন্দ্রসহ নানামূখী নিরাপত্তায় পোশাক কারখানাগুলো ঢেলে সাজানো হয়েছে।

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর অ্যাকর্ডের পাশাপাশি বাংলাদেশের পোশাক কারখানা পরিদর্শনের জন্য আমেরিকার ক্রেতারা গড়ে তোলেন অ্যালায়েন্স নামে আলাদা একটি জোট। বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয় অব্যাহত রাখতে বেশ কয়েকটি শর্ত বেঁধে দেয়া হয় দুই জোটের পক্ষ থেকে। পরিবেশের উন্নতি করতে ব্যর্থ কারখানা থেকে ২০১৮ সালের পর পোশাক কেনা বন্ধ করে দেয়ারও ঘোষণা দেয় দুই জোট। এসব শর্ত পূরণে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) হিসাবে বাংলাদেশের ৮১ শতাংশ পোশাক করাখানাই ত্রুটিমুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। পোশাক শিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নতিতে বিশ্বের অনেক দেশের সামনে চলে এসেছে বাংলাদেশ। এর স্বীকৃতিও মিলছে দেশ-বিদেশে। যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলে (ইউএসজিবিসি) বাংলাদেশের ১৯৫টি পোশাক কারখানা পরিবেশবান্ধব হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬ বাংলাদেশী কারখানা পেয়েছে লিড সনদ।

বিশ্বের শীর্ষ ১০টি পরিবেশবান্ধব তৈরি পোশাক কারখানার মধ্যে পাঁচটির অবস্থানই বাংলাদেশে।এদিকে ২৪ এপ্রিল স্মরণে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন বিভিন্ন দাবি জানিয়ে আসছিল। যার মধ্যে ২৪ এপ্রিলকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা, রানা প্লাজার সামনে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, নিহত সব শ্রমিকের সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন, নিখোঁজ শ্রমিকদের অবিলম্বে খুঁজে বের করা এবং তাদের তালিকা প্রকাশ, আহত-পঙ্গু শ্রমিকদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ প্রদান করা, বাবা-মা হারানো সন্তানদের শিক্ষা, বাসস্থান ও পুনর্বাসন করা, রানা প্লাজার জমি অধিগ্রহণ করে শ্রমিক কলোনি নির্মাণ করে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন নিশ্চিত করে সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা করা, ছাঁটাই নির্যাতন দমন বন্ধ করা ও ক্ষতিপূরণ আইন সংশোধন করে যুগোপযোগী করার দাবি রয়েছে।এদিকে রানা প্লাজা ভবন নির্মাণে দুর্নীতির মামলায় রানাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশের জন্য আসছে ৮ মে (২০১৭) দিন ঠিক করেছেন আদালত। ঢাকা বিভাগীয় স্পেশাল জজ এম আতোয়ার রহমান এ দিন ঠিক করেন। ওই ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে ২০১৪ সালে ১৫ জুন দুদকের উপ-সহকারি পরিচালক এস এম মফিদুল ইসলাম সাভার মডেল থানায় একটি মামলা করেন।মামলার বাদি ও তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক এসএম মফিদুল ইসলাম ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই সোহেল রানাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা ও দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে ঢাকা বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক এম আতোয়ার রহমান গেলো বছরের ৬ মার্চ দুদকের দেয়া এ অভিযোগপত্রে ত্রুটি থাকায় পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন। পুনঃতদন্ত শেষে চলতি বছরের শুরুতে ফের একই আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।এদিকে গেলো শনিবার রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত এক হাজার ৪০৩ জন শ্রমিকের জরিপের তথ্য দেন বেসরকারি সংস্থ্যা একশনএইড। গবেষণায় তারা জানায়, ৫৭ শতাংশ আহত শ্রমিক বিভিন্ন চাকরি বা আত্মকর্মসংস্থানে যুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে ৪২ দশমিক ২ শতাংশ এখনো বেকার। আহত বেকার এই শ্রমিকদের মধ্যে ২৬ শতাংশ জীবিকার জন্য কোনো পরিকল্পনা করতে পারছেন না। ২০১৭ সাল পর্যন্ত আহতদের মধ্যে ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ শারীরিকভাবে সেরে উঠেছেন। মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে ১২ দশমিক ৪ শতাংশের অবস্থা। ১৩ দশমিক ১ শতাংশের শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে।
শ্রম সচিব মিকাইল সিপার বলেন, রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর সরকার যথেষ্ট সচেতন হয়েছে। ভবিষ্যতে শ্রমিকদের উন্নয়নে উদ্যোগ নিতে সচেষ্ট সরকার।বিজিএমইএ সহসভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, গার্মেন্টসের মোট শ্রমিক সংখ্যা কত তা আমরা এখনো জানি না। গেলো ৮ মাস ধরে বায়োমেট্রিক ডাটাবেজ তৈরির কাজ করছি। এখন পর্যন্ত ১১ লাখ শ্রমিক এর আওতায় এসেছে।শ্রমিক নেতাদের ট্রেড ইউনিয়নের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, গার্মেন্টস খাতে এখন পর্যন্ত ৫৯১টি ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। অথচ এসব কারখানার মধ্যে মাত্র ২৬০টি কারখানা চালু রয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন বড় বিষয় নয়। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। গার্মেন্টস পরিদর্শন বাড়িয়ে দিয়েছি। শ্রমিকদের ডাটাবেজ তৈরির কাজ চলছে।শ্রমিক নেতা কামরুল ইসলাম বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় বিদেশি সংস্থা থেকে ক্ষতিপূরণের একটি প্যাকেজ পেয়েছি। আইনানুগ কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। স্পেকটার্ম গার্মেন্টস দুর্ঘটনার পর শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হলেও রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর গেলো ৪ বছরে শ্রমিকদের কোনো স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়নি।

শ্রমিক নেতা বাবুল আক্তার বলেন, যারা মরে গেছে তারা বেঁচে গেছে। যারা বেছে আছে তাদের নিয়ে শুধু আলাপ-আলোচনা হয়; আর কিছুই না। যতটুকু হয়েছে বিদেশিদের চাপেই হয়েছে। সরকার মন থেকে কিছু করেনি। উল্টো সামাজিক সংলাপের নামে শ্রমিকদের ডেকে নিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।শ্রমিক নেত্রী নাজমা বেগম বলেন, সব প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ভরে গেছে। কিন্তু আমাদের হতাশ হলে চলবে না। সামনে জিএসপি ইস্যু কীভাবে রিকভারি করবো- সেটা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।শ্রমিক নেতা তৌহিদুর রহমান বলেন, অনেক শ্রমিক এখনো মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তারা কাজে যোগ দিতে ভয় পান; এমনকি বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করতেও ভয় পান। তাদের ফেরানোর বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেই। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলার বিচার এখনও শুরু হয়নি। ক্ষতিপূরণের কোনো মানদণ্ডও নেই।বাংলাদেশি পোশাকের ন্যায্যমূল্য দাবি করে শ্রমিক নেতা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, জিএসপি চলে গেলে বাংলাদেশের পোশাকের কী অবস্থা হবে- সেটা ভাবা দরকার।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451