জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌর এলাকাসহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের সর্বত্র অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরী হচ্ছে নানা প্রকার বেকারী পণ্য। এসব বেকারীর তৈরি নি¤œমানের বিস্কুট, কেক, পাউরুটিসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য কিনে একদিকে প্রতারিত হচ্ছে গ্রাহক, অপরদিকে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। অপরদিকে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বেকারী মালিকরা। বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করছেন স্থানীয় স্যানেটারি পরিদর্শক।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পিংনা ইউনিয়নের কাওয়ামারা, পৌর এলাকার আরামনগর বাজার, শিমলা বাজার ও বাউসি বাজার, ভাটারা ইউনিয়নের ভাটারা বাজার, মহাদান ইউনিয়নের করগ্রাম ও সানাকৈর, ডোয়াইল ইউনিয়নের ডোয়াইল ও মাজালিয়া বাজার, বেশ কয়েকটি স্থানে ব্যাঙের ছাতার মতো নামে-বেনামে অর্ধশত বেকারী গড়ে উঠেছে। এ সব বেকারীর অধিকাংশরই কোন ট্রেড লাইন্সেস ও বিএসটিআই‘র অনুমোদন নেই। মালিকরা স্যানেটারি পরিদর্শককে ম্যানেজ করে অবাদে এ সব ব্যবসা করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বেকারীগুলোতে অস্বাস্থ্যকর, নোংরা ও সেঁতস্যাতে পরিবেশে নি¤œমানের বিস্কুট, কেক, পাউরুটি, চিপস, চানাচুরসহ বিভিন্ন শিশু খাদ্য ও বেকারী পণ্য তৈরি হচ্ছে। আর অল্প বেতনে শিশু শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। বেকারী শ্রমিকরা ঘর্মাক্ত, খালি গায়ে, ময়লা হাতে কখনো বা পায়ে মাড়িয়ে কাজ করছেন।
পিংনা ইউনিয়নের হায়দার আলী (ভোলা) এর বেকারি তে গিয়ে দেখা যায় খোলাভাবে তেলভর্তি ড্রাম রাখা হয়েছে। তার উপরে মাছি ভনভন করছে, উড়ে এসে বেকারীর ময়লা-কালি ও ধুলো-বালি পড়ছে। কয়েকজন শিশু খালি গায়ে ময়লা হাতে বিস্কুট প্যাকেট করছে। বেকারিতে তৈরি নানা রকম খাবার গুলো খোলা ড্রেনের পাশে মাটিতে পেপার বিছিয়ে রাখা হয়েছে। পাশেই রয়েছে ক্ষতিকর বিভিন্ন প্রকার রং ও স্যাকারিন। এ সময় বেকারীর মালিক হায়দার আলী (ভোলার) কাছে অনুমোদনের কাগজপত্র দেখতে চাইলে তা দেখাতে পারেননি। সাংবাদিকদের জানান, ‘আমার মতো অনেকেই এভাবে ব্যবসা করছে, আমি প্রতি মাসে প্রশাষন সহ বিভিন্ন লোককে টাকা (মাসোয়ারা) দিয়ে থাকি। তাই তো আমার বিরুদ্ধে পেপারে লেখালেখি করে কিছুই করতে পারবেন না । সবাই তো করে আমি করলে দোষ কি?’ পিংনা ইউনিয়নের কাওয়ামারা গ্রামের সাগর বেকারী, হামিদ বেকারীসহ ব্যাঙের ছাতার মতো ৮-১০টি বেকারী গড়ে উঠেছে। সাগর বেকারীর মালিক মঞ্জু মিয়া সাংবাদিকদের দেখে উত্তেজিত হয়ে উঠেন।
এ ব্যাপারে পিংনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয় জানান, ‘দুয়েকটা বেকারীর ট্রেড লাইসেন্স থাকলেও অধিকাংশ অনুমোদনহীন। এরা কীভাবে ব্যবসা করছে তা আমার জানা নেই।’
সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদ এজেড মোরশেদ আলী বলেন, উপজেলার অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে বেকারি খাদ্য তৈরী সব বেকারি গুলোকেই পর্যায়ক্রমে আইনের আওতায় আনা হবে।’