নাটোরের সিংড়ায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের নামে মোটা অংকের অর্থ
হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগ, মুক্তিযোদ্ধা বাছাই
কমিটির সিংড়া থানা কমান্ড সদস্য পঙ্কজ ভট্রাচার্য্য এর বিরুদ্ধে। অভিযোগ
উঠেছে ,প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন না করে অর্থের বিনিময়ে লাল
মুক্তিবার্তা প্রত্যয়ন দেয়া হচ্ছে। জনপ্রতি ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা
হাতিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। যারা অর্থের বিনিময়ে তাদের কাছ
থেকে প্রত্যয়ন কিনছে সাক্ষাৎকারে তাদের নামই সুপারিশ করছে লাল মুক্তিবার্তা
তালিকাভুক্ত সদস্যরা। সিংড়া উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের
ছেলে মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল হক (৬৩) অভিযোগ করেন, যাচাই বাছাই কার্যক্রমে
এসে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা নানা হয়রানি ও লাঞ্চনার শিকার হয়েছেন। গত রোববার
মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ে সাক্ষাৎকার দিতে এসে মুক্তিযোদ্ধা বাছাই
কমিটির থানা কমান্ড সদস্য পঙ্কজ ভট্রাচার্য্য এর লাঞ্চনার শিকার হন তিনি।তিনি
একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়ে সাক্ষাৎকার বোর্ডের সদস্যদের কাছে তাকে
অপমানিত হতে হয়েছে থানা কমান্ড সদস্য পঙ্কজ ভট্রাচার্য্যকে তার দাবী
অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায়। থানা কমান্ড সদস্য পঙ্কজ এর চাহিদা মোতাবেক
টাকা দিতে না পারায় তার দেয়া সনদপত্র সে অস্বীকার করেছে। তিনি পঙ্কজ
ভট্রাচার্য্যরে বিচার দাবী করেন।
মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল হক আরো জানান, ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত
স্বাধীনতা বিরোধী দল ক্ষমতায় থাকার কারণে তার নাম গেজেটে অন্তর্ভূক্ত হয়নি।
পঙ্কজ দা একজন হিন্দু ভদ্র লোক । আর তিনি একজন মুসলমান ঘরের সন্তান। পঙ্কজ
ভট্টাচায্য সত্য না তিনি সত্য? তা নতুন করে তদন্তের মাধ্যমে উদঘাটনেরও দাবী
জানান তিনি। তার সনদ সত্য হলে তাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়া হোক।
অপরদিকে পঙ্কজ ভট্টাচায্যের বলা সঠিক না হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা
নেয়ারও দাবী জানান তিনি। এসব বিষয়ে সঠিক তদন্তের জন্য তিনি ইউএনও বরাবর
একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, যাচাই বাছাইয়ে সাক্ষাৎকার
দিতে হলরুমে প্রবেশের আগে পঙ্কজ ভট্রাচার্য্যকে দশ হাজার টাকা দিতে হয়।
টাকা প্রদানকারীর পক্ষেই সুপারিশ করা হয়।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সহকারী তথ্য ও প্রচার আব্দুল বারী এর সাথে
মোবাইলে ০১৭১৪-৯০৮৫০৪ যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার জানা মতে
অভিযোগকারী আমিনুল হক একজন মুক্তিযোদ্ধা। আর পঙ্কজ ভট্রাচার্য্য এর
বিরুদ্ধে টাকা নেয়ার অভিযোগ সত্য বলে তিনি স্বীকার করেন।
তবে অভিযুক্ত পঙ্কজ ভট্রাচার্য্য এই ধরনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন,বানোয়াট ও
উদ্যেশ্যপ্রনোদিত বলে দাবী করে জানান,জনৈক আমিনুল হক তার স্বপক্ষে যে সনদ
পেশ করা তা ছিল জাল স্বাক্ষরকৃত। ওই সনদের স্বাক্ষর তার ছিলনা বলে তিনি
তাৎক্ষনিক উপস্থিত র্বোডের কাছে অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবী
করেন,বাছাইয়ের সময় প্রায় ৮ জনের জাল সনদ ধরেন তিনি। এছাড়া একজন
রাজাকার ভুয়া সনদ দেখিয়ে তালিকাভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে। তাকেও তিনি সনাক্ত
করেন। এসব কারনে তার সুনাম ক্ষুন্ন করার উদ্যেশ্যে এমন মিথ্যা অভিযোগ তোলা
হয়। ওই অভিযোগের কোন সত্যতা নেই।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদেকুর রহমান জানান, অর্থ লেনদেনের
বিষয়টি মৌখিকভাবে শোনা যাচ্ছে। তবে তিনি কোন লিখিত অভিযোগ
পাননি বলে জানান।
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান,সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি: