সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
রিয়াদ-হৃদয়ের ব্যাটে চড়ে সহজ জয় টাইগারদের প্রবাস ফেরত স্ত্রীকে হত্যার পর রক্তাক্ত দা নিয়ে থানায় স্বামী পুড়ছে সুন্দরবন : সর্বশেষ যা জানাল ফায়ার সার্ভিস কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাইয়ের মনোনয়ন বাতিল আল জাজিরার ব্যুরো অফিসে ইসরায়েলি পুলিশের অভিযান ১৫০ উপজেলায় ৩ দিন মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, ১০ জেলায় সতর্কতা জারি গুগলকে তিন হাজার কনটেন্ট সরাতে অনুরোধ বাংলাদেশের মুফতি মাহাদী হাসান সাভার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিরব ভোট বিপ্লবে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদী রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রাকিবুল হাসান মাসুদ

ভোলার কুকরী-মুকরী সুন্দরবনের পথেই এগুচ্ছে

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ মার্চ, ২০১৭
  • ৩৮২ বার পড়া হয়েছে

 

কামরুজ্জামান শাহীন,ভোলা:

সাগরের উত্তাল ঢেউর গর্জন, নির্মল বাতাস, বাহারী ম্যানগ্র্যোভ

বন,সারি সারি গাছ, নারিকেল বাগান আর বালুর ধুম নিয়ে অপরুপ

প্রকৃতির সাজে সাজানো এক জনপদ ভোলা জেলার কুকরী-মুকরী।

পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর প্রচীনতম এ

জনপদটিতে নতুন করে আধুনিকতার ছোয়া পাচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্প

বাস্তবায়ন হওয়ায় পর্যটনের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে এ

জনপদটি।ইতিমধ্যে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয় দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন

হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে, আধুনিক রেস্ট হাউজ ও পাখি পর্যবেক্ষন

কেন্দ্র।এছাড়াও বনের জীব বৈচিত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে বাহারী

প্রজাতির বৃক্ষ-তরুলতা রোপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সুত্র বলছে, বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেঁষা জনপদ কুকরী-মুকরী ৭০

ঘূর্নিঝড় পরবর্তি সময়ে বন বিভাগ বৃক্ষ রোপন করে। সেটি কুকরীর

এক সবুজ বিপ্লব। সেই থেকে এ জনপদে ঝড়-জলোচ্ছাসসহ নানা

প্রকৃতিক দুর্যোগ বৃক্ষের সবুজ দেয়াল হিসাবেই রক্ষা করে আসছে।

বর্তমানে ১৩ হাজার ৯শত ৪৬ একর নিয়ে গড়ে উঠেছে প্রকৃতির

সবুজ বেস্টুনী। এখানেই রয়েছে কাকড়া, বাইন, কেওয়া ও গেওয়াসহ

নানা প্রজাতির বৃক্ষ। এসব গাছের সংখ্যা ২ কোটি ৫০লাখে অধিক।

এখানে রয়েছে সাড়ে ৭হাজার হরিনসহ বেশ কিছু বানর, ভাল্লুক, বন

মোড়কসহ বিভিণœ ধরনের বৈচিত্রময় প্রানী ও উদ্ভিদ। হরিনের মিঠা

পানির সংকট দুর করতে একটি পুকুর তৈরী করা হয়েছে, আরো বেশ

কিছু পুকুর তৈরীর কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।

জেলা বন কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, কুকরী-মুকরীকে পর্যটন কেন্দ্র

হিসাবে গড়ে তুলতে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যায়ে আধুনিক রেষ্ট

হাউজ ও ১৫লাখ টাকা ব্যায়ে পাখি পর্যটন কেন্দ্র করা হয়েছে। তিনতলা

বিশিষ্ট রেস্টহাউজে ২০টি আবাসিক রুম রয়েছে। এছাড়াও প্রশিক্ষন,

সভা, সেমিনার ও ওয়ার্কসপ কক্ষ রয়েছে। রয়েছে নিজস্ব জেনারেটর ও

বিদ্যুৎ এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের

সুবিধার্থে এসব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাখি পর্যবেক্ষন কেন্দ্রের

চারপাশে ঘুরতে আসা মানুষদের বসার স্থান হিসাবে বেঞ্চ ও ছাতা দেওয়া

হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করে ভোলার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বলেন,

এতে করে কুকরী-মুকরী পর্যটকদের জন্য আরো বেশী আকর্ষনীয় হয়ে

উঠছে, পাশাপাশি ভোগান্তিরও অবসান হযেছে।তিনি বলেন, ইতিমধ্যে

এটি মানবসৃষ্ট বনে রুপান্তিত হয়েছে। বনে আরো কিছু সংখ্যক

প্রানী আনার প্রক্রিয়া চলছে। আগামী কয়েক বছরেই সুন্দরবনের মতই

কুকরী-মুকরী পূর্নতা পাবে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সাগরের বুক চিরে জেগে উঠেছে বড় বড়

বিচ্ছন্ন সবুজের দ্বীপ। সেখানে লাখ লাখ গাছের সমারোহ। শীত

মৌসুমে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে

উঠে এসব অঞ্চলের চারপাশ। কুকরীর বালুর ধুম ও নারিকেল বাগান মুগ্ধ করে

ভ্রমনপিপাসু মানুষকে। ছোট ছোট খাল, এর দু’পাড়ে দিয়ে বৃক্ষের

সমারোহ। নৌকা ঘুরে প্রান জুড়িয়ে যায় বিনোদন প্রিয় মানুষের।

এখানে বসেই সূর্যদয় ও সূর্যাস্তর সৌন্দয্য উপভোগ করা যায়।

কুকরীতে বিদ্যুৎ না থাকলেও রাতে কুকরী যেন সৌর বিদ্যুতের আলোয়

আলোকিত হয়ে উঠে। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেলো, খুব

শিগ্রই ২ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন একটি সৌর বিদ্যুৎ প্যান্ট

স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারী একটি সংস্থা। সেটি চালু হলেই

কুকরীর দুই কিলোমিটার এলাকার বিদ্যুৎ ভোগান্তির অবসান

হবে।কুকরী-মুকরী রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, চর পাতিলা, পশ্চিম চর দিঘল, চর

দিঘল, চর আলীম, চর জমিনসহ বেশ কিছু চর থাকলেও আরো নতুন দুটি

চর জেগে উঠছে কুকরী-মুকরীতে। সেখানেও বৃক্ষ রোপনের পরিকল্পনা

হাতে নেয়া হয়েছে। মানুষকে মুগ্ধ করার পথে এগুচ্ছে কুকরী-মুকরী।

ঘুরতে আসা ঈমাম হোসেন, সাহাদাত ও সুমন জানান, এরআগে

বহুবার কুকরী-মুকরীর নাম শুনেছি, কিন্তু কখনও আসা হয়নি। এখন

কুকরীতে এসেই প্রান জুড়িয়ে গেলো। এখন শুধু থেকে যেতেই ইচ্ছে

করে। এখানে আরো কিছু সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে দিলে অনেক

ভালো হতো।স্থানীয় বাসিন্দা জাহাগীর হোসেন বলেন, দেশের অন্য স্থানে

আসতে ঝক্কি ঝামেলা বেশী থাকলেও কুকরীতে অনায়াসে নৌ পথে আসা

যায়। এতে খরচও খুবই কম। কিন্তু এক সময় এখানে মানুষের জন্য থাকা-

খাওয়া সু ব্যবস্থা না থাকায় মানুষকে ফিরে যেতে হয়েছে তাও এখন নাই

প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যায়ে আধুনিক রেষ্ট হাউজ নির্মান করা

হয়েছে।

শাহে আলম, সাগর ও জুয়েল বলেন, শীত মৌসুমে কুকরীতে অন্তত

৫০/৭০টি পিকনিক দল ঘুরতে আসে। তারা পিকনিক করে চলে যায়।

এখানকার সৌন্দয্য দেখে অনেকেই মুদ্ধ।

কুকরী-মুকরী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন বলেন,

বাংলাদেশের মধ্যে কুকরী-মুকরী একটি পরিচিত নাম। এখানে দেশ বিদেশ

থেকে মানুষ ঘুরতে আসেন। কিন্তু আধুনিক সুবিধার অভাবে তারা

প্রকৃতির পুরোপুরি তৃপ্তি গ্রহন করতে পারছেন না। এখানে এখন

আধুনিক হোটেলসহ থাকা- খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।সরকারের কাছে দাবী

জানাচ্ছি, পর্যটন কেন্দ্র কুকরী-মুকরীতে যেন আরো কিছু প্রকল্প

দেয়া হয়। এতে একদিকে যেমন এলাকার উন্নয়ন হবে অন্যদিকে দেশের

সুনাম বয়ে আনবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451