অনলাইন রিপোর্ট ঃ শ্রম অভিবাসন উপাত্ত অনুযায়ী ২০১৬ সালে সৌদি আরব, বাহরাইন, ওমান, কাতার, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের সবচে’ বেশি সংখ্যক পুরুষ অভিবাসীকর্মী যান। শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়া দালালনির্ভর হওয়ায় তাদের ৯০ শতাংশই প্রতারণার শিকার হন। জানালো ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি।বৃহস্পতিবার সকালে টিআইবির কার্যালয়ে ‘শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ায় সুশাসন: সমস্যা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে অভিবাসীকর্মীদের ৯০ শতাংশের ক্ষেত্রে তাদের ভিসা কেনা বাবদ কমপক্ষে ৫,২৩৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যার পুরোটাই দেশগুলোতে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হয়েছে।এতে আরো বলা হয়েছে, সৌদি আরবে কাজের জন্য বাংলাদেশ সরকার ঠিক করে দেয় ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, অথচ একজন অভিবাসীকর্মীকে এক্ষেত্রে ব্যয় করতে হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ হতে সর্বোচ্চ ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর বা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে যেতেও কমপক্ষে আড়াই লাখ টাকা হতে সর্বোচ্চ ৮ লাখ টাকা খরচ হয়ে থাকে।সংবাদ সম্মেলনে নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অতিরিক্ত দালাল নির্ভরতা, সক্ষমতার ঘাটতি, চাহিদার তুলনায় অধিক গমনেচ্ছু ও প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে শ্রম অভিবাসনে ইচ্ছুক ও প্রবাসী শ্রমিকরা আর্থিকসহ বিভিন্নভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।তিনি বলেন, অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে মন্ত্রণালয়ের সদিচ্ছা থাকলেও, সঠিক নীতি ও আইনি দুর্বলতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এই বিষয়ে সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা গেলে সম্ভাবনাময় শ্রম অভিবাসন খাত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।তিনি আরো বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী এই শ্রমশক্তি রপ্তানি খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য সরকারকে দালাল ও এজেন্টদের মাধ্যমে বিদেশে গমনেচ্ছুদের প্রতারণার শিকার ও নিঃস্ব হবার বিষয়ের ওপর নজর দিতে হবে। একটি দীর্ঘমেয়াদী জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন, দালাল নির্ভরতাকে নিয়ন্ত্রণ, প্রতারণা ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এম হাফিজউদ্দিন খান, উপ-নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।‘শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ায় সুশাসন : সমস্যা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণাটির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন টিআইবির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহজাদা এম আকরাম, প্রোগ্রাম ম্যানেজার মনজুর-ই-খোদা ও জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার গোলাম মহিউদ্দিন।