শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

তালায় প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে একটি নিরীহ পরিবার সর্বশান্ত

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
  • ৩৬৪ বার পড়া হয়েছে

সেলিম হায়দার,তালা

তালা উপজেলার পল্লীতে প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে একটি নিরীহ পরিবার এখন সর্বশান্ত।

কলেজ ছাত্র পুত্রকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার কার পাশাপাশি জেল খানায় ছেলে অসুস্থতার

খবর দিয়ে উক্ত চক্র হাতিয়ে নিয়েছে ২০ হাজার টাকা। এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে

পড়েছে ভুক্তভোগি আশরাফ মোড়ল। সে তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের ইমান মোড়লের

পুত্র। তিনি উক্ত চক্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা

করেছেন।

ভুক্তভোগি আশরাফ মোড়ল জানান, গত ৩০ আগষ্ট মঙ্গলবার দিনগত রাতে প্রতিবেশী মৃত

মহাতাপ উদ্দীন মোড়লের পুত্র আমিনুর রহমানের বাড়ীতে ডাকাতি সংঘটিত হয়। ঘটনার

পরদিন আমিনুর রহমানের বড় ভাই মোঃ ময়িার রহমান বাদী হয়ে ৮/৯ জন অজ্ঞাত অসামী করে

তালা থানায় একটি মামলা দারে করে যার নম্বর- ১৩,তারিখ ৩১/০৮/২০১৬। ঘটনার বেশ

কিছুদিন পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে পুলিশ ডাকাত সন্দেহে তার কলেজ

পড়–য়া ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান রিপন (২৭) কে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

আশরাফ মোড়ল আরো জানান, পরদনি ২০ সেপ্টেম্বর বিকালে তার প্রতিবেশি তেঁতুলিয়া

গ্রামের হোসেন শেখের পুত্র সফিকুল ইসলাম এসে বলে “স্থানীয় ইউপি সদস্য দেলোয়ার

হোসেন সোনা বলেছে আশরাফ ভাইকে এক্ষুনি খবর দাও,উনার ছেলে জেল খানায় স্ট্রোক

করেছে। এ সময় তিনি (০১৭৭৬-০৬৫৭৫৪) ফোন নাম্বারটি নিজ হাতে লিখে দিয়ে বলে

একটি সাতক্ষীরা জেলা সুপারের নাম্বার এই ফোন নাম্বারে দ্রুত কথা বলতে বলো।” এ

সময় আশরাফ মোড়ল উক্ত নাম্বারে ফোন করার সাথে সাথে জনৈক ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে

বলে, আমি সাতক্ষীরা জেল সুপার বলছি ,তোমার ছেলের হার্ট ব্লক হয়ে গেছে। তাকে

খুলনা আবু নাসের হাসপাতালে ডা. শহিদুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন

রয়েছে। চিকিৎসার জন্য ৯০ হাজার টাকা লাগবে তবে জেলখানায় থাকায় কর্তৃপক্ষ ৩০

হাজার টাকা মওকুফ হয়ে ৬০ হাজার টাকা দিতে হবে। প্রয়োজনে তিনি ডা.

শহিদুজ্জামানের সাথে (০১৯৯৩-৫৩৮৮২৯) কথা বলতে বলেন। এ সময় উক্ত নাম্বারে ফোন দিলে

জনৈক ব্যক্তি রিসিভ করে বলে আমি ডা. শহিদুজ্জামান। এক্ষুনি আপনার ছেলের হার্টে

রিং বসাতে হবে,৬০ হাজার টাকা (০১৬১৯-০০৭০৭২) এই বিকাশ নাম্বারে পাঠিয়ে দিন।

এ সময় ছেলের জীবন বাঁচাতে বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে (০১৬১৯-০০৭০৭২) নাম্বারে ২০

হাজার টাকা বিকাশ করা হয়। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার শহিদুজ্জামান পরিচয়ে তার কাছে

আবার ফোন করে বলে (০১৬১১-৯৭৬৭৭০) নাম্বারে ২০ হাজার টাকা বিকাশ করতে। এদিকে

আশরাফ মোড়ল খুলনায় বসবাস করা তার এক স্বজনকে বিষয়টি জানিয়ে আবু নাসের

হাসপাতালে যেতে বলে। সেখানে গিয়ে রিপনের কোন খোঁজ না পেলে বিষয়টি বাড়িতে

জানায়। পরে তার জানতে পারে রিপন জেল খানায় সুস্থ রয়েছে,তার কিছুই হয়নি। এ ঘটনা

জানতে পেরে তাৎক্ষনিকভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ঐ সকল ফোন নাম্বারগুলো

বন্ধ পাওয়া যায়।

ভুক্তভোগি আশরাফ মোড়লের ধারণা ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন সোনা ষড়যন্ত্রকারী

এবং এই প্রতারক চক্রের হোতা। কারণ তিনি প্রতিবেশী সফিকুল ইসলামের কাছে নিজ

হাতে জেল সুপারের ভুয়া নাম্বার দিয়ে তার কাছে যোগাযোগের জন্য পাঠিয়েছেন।

এছাড়া ডাকাতি মামলায় তার কলেজ পড়–য়া ছেলেকে জড়ানোও ষড়যন্ত্রের অংশ বলে তিনি

মনে করেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সব তথ্য বের হবে বলে তিনি জানান। এ জন্য তিনি

সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এদিকে তেঁতুলিয়া গ্রামের হোসেন শেখের পুত্র চাল ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম

বলেন,স্থানীয় ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন সোনা (০১৭৭৬-০৬৫৭৫৪) ফোন নাম্বারটি

নিজ হাতে লিখে দিয়ে তাকে বলে রিপন স্ট্রোক করেছে। সাতক্ষীরা জেল সুপারের এই

নাম্বারে দ্রুত ওর আব্বাকে যেন কথা বলে।

এ ব্যাপারে তালা থানার ওসি মোঃ ছগির মিঞা জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে

ভুক্তভোগিরা এখনো কোন অভিযোগ করেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451