আব্দুল আউয়াল, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
রাস্তায় গাড়ির ভিড়ে পথচারীদের নিরাপদে হাঁটার জায়গা ফুটপাত। কিন্তু
ঠাকুরগাঁও শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম নর্থ সার্কুলার রোড, শহীদ
মোহাম্মদ আলী সড়ক ও বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতগুলোর বেশির ভাগই
পথচারীদের অধিকারে নেই। নানাভাবে সেগুলো দখলে চলে গেছে
ব্যবসায়ীদের।
সড়ক ৩টির দুই পাশের থাকা দোকানপাটের পণ্য চলাচলের পথজুড়ে
রেখে দখল করে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। যানবাহনের পাশ দিয়ে চলাচল
করতে গিয়ে পথচারীদের পড়ে হয় নানা ভোগান্তিতে। দিনের পর
দিন এ অবস্থা চললেও সেদিকে প্রশাসনের কারো নজর নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ মোহাম্মদ আলী সড়কের
নিউমার্কেটের সামনে থেকে কালীবাড়ি মোড় পর্যন্ত পূর্ব
দিকের হাঁটার পথে রাখা হয়েছে দোকানপাটের নানা পণ্য। আর
পশ্চিম পাশে হাঁটার পথটুকুও নেই। সেখানে সড়কের ওপরই রাখা
হয়েছে পণ্যসামগ্রী। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে শিশুদের খেলনা
থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক সামগ্রী, সিলভারের তৈজসপত্র ইত্যাদি।
এ কারণে রাস্তা ধরে হাঁটা ছাড়া লোকজনের চলার উপায়ই নেই।
শহরের স্বর্ণকার পট্টি থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত নর্থ সার্কুলার
রোড এবং চৌরাস্তা থেকে কালীবাড়ি পর্যন্ত শহীদ মোহাম্মদ
আলী সড়ক ও শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু
সড়ক বিস্তৃত। এ তিন সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠেছে অফিস-
আদালত, ব্যাংক, মোটর সাইকেলের শো-রুম, বিমাপ্রতিষ্ঠানসহ
নানা বিপণিবিতান। এসবের মধ্যে রয়েছে জেলা ডাকঘর, জেলা
প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সোনালী ব্যাংক,
কৃষি ব্যাংক, জেলা মহিলা অধিদপ্তর, ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা
উচ্চবিদ্যালয়, ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় ইত্যাদি।
প্রতিদিন সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকা জমজমাট হয়ে ওঠে।
অফিস-আদালতে নানা কাজের পাশাপাশি সড়কের পাশের এসব
দোকানপাটে কেনাকাটা করতে আসে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সকাল থেকেই রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও
অন্য যানবাহনের ভিড় লেগে যায়। তখন হাঁটার পথ না থাকায় মূল
সড়কে যানবাহনের ফাঁক গলেই চলাচল করতে হয় পথচারীদের। এতে
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা নানা ভোগান্তির সঙ্গে সঙ্গে
দুর্ঘটনার আশঙ্কায়ও থাকে। পাশাপাশি যান চলাচলও ব্যাহত হয়।
বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে সরকারি বালক বিদ্যালয়টির শিক্ষক কাদিমুল
ইসলাম বলেন, আমাদের রাস্তা দিয়েই হাঁটতে হয়। যেসব সড়কে
হাঁটার পথ আছে, তাও দোকানপাটের দখলে চলে গেছে। রাস্তা
দিয়ে হাঁটতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেতে হয়।
শহরের বসিরপাড়া এলাকার মকসেদুল মোমিন বলেন, এভাবে সড়ক
দিয়ে হাঁটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া হাঁটতে গিয়ে
রিকশা, অটোরিকশাচালকদের গালমন্দও শুনতে হয়। বিড়ম্বনার শেষ নেই।
শহীদ মোহাম্মদ আলী সড়কের ব্যবসায়ী রজব আলী বলেন, এভাবে তো
দীর্ঘদিন থেকেই ব্যবসা করে আসছি। কারও কোনো অসুবিধা
হচ্ছে না। কেউ কোনো অভিযোগও করেনি।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র মির্জা ফয়সল আমীন বলেন, বিষয়টি
তাঁর নজরে এসেছে। শহরের মূল সড়ক দিয়ে পথচারীরা যাতে
নির্বিঘেœ চলাফেরা করতে পারেন, শিগগিরই সে ব্যাপারে
উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদ বলেন,
ফুটপাত দখলমুক্ত করতে পৌর কর্তৃপক্ষ সহায়তা চাইলে সকল ধরনের
সহযোগিতা করা হবে।