রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে এবার কথিত জ্বীন সাপে’র কামড়ে ১ জনের মৃত্যু ও ৪ দিনে অসুস্থ ৭০ জনের অধিক !

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
  • ৪০৯ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ

ঝিনাইদহের হরিণদিয়া গ্রামে অজ্ঞাত রোগে একজনের মৃত্যুর

খবর পাওয়া গেছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে ওই গ্রামের অন্তত ৭০

জন। গ্রামে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ঘটনায় কোটচাঁদপুর উপজেলা হাসপতালের মেডিকেল অফিসার

ডাঃ রাকিবুল হাসানের নেতৃত্বে ইতিমধ্যে একটি

মেডিকেলটিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

তবে গ্রামবাসি বলছে কথিত জ্বীন সাপে’র কামড়ে ১ জনের

মৃত্যু ও ৪ দিনে ৭০ জনের অধিক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

আক্রন্তরা ওঝার দারস্থ হচ্ছে।

হরিন্দিয়া গ্রামসহ আশপাশ এলাকার মানুষের মধ্যে এ নিয়ে চরম

আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। হরিন্দিয়া গ্রামের মেম্বর আশাদুল ইসলাম

জানান, গত শনিবার থেকে গ্রামে জ্বীন সাপের আতংক শুরু হয়।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৭০ জনেরও অধিক ব্যক্তি অসুস্থ্য হয়ে রাজাপুর

গ্রামের ওঝা আব্দুর রাজ্জাকের কাছে যেয়ে ঝাড় ফুক করে সুস্থ্য

হয়েছেন। ওঝা আব্দুর রাজ্জাকও বলেছেন সাপের কামড়ের গ্রামবাসি

আক্রান্ত হচ্ছেন।

খবর পেয়ে মঙ্গলবার সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের

কর্মীরা। মঙ্গলবার হরিন্দয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় বাজার পাড়ার

শরিফুল ইসলামের বাড়ীতে তার স্ত্রী রিনা বেগমকে ঝাড় ফুক

দিচ্ছেন ওঝা আব্দুর রাজ্জাক ও তার সহযোগী মোন্তাজুল ইসলাম।

এ সময় খবর আসে পাশের আরো কয়েকটি বাড়ী থেকে ৪/৫ জন

আক্রান্ত। গ্রামবাসি জানায় কিসে কামড় দিচ্ছে তা বোঝা

যাচ্ছে না। সাপও দেখা যাচ্ছে না। এ ভাবেই এলাকাজুড়ে ব্যাপক

আতংকে আছে সাধারন জনমানুষ।

হরিন্দিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নান জানান, তার স্ত্রী রাহাতুন

নেছা (৪০) শুক্রবার রাতে একা ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ রাত ২টার

দিকে ঘরের বারান্দায় ঘুমন্ত স্বামী মান্নানকে ডেকে বলেন তার

হাতে সাপে কামড় দিয়েছে। তবে তিনি সাপ দেখেননি। হাতে

জ্বালা পোড়া করছে ও বুকে যন্ত্রনা অনুভব করছেন।

এসময় পরিবারের সদস্যরা ঘর তল্লাসী করেও সাপের আলামত না

পাওয়ায় গ্রাম্য ডাক্তার রোমজান আলীকে ডাকেন। রমজান আলী

এসে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পরও রোগী অবস্থা ধীরে ধীরে

সঙ্কটাপন্ন হতে থাকে।

শনিবার সকাল ৯টার দিকে রাহাতুন নেছাকে কোটচাঁদপুর

হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক

ওয়াদুদুর রহমান রোগীর অবস্থা সঙ্কাটাপন্ন হওয়ায় অন্যত্র রেফার্ড

করেন। ওই দিনই যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান

রাহাতুন নেছা।

গ্রামবাসি জানান, এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে সুচ

ফুটানোর মত লাল দাগ ও সেখানে ফুলে যাচ্ছে। এরপর ওঝা ডেকে

ঝাড়– ফুক করলে তারা সুস্থ্য হচ্ছে।

ওঝা আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, এটা অদৃশ্য জ্বীন সাপের কাজ।

হরিন্দিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, তার দুই ছেলে মেয়ে

চাঁদনি (১৫) ও মাহিম (২) জ্বীন সাপে কামড়েছিল। তাদের শরীরে

সুচ ফুটানোর মত ছোট্ট একটি লাল দাগ দেখতে পান।

পরে ওঝা দিয়ে ঝাড়ফুক চাঁদনি ও মাহিম সুস্থ হন। একই গ্রামের

মিলন হোসেনের ছেলে জিম (৭), মাহাতাব উদ্দীনের ছেলে আলী

হোসেন (৪০), রতন হোসেনের ছেলে রাতুল (৭), মিরাজূল ইসলামের

স্ত্রী রতœা (২৫), আকবর আলীর ছেলে রবিউল (৪২), ফজলুর রহমানের

মেয়ে রিমা (১৩), আতিয়ার রহমানের ছেলে ডনার (১৮), মধু মন্ডলের

কন্যা জোৎনা (২৫) সহ এ পর্যন্ত ৭০ জনের অধিক ব্যাক্তি অসুস্থ্য

হয়ে ওঝার স্মরণাপন্ন হয়েছেন বলে গ্রামবাসি জানান।

এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর হাসপাতালের মেডিকেল টিমের প্রধান

ডাঃ রাকিবুল হাসান জানান, এতে ভয়ের কিছু নেই। আতংকে

এমনটি হচ্ছে। এটি হচ্ছে ম্যাস হিস্টিরিয়া রোগ।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451