রাজধানীর ঢাকা ক্লাব, ধানমণ্ডি ক্লাব, গুলশান ক্লাব, উত্তরা ক্লাবসহ দেশের প্রধান প্রধান শহরের ১৩টি ক্লাবে জুয়া খেলা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
ঢাকা ক্লাব কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত আপিল করতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ঢাকা ক্লাবের করা স্থগিতাদেশের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
গত ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়। ওই দিন চেম্বার আদালত বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
গত ৩০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সামিউল হক ও অ্যাডভোকেট রোকন উদ্দিন মো. ফারুক এক রিট আবেদন করেন। রিটের শুনানি শেষে ৪ ডিসেম্বর বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ঢাকা ক্লাবসহ ১৩টি ক্লাবে জুয়া খেলা বন্ধের নির্দেশ দেন।
রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেদোয়ান আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা ছাড়া অন্য কয়েকটি ক্লাব হলো—বনানী ক্লাব, ঢাকা অফিসার্স ক্লাব, ঢাকা লেডিস ক্লাব, ক্যাডেট কলেজ ক্লাব গুলশান, চিটাগাং ক্লাব, চিটাগাং সিনিয়র্স ক্লাব, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব ও খুলনা ক্লাব।
একই সঙ্গে জুয়া জাতীয় অবৈধ ইনডোর গেম, যেমন—কার্ড, ডাইস ও হাউজি খেলা অথবা এমন কোনো খেলা যাতে টাকা বা অন্য কোনো বিনিময় হয়ে থাকে, তা বন্ধের নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
চার সপ্তাহের সধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, ঢাকার পুলিশ কমিশনার, খুলনা ও সিলেট এবং র্যাবের মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসক ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট ও নারায়ণগঞ্জকে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রেদোয়ান আহমেদ রানজিব, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম ও অ্যাডভোকেট চৌধুরী মোহাম্মদ রেদোয়ানে খুদা।
রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেদোয়ান আহমেদ হাইকোর্টের আদেশের পর বলেছিলেন, ঢাকা মেট্রোপলিন পুলিশ অধ্যাদেশ-১৯৭৬, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ-১৯৭৮ এবং পাবলিক গেম্বলিং অ্যাক্ট-১৮৬৭ অনুযায়ী কোনো প্রকার জুয়া খেলা দণ্ডনীয় অপরাধ। একই সঙ্গে সংবিধানের ১৮(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকারকে পতিতাবৃত্তি ও জুয়া খেলা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে। এসব যুক্তিতে আবেদন করলে আদালত ঢাকা ক্লাবসহ দেশের ১৩টি নামীদামি ক্লাবে জুয়া জাতীয় খেলার ওপর তিন মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।