হেলাল শেখ-ঢাকা ঃ
বাংলাদেশে নারী সাংবাদিকসহ শিশুদের নির্যাতন হত্যার ঘটনাগুলো বাড়ছে। এসব নারী ও শিশু নির্যাতন
বন্ধে ভূমিকা রাখলে জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ পুরস্কার দেবে সরকার। জানা গেছে,রাজধানীর তুরাগ থানাধীন
ফুলবাড়ীয়া বাজারে মোশারফ হাই স্কুলে দৈনিক বজ্রশক্তি পত্রিকার ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি শামীমা খানম তার
পেশাগত কাজে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে স্কুল মালিক কর্তৃক তাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
জানা গেছে,এ ব্যাপারে তুরাগ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে
১০ নং সেক্টর ১ নং রোডের ফুলবাড়ীয়া বাজারে মোশারফ হাই স্কুলে সাংবাদিক শামীমা সাড়ে ১২ টা থেকে
৩ টা পর্র্যন্ত সংবাদিক শামীমা খানমক আটক রেখে তাকে ভয়ভীতি দেখানোসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতন
ও হয়রানি করা হয়। জানা গেছে,উক্ত স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মোশারফ ও তার স্ত্রী এবং ছেলে এক এক করে বিভিন্ন
ভাবে নির্যতন করে হয়রানি করে। এ ব্যাপারে পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিতে
পারেনি।
তথ্যে জানা গেছে, দেশের সামগ্রিক মানবাধিকার পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক পরিবর্তন সেপ্টম্বর মাসে হয়নি
বলে মনে করছে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা (বিএমবিএস)। সেপ্টেম্বর মাসেই দেশে খুন
হয়েছে ৮৫,শিশু হত্যা ২৩ জন, ৩১ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৩৩ জন আত্মহত্যা করেছে,
সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৫০ জন। বিশেষ করে শিশু হত্যা ও নির্যাতন,গণধর্ষণ, পারিবারিক ও
সামাজিক কোন্দলে আহত ও নিহত, গৃহকর্মী এবং নারী সাংবাদিক নির্যাতন ও খুন, নারী নির্যাতনসহ
রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ছিলো উল্লেখযোগ্য। উক্ত সংস্থার মাসিক প্রতিবেদন ও গবেষণায় এ চিত্র
ফুটে ওঠেছে। বিএমবিএস বলেছে,এক মাসে ধর্র্ষণে শিকার হয়েছে ৩১ জন নারী ও শিশু,যৌতুকের
কারণে প্রান দিতে হয়েছে ৫ জন নারীকে, ক্রসফায়ারে ১০ জনের মৃত্যু,সামাজিক অসন্তেষ ও পারিবারিক
কোলহে ২৭ জন নিহত ও আহত ৫৫৪ জন, আত্মহত্যা করেছে ৩৩ জন,সন্ত্রাসী কর্তৃক নিহত ৮৫ জন, এবং
আহত ৭৯ জন, আর এসিড সন্ত্রাসীর হামলার শিকার ৭ জন, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ২৫০ জন ও আহত ৮৬৮
জন, বিএসএফ কর্তৃক নিহত ৫ জন এবং আহত ৭ জনের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু, ৮ জঙ্গির মৃত্যু ও
সন্ত্রাসী দমন অভিযানে গ্রেফতার ৪৭৫ জন নিখোঁজ রয়েছে ১১জন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন,নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে সাফল্যজনক
ভূমিকা রাখলে স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ পুরস্কার দেবে সরকার। গত রবিবার
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে “ নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে স্থানীয় সরকারের
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা” শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বত্তৃতায় তিনি এ কথা
বলেন।মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম ও সেভ দ্য
চিলড্রেন যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। প্রতিমন্ত্রী বলেন,বাল্যবিবাহ বন্ধসহ সকল প্রকার নারী
নির্যাতন বন্ধে জনপ্রতিনিধিরা ভূমিকা রাখতে পারেন। উক্ত সাংবাদিক শামীমা খানমের মতো অনেক
সাংবাদিক বিভিন্নভাবে হয়রানি,হামলা, মামলা ও হত্যার শিকার হয়েছে,কোনোটার বিচার আজও হয়নি!
গত ৫-৭ বছর ধরে দেশে অনেক নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে যার হিসাব কেউ দিতে পারবে না।
পত্রিকার পাতায় প্রায় প্রতিদিনই দেখা যায়, দেশের ৬৪ জেলা ও উপজেলার কোনো না কোনো স্থানে কেউ না
কেউ নারী ও শিশু নির্যাতন বা ধর্ষণের শিকার বা হত্যার শিকার হয়েছেন। সাংবাদিক সাগর রুনীসহ দেশের
অনেক সাংবাদিক বিভিন্ন হয়রানি,হামলা, মামলা,নির্যাতন ও হত্যার শিকার হলেও কেন বিচার হয় না?
পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক অনেক নেতারা অনেক বিচারের বাণী শুনান কিন্তু প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তী
পাচ্ছে না! সাধারণ মানুষ অভিযোগ করে বলে,চোরে চোরে খালাতো ভাই! কার বিচার হবে ?। যেখানে পুলিশ
ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নেই,সেখানে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা কোথায় পাবে ? উক্ত বিষয়ে
ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। পর্ব ১।