রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন

ট্রাফিক আইন মানছে না কেউ

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৭
  • ১৫৪ বার পড়া হয়েছে

 

হেলাল শেখ -ঢাকা ঃ

প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে দেশের বিভিন্ন রোডে, বেশিরভাগ গাড়ির চালক ট্রাফিক আইন

মানে না বলে অভিযোগ। গাড়ির চালকরা যেদিক খুশি সেদিক গাড়ি চালায়!

অন্যদিকে ফ্লাইওভার ব্রীজ থাকলেও সেই ফ্লাইওভার ব্রীজ দিয়ে পারাপার হয় না কেউ। দেখা যায়, জনসাধারণ এলো

মেলো ভাবে রাস্তা পারাপার হচ্ছে। জনতার নিয়ম ভঙ্গের প্রতিকারে নিয়োজিত যে ট্রাফিক পুলিশ তাদের অনেক

সদস্য দেখা যায় ফুটওভার ব্রীজ ও জেব্রাক্রসিং বাদ দিয়ে আর দশজনের মতোই নিয়ম ভেঙে রাস্তা পারাপার হন। এ চিত্র

রাজধানীর খিলগাঁও ফ্লাইওভারের বাসাবো পান্তের ও সাভার আশুলিয়ার ডি ইপিজেট এলাকায়ও চোখে পড়ার মতো।

ফ্লাইওভার থেকে সাঁ সাঁ করে নামছে দ্রুতগামী বিভিন্ন পরিবহন, উঠছেও সমান তালে। মাথার ওপরেই ফুটওভার

ব্রিজ। কয়েক গজ দুরে রয়েছে জেব্রাক্রসিং তবুও উঁচু সড়ক বিভাজক ডিঙিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে আড়াআড়ি

রাস্তা পারাপার হচ্ছেন শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই।

বিশেষ করে, জনতার এ নিয়ম ভঙ্গের প্রতিকারে নিয়োজিত যে ট্রাফিক পুলিশ তাদের অনেক সদস্যকে দেখা যায়

ফুটওভার ব্রিজ ও জেব্রাক্রসিং বাদ দিয়ে আর দশজনের মতোই নিয়ম ভেঙে রাস্তা পারাপার হন। সকাল থেকে দুপুর,

কয়েক ঘন্টা অবস্থান করে দেখা গেলো, আশুলিয়া থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত যে কয়েকটি ব্রিজ আছে সব ব্রীজেই প্রায়

একরকম চিত্র। অন্যদিকে রাজধানীর খিলগাঁও ফ্লাইওভারের বাসাবো প্রান্ত সংলগ্ন ও মহাসড়ক লাগানো বাসাবো

জামে মসজিদের পাশ দিয়ে একটি গলি মহসড়কে মিশেছে। ব্যস্ত এ গলি দিয়ে ওই এলাকায় বসবাসরত লোকজন

মহাসড়কে প্রবেশ করেন। দেশের ৬৪ জেলা ও উপজেলার বহু মানুষ রাজধানীতে কর্মমুখী। দেখা যায়,শাহজাহানপুর,

রাজারবাগ, কমলাপুরগামীদের রাস্তা পারাপারের সুবিধার্থে গলির ঠিক মুখেই নির্মিত হয়েছে ফুটওভার ব্রিজ।

কিন্তু রাস্তা পারাপারের সময় প্রায় ৮০ শতাংশ লোকই সেই ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করছেন না। পারাপার প্রতিরোধী

ধাতু নির্মিত উঁচু দেয়াল তুলে ফেলায় এবং সড়ক বিভাজক অপেখখাকৃত নিচু হওয়ায় লোকজন নিয়ম ভেঙে

নিচ দিয়ে রাস্তা ক্রস করতেই উৎসাহী হয়ে উঠছেন। ফ্লাইওভারের এ পান্তে কোনো সিগন্যাল নেই। তাই

পরিবহনগুলোর এখানে থামার প্রয়োজনও হয় না। কিন্তু বাঁধাহীনভাবে লোকজনের চলাচলের কারণে বাধ্য হয়েই

থামতে হচ্ছে অথবা গতি কমিয়ে দিতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে পুরো ফ্লাইওভারে।

জানা যায়, যানবাহনের চাপ বেশি থাকলে এ চাপেই অনেক সময় ফ্লাইওভারের ওপরে তৈরি হয় যানবাহনের লম্বা লাইন।

এভাবে পারাপার হওয়ায় যানজটের চেয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কাই বেশি। কারণ, ফ্লাইওভার থেকে নামার সময়

পরিবহনগুলোর গতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। গতিশীল যানবাহনের সামনে দিয়ে এভাবে অবাধ চলাচলের ফলে

যেকোনো সময়ই ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন

দোকানিও জানালেন তেমনটিই। তারা বলেন, এখানে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। ফুটওভার ব্রিজ থাকার পরেও নিচ দিয়ে

রাস্তা ক্রস করার কারণ জানতে চাইলে নিয়ম ভঙ্গকারীদের বেশিরভাগই সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে এড়িয়ে গেছেন।

তারপরেও অন্তত ১৫ জন নিজের ভুল স্বীকার করেন এবং তারা বলেন, ‘আজই প্রথম’ রাস্তা ক্রস করেছেন তারা। তবে নাম

প্রকাশ করতে রাজি হননি কেউই। ব্রিজের নিচ দিয়ে রাস্তা ক্রস করার কারণ জানতে চাইলে পেশায় ব্যবসায়ী

আজাদ (৪০) বলেন, ‘আমি যখন নিচ দিয়ে পার হচ্ছিলাম, তখনই আমার বিবেকে বাঁদছিল। তারপরেও কিন্তু ভুলটা

হয়ে গেছে আমার। ভবিষ্যতে এমন ভুল আর হবে না। কলেজ পড়–য়া এক ছাত্রী বলেন,‘সবাই ক্রস করেন, তাই আমিও

করলাম। চাকরিজীবী একজন নিজের ভুল স্বীকার করে বলেন, ‘আসলে শরীরটা খারাপ হওয়ায় নিচ দিয়ে রাস্তা ক্রস

করছি। এটা হয়ত আমার উচিৎ হয়নি। তবে নিচ দিয়ে রাস্তা ক্রসিংয়ের সুযোগ বন্ধ করে দিলে জনগণ বাধ্য হয়েই

ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতো বলে মন্তব্য করেন সে।

সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,৭ বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই যখন নিয়ম ভেঙে জীবনের

ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা ক্রস করছিলেন, তাদের মধ্যে একজন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকেও দেখা গেছে। তিনি অনুরোধ

করে বলেন, তার নামটা যেন পত্রিকায় না দেয়া হয়। তার নিয়ম ভঙ্গের বিষয়টি স্বীকার করে সে বলেন, শরীরটা ভালো না,

তাই নিচের রাস্তা ক্রস করেছি, ভাই আমার বিরুদ্ধে কিছু লিখেন না। তবে ভিন্ন চিত্রও রয়েছে এক দুইজন মাথায়

বোঝা এবং হাতে ভারি ব্যাগ থাকা সত্ত্বেও ওভারব্রিজ দিয়ে পার হচ্ছিলো। কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, ট্রাফিক পুলিশের

কিছু কর্মকর্তা ও সদস্য তাদের দালাল দিয়ে গাড়ি থামিয়ে চাঁদা নিতেই ব্যস্ত থাকেন তারা এবং কেউ কেউ চা

সিগারেটের দোকানে ও হোটেলে সময় পাড় করেন। এর কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে স্থানীয়রা জানান,

সরকারী জায়গা জমি দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করে রাস্তার দুই পাশেই হকারদের দখলে রেখেছে। ভিন্ন চিত্র

দেখা যায় ব্যস্ততম রোডগুলোতে। কোনো ভাবেই ট্রাফিক আইন মানছে না কেউ। ট্রাফিক পুলিশের কয়েকজন

কর্মকর্তা বলেন, আমরা চাঁদাবাজি করি না কিন্তু শিল্প এলাকা সাভার আশুলিয়ার বিভিন্ন পয়েন্টে সকালে এবং

বিকাল ৫টার দিকে যানজটের সৃষ্টি হয়। এর কারণ হলো, শিল্প কারখানায় যাওয়া আসার সময় হাজার হাজার শ্রমিক

রাস্তায় এলো মেলো ভাবে চলাচল করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451