হেলাল শেখ ,সাভার,ঢাকা ঃ
রাজধানীর নিকটবর্তী ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইল-টুঙ্গী সড়কের বিভিন্ন রাস্তার বেহাল অবস্থায় দিন
দিন বাড়ছে জনদূর্ভোগ। শিল্প কারখানার বর্জ্য পানিতে মহাসড়কের বিভিন্ন রাস্তার এমন বেহাল দশা
হচ্ছে বলে জনমনে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকার নিকটবর্তী এলাকা আশুলিয়ার বাইপাইল ট্রাফিক
মোড় থেকে গাজীপুর জেলার টুঙ্গী পর্যন্ত কয়েক শত শিল্প কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার বর্জ্য ময়লা
পানি ও পলিথিন রাস্তায় ফেলার কারণে ড্রেনেজ ব্যবস্থা লাজুক। ড্রেনের পানির মধ্যে পলি ও ময়লা আটকে
থাকায় পানি যেতে সমস্যা হয়। আর ড্রেনের পানি যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকার কারণে অনেক
কারখানার সামনের রাস্তায় বর্জ্য পানি ঢেলে দেয় কারখানার মালিকগণ। বর্ষা মৌসুম না আসতেই
দেখা যাচ্ছে রাস্তার উপরে পানি আর পানি। জনগনের প্রশ্ন উঠেছে, সড়ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট
কর্মকর্তারা কি রাস্তার বেহাল অবস্থা ও জনদূর্ভোগ দেখছেন না?
জানা গেছে, দেশের প্রায় ৬৪ জেলা ও উপজেলার মানুষ কর্মমুখী হয়ে ঢাকার শিল্প এলাকা আশুলিয়ায়
আসছেন চাকুরি করতে। তারা নি¤œ আয়ের মানুষ। বেশিরভাগ সাধারণ মানুষের দিন দিন সমস্যা
বাড়ছে বলে অনেকেই জানান। এদের সাথে কেউ আবার ভিআইপি ভাবে জীবনযাপন করছেন। তারা হলেন,
কারখানার জিএম, পিএম। আর নি¤œ আয়ের মানুষগুলোর থাকা খাওয়ার সমস্যার শেষ নেই। কারণ তারা যে
এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন, সেখানে গ্যাস আসে রাত ১২টার পর, আবার রাত ৩ টার মধ্যে গ্যাস
চলে যায়, আবার যা তাই-চুলার গ্যাস মনে হয় ভেলকিবাজি করছে। রান্না না করতে পেরে শ্রমিকরা
অনেকেই দোকানের রুটি খেয়ে কর্মস্থলে যাওয়ায় এমন নজিরও রয়েছে আশুলিয়ায়। শ্রমিকরা আবার
রাস্তায় এসে দেখেন, গাড়ি নেই, যানবাহনের সমস্যা। রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে হেঁটে সময়মত
অফিসে হাজিরা দিতেও পারেন না অনেকেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইল থেকে শুরু করে ইউনিক, শিমুলতলা,
জামগড়া চৌ-রাস্তার দু’পাশের ড্রেনের মুখ বন্ধ হওয়ার কারণে সামান্য বৃষ্টির পানি দেখে মনে হচ্ছে
বর্ষাকাল।“আশুলিয়ার যেখানে-সেখানে ছোটো বড় প্রায় সব রাস্তারই বেহাল দশা” সেই সাথে
কিছু শিল্প কারখানার বর্জ্য ময়লা পানি রাস্তায় নামিয়ে দেওয়ায় পানির রং পাল্টে গেছে। এ ব্যাপারে
স্থানীয় জামগড়ার ওষুধ ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, দোকানদারদের সমস্যা দিন দিন বাড়ছেই।
কারণ দোকানের সামনেই ময়লা পানি থেমে থাকার কারণে রাস্তা পাড় হতে সমস্যা হয়, কেউ ওষুধ
কিনতে বা খরচ করতে মার্কেট বা দোকানে যেতেও বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে। জামগড়া খাবার হোটেল
ব্যবসায়ী ফারক হোসেন বলেন, বর্ষাকাল না আসতেই তার হোটেলের ভিতরে পানি প্রবেশ করে, যা
দেখে মনে হয় বন্যা হয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা লাজুক হওয়ায় বিভিন্ন কারখানার পানি ড্রেনের উপর
দিয়ে বেঁয়ে রাস্তায় নেমে আসছে। এর কারণেই রাস্তার বেহাল দশা হয়েছে। এ যেন দেখার কেউ নেই।
রাস্তার সমস্যার বিষয়ে এলাকার অনেকেই বলছেন, তারা নিজ দায়িত্বে ড্রেন ও রাস্তার মেরামত করতে
আগ্রহী হলেও সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাগণ বলেছেন, সরকারি কাজে সরকারি ভাবেই ব্যবস্থা গ্রহণ
করা হবে।
উক্ত বিষয়ে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বলেন, কিছু শিল্প কারখানার বর্জ্য পানি ও পলি
রাস্তায় ফেলার কারণে ড্রেনে ময়লা আটকা গিয়ে পানি যেতে সমস্যা হয়। তবে আমরা জরুরী ভাবে
ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতর কর্মকর্তা মেহেদীর বলেন, আশুলিয়ার যে সকল শিল্প
কারখানার ড্রেনের ব্যবস্থা নেই এবং যারা পরিবেশ দূষণ করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া
হবে।