রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন

সবাইকে আস্থায় আনব ,প্রভাবিত হব না :সিইসি

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭
  • ১৯০ বার পড়া হয়েছে

বাসস ,

কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নয়, বরং ছোট-বড় সবাইকে আস্থায় নিয়েই আগামী দিনে সংবিধান অনুসারে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

আজ বুধবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে শপথ গ্রহণের পর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।

কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘কেবল বিএনপিই নয়, ছোট-বড় সব নিবন্ধিত দলের অংশগ্রহণে যাতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সে জন্য আমরা সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করব। এ দায়িত্ব পালনে কমিশন সচেষ্ট থাকবে। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পথে কোনো দলবাজ কর্মকর্তা বাধা হয়ে দাঁড়ালে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আজ বিকেল ৪টা ২২ মিনিটে সিইসি ও নতুন কমিশনাররা নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা শেষে পাঁচ কমিশনারই নিজ নিজ দপ্তরে যান। একটু পর চার কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী সিইসির কক্ষে যান। এরপর তাঁরা একসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন। লিখিত বক্তব্য পাঠের পর সিইসি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।

প্রশ্নোত্তর পর্বে ‘এ মুহূর্তে একটাই চ্যালেঞ্জ- সেটা হলো সুষ্ঠু নির্বাচন করা’ উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘নতুন কমিশনের প্রথম কাজ হবে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিজেদের করণীয়, আইন-কানুন, বিধি, ক্ষমতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেওয়া। এ জন্য আমি আমার কলিগদের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে আইন-কানুন দেখব ও বুঝব। এরপর সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য সমাধান কী হতে পারে তা ঠিক করব। তবে নির্বাচন ইস্যুতে রাজনৈতিক দল ও সুশীলসমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসব কি না, এ মুহূর্তে সেটা বলার সুযোগ নেই।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছি। ফলে এখানে সরকারের প্রভাব বিস্তারের কোনো সুযোগ নেই। আমরা সাংবিধানিক ক্ষমতাবলেই নিজেদের দায়িত্ব পালন করব। সব দলকে নিয়ে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আমাদের অবস্থান একটাই, তা হচ্ছে কেবল বিএনপি বলে কথা নয়, ছোট-বড় সব দলকেই নির্বাচনে আনার চেষ্টা আমাদের থাকবে।’

একটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী বোর্ডে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের জন্য খানিক আগে শপথ নিয়েছি। ফলে কোনো বিশেষ দল বা মতের পক্ষে কাজ করার সুযোগ নেই। আর কখনো কোনো দলের নির্বাচনী বোর্ডের দায়িত্বেও ছিলাম না।’

এ সময় জনতার মঞ্চের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে নতুন সিইসি বলেন, ‘এটা ঠিক নয়, সঠিক নয়, এটা মিথ্যা কথা।’

লিখিত বক্তব্যে যা বললেন সিইসি

সংবাদ সম্মেলনে প্রথমেই লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিইসি। তিনি বলেন, শপথগ্রহণের পর থেকেই নির্বাচন কমিশনের ওপর আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। আমাদের কার্যক্রমের প্রধান পাথেয় সংবিধান, সংবিধানের অধীনে প্রণীত বিভিন্ন আইন, আইনের অধীনে প্রণীত বিধিমালা, নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা এবং নির্বাহী আদেশগুলো।

‘আমাদের অনুসরণীয় হবে ১৯৭২ সালের ৭ জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ১১টি নির্বাচন কমিশনের রেখে যাওয়া অভিজ্ঞতা সম্বলিত দিকনির্দেশনা। ১৯৭২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪৫ বছর ধরে ধাপে ধাপে নির্বাচন কমিশন প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সরকারের একজন সচিবের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের রয়েছে একটি সুসংগঠিত প্রশাসনিক কাঠামো এবং সুদক্ষ জনবল।’

সিইসি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের প্রধান তিনটি দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্রপতি পদের ও সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ, অনুরূপ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পালন করা এবং সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বও নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত।’

‘দেশের সব ভোটারকে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর অর্পিত। অভিজ্ঞ এবং নিষ্ঠাবান নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে নিয়ে এসব দায়িত্ব পালনে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

সিইসি আরো বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের শপথ গ্রহণ করেছি। আমরা সংবিধান এবং সংবিধানের অধীনে প্রণীত আইন-কানুন, বিধি-বিধানের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালনে অটল এবং আপসহীন থাকব। নির্বাচন কমিশনের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারের অনুসরণীয় দিকনির্দেশনা কাজে লাগাব এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের দক্ষতা ব্যবহার করব। তা করতে গিয়ে আমরা সরকার, সকল রাজনৈতিক দল, সুশীলসমাজ, সংবাদমাধ্যম এবং জনগণের সহযোগিতা প্রত্যাশা করব।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451