সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
রিয়াদ-হৃদয়ের ব্যাটে চড়ে সহজ জয় টাইগারদের প্রবাস ফেরত স্ত্রীকে হত্যার পর রক্তাক্ত দা নিয়ে থানায় স্বামী পুড়ছে সুন্দরবন : সর্বশেষ যা জানাল ফায়ার সার্ভিস কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাইয়ের মনোনয়ন বাতিল আল জাজিরার ব্যুরো অফিসে ইসরায়েলি পুলিশের অভিযান ১৫০ উপজেলায় ৩ দিন মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, ১০ জেলায় সতর্কতা জারি গুগলকে তিন হাজার কনটেন্ট সরাতে অনুরোধ বাংলাদেশের মুফতি মাহাদী হাসান সাভার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিরব ভোট বিপ্লবে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদী রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রাকিবুল হাসান মাসুদ

ভোলায় খালের দু’পাড়ে অবৈধ দখলকৃত অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৭
  • ৪০৮ বার পড়া হয়েছে

 

ভোলা প্রতিনিধি:

ভোলার প্রাণ নামে খ্যাত প্রায় দুই শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ভোলা

খালটি অবশেষে দখলমুক্ত করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার(২৩মার্চ) সকালে জেলা

প্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান শুরু

হয়েছে। দিনব্যাপী ভোলা খালের দু’পাড়ে দখলকৃত প্রায় অর্ধশতাধিক

অবৈধ স্থাপনা ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযানে

অন্যান্যের মধ্যে আরো অংশ নেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)

মাহমুদুর রহমান, ভোলা পৌরসভার নির্বাহি প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন

আরজু, নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল মান্নান, সদর উপজেলা সহকারি

কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন ও সদর মডেল থানার ওসি মীর খায়রুল কবির।

এ সময় জেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-

কর্মচারিসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ, কোস্টগার্ড সদস্য উপস্থিত

ছিলেন।

অভিযানের নেতৃত্বদানকারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন

বলেন, “ভোলা খাল রক্ষা কর, অবৈধ দখল মুক্ত কর” এ স্লোগান নিয়ে ভোলার

প্রাণ নামে খ্যাত ভোলা দখল মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

তিনি বলেন, ভোলা খালের দুই পারে বহু দখলদার দির্ঘদিন ধরে বিভিন্ন

প্রতিষ্ঠান তৈরী করে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। ভোলা খালটি দখলমুক্ত

করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে। তাই জেলা প্রশাসন ভোলা খাল

রক্ষার জন্য খালের দু’পাড়ে অবৈধ স্থাপনা অপসারণের মাধ্যমে দখলমুক্ত করার

উদ্যোগ নিয়েছে।

গত দুই মাস ধরেপ প্রস্তুতি হিসেবে সার্ভে করা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে খালের দু’পাড়ে ১৫২ জন দখলদারকে চিহিৃত করে তাদেরকে

২২ মার্চের মধ্যে নিজ নিজ উদ্যোগে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া

হয়েছে। অন্যথায় প্রশাসন সব অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে ভোলা খাল

দখলমুক্ত করবে। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে খালের

দু’পাড়ের অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে। বিকেল

পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে

খালের দু’পাড়ের সব অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে ভোলা খাল দখলমুক্ত করা

হবে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন জেলা প্রশাসক

মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

ভোলা পৌরসভার নির্বাহি প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন আরজু বলেন,

পৌরসভা থেকে ভোলা খালকে উন্নয়ন ও এর সৌন্দর্য বর্ধনের পরিকল্পনা

নেওয়া হয়েছে। খালের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার লক্ষে ভোলা খাল খনন ছাড়াও

খালপাড়ে ৪ মিটার চওড়া সড়ক নির্মাণ, সড়কে বাতি স্থাপন, ২ মিটার

গভীরে গাইড ওয়াল নির্মাণ, ড্রেন নির্মাণ করার পরিকল্পনা করা

হয়েছে। এর জন্য ইতিমধ্যে জলবায়ু ট্রাস্টের আওতায় ৫ কোটি টাকা

বরাদ্দও এসেছে। নির্বাহি প্রকৌশলী আরো জানান, ভোলা পৌরসভা

কর্তৃক নির্মিত বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কাজও শুরু

করেছে।

উল্লেখ্য, এক সময়ে উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলায় বেতুয়া নদী হিসেবে

পরিচিত ভোলা খালের ভেতর দিয়ে বড় বড় পাল তোলা নৌকা ও জাহাজ চলত।

ভোলার ব্যবসায়ীরা ওই সব নৌকা ও জাহাজে করে তাদের ব্যবসায়ী

মালামাল আনা নেওয়া করত। জেলেরাও মনের আনন্দে মাছ ধরত সেই নদীতে।

আজ আর পাল তোলা নৌকা নেই। ব্যবসায়ীরাও এখন আর নৌকায় করে

মালামাল আনা নেওয়া করতে পারছেননা। নেই জেলেদের মাছ ধরার

মহোৎসবও। দখলদারদের দৌরাত্মের কারনে নদী থেকে খালের পর এখন যেন

ড্রেনে পরিণত হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী

ভোলা খাল। ভোলা খালের দু’পাড় দির্ঘদিন ধরে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ

করে দখল করে রেখেছে একশ্রেণীর অসাধু প্রভাবশালী মহল।

খালের দু’পাড় ভরাট করে যে যেভাবে পারছে বসতঘর, দোকানপাট ও ঘড়-

বাড়িসহ পাকা ভবন গড়ে তুলছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র। তারা খালটি

দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। প্রায় প্রতিদিনই খালের কোন না

কোন অংশ দখল হয়ে যাচ্ছে। ভোলা সদর রোডের বিকল্প সড়ক হিসেবে এ

খালের পাড় বেঁধে প্রায় এক কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ করেছে

স্থানীয় পৌরসভা। খালের ওপর দিয়েই কাশিস্বর ব্রিজ থেকে বাংলাস্কুল

ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ ফুট প্রস্থ বিকল্প সড়কটির স্থায়িত্বের জন্য

আবার নির্মাণ করা হয়েছে একটি গাইডওয়াল। ভোলার প্রাণ বলে খ্যাত

এ খালটি ভরাট হয়ে গেলে পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে মনে

করছেন পরিবেশবিদরা। এ ছাড়া ভোলা খালের ওপর নতুন করে কয়েকটি

ব্রিজ নির্মাণ করায় বর্তমানে খালের পানির গতিপথ রুদ্ধ হয়ে গেছে।

এতে করে আগামী বর্ষা মৌসুমে শহরে জলাবদ্ধতারও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর বেলা উচ্চ আদালতে মামলা

করলে আদালত ভোলা খালকে দখলমুক্ত ও দুষণমুক্ত রাখার জন্য জেলা প্রশাসকে

নির্দেশ দেন। ভোলা সদর আসনের এমপি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল

আহমেদও ভোলা খালকে দখলমুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসকে নির্দেশ দেন।

আদালত ও মন্ত্রীর নির্দেশে অবশেষে জেলা প্রশাসন দীর্ঘদিন পর

বৃহস্পতিবার থেকে খাল দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়ে খালের দু’পাড়ের

অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451