ছেলে জাহেদ হোসেন (৩৩) ও ছেলের বউ গুলবাহারকে (২৭) প্রকাশ্যে গলা কেটে হত্যা করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। একমাত্র অবলম্বন বসতবাড়িটিও পুড়িয়ে দিয়েছে সেনাবাহিনী। ছেলের পাঁচ সন্তানকে আগলে রেখে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের টেকনাফে প্রবেশ করেছেন বৃদ্ধা ছবিয়া খাতুন (৬০)।
একটাই অনুরোধ সবার কাছে তাঁর। নিজে বাঁচতে চান। বাঁচাতে চান নাতি-নাতনিদের। ওদের যে আর কেউ নেই!
টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসব কথা জানিয়েছেন ছবিয়া খাতুন। প্রায় সপ্তাহখানেক হয়েছে তিনি লেদা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন।
ছবিয়া খাতুন জানান, তিনি মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মংডু টাউনশিপের কয়ারিপ্রাং গ্রামের বাসিন্দা। ছেলে আর ছেলের বউকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন সেনাসদস্যরা। তিনি বলেন, ‘আমার ভবিষ্যৎ বংশধর কোনো রকমে প্রাণে রক্ষা পাওয়া পাঁচজন শিশু নাতি-নাতনির ভবিষ্যৎ চিন্তা করে সাহস করে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছি।’ ছবিয়ার নাতি-নাতনিদের বয়স পাঁচ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে। এরা হচ্ছে ইয়াসমিন আক্তার (১৩), মো. রফিক (১১), মো. শাহিন (৯), মো. ইয়াসিন (৭) ও ফাতেমা বেগম (৫)।
ছবিয়ার সঙ্গেই টেকনাফে এসেছেন একই গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম (৩০)। স্বামী রশিদ আহমদকে (৩৮) মিয়ানমার সেনারা প্রায় এক মাস আগে ধরে নিয়ে যান। আর ফিরে আসেননি। অসহায় আনোয়ারা নিজের পাঁচ শিশু নিয়ে চলে এসেছেন জীবন বাঁচানোর তাগিদে। আনোয়ারার শিশুদের বয়স পাঁচ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। এরা হচ্ছে ইয়াসমিন আক্তার (১৫), মো. রফিক (১২), মো. শফিক (১০), মো. করিম (৭), রুশনী (৫)।
লাইলা বেগম ও লাইলা নামে আরো দুই নারী স্বামী হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাফ নদী পার হয়েছেন। বর্তমান তাঁরা লেদা ক্যাম্পে আছেন। লাইলা বেগম ছয় এবং লাইলা পাঁচ শিশু সন্তানের জননী। শিশুদের নিয়েই তাঁরা ক্যাম্পে চলে এসেছেন। শিশুদের এখন একমাত্র সম্বল তাদের মা।