সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

ফারাক্কার পানিতে ডুবছে কুষ্টিয়া, ভয়াবহ ভাঙন

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৬
  • ৩৯১ বার পড়া হয়েছে

ভারতের ফারাক্কা বাঁধের প্রায় সবগুলো গেট খুলে দেওয়ায় পদ্মা নদীর অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে কুষ্টিয়ায় ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পদ্মার কয়েক দিনের ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে জেলার ভেড়ামারার শত শত ঘরবাড়ি। ডুবে গেছে ভেড়ামারা ও দৌলতপুরের হাজার হাজার একর জমির ফসল। হুমকির মুখে পড়েছে এ দুটি উপজেলার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত পানির উচ্চতা দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ১২ সেন্টিমিটারে যা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির উচ্চতা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার হলেই বিপৎসীমা অতিক্রম করবে।

কুষ্টিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নৈমুল হক জানান, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে প্রতি ঘণ্টায় দশমিক শূন্য পাঁচ সেন্টিমিটার পানি বাড়ছে। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার গোলাপনগর-রায়টা ও দৌলতপুরের রায়টা-মহিষকুণ্ডি বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ এখন চরম হুমকির মুখে। আর এ হুমকিকে সামনে রেখেই সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন পাউবোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পদ্মার পানি যাতে ঢুকতে না পারে সে কারণে দৌলতপুরের ফিলিপনগরে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। এই উপজেলাকে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করতে সার্বক্ষণিক কাজ করছে পাউবোর টিম।

এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে পদ্মার ভাঙনে ভেড়ামারার মোকারিমপুর ইউনিয়নের ছলেমননগর পুরোপুরি ও ঢাকাপাড়ার অধিকাংশ ঘরবাড়িসহ ভেড়ামারা শত শত আবাসস্থল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এসব গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে পা বাড়িয়েছে নতুন গন্তব্যে। তারা পায়নি সরকারি কোনো ত্রাণসামগ্রী। নেই মাথা গোজার ঠাঁই। দেখা দিয়েছে নিজেদের পাশাপাশি গো-খাদ্যেরও অভাব। পদ্মার পানিতে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার একর জমির পাট, কলা ও পানের বরজ। দুঃখ-কষ্টের বর্ণনা দিয়ে তাদের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছে ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের ছলেমননগর ও ঢাকাপাড়া গ্রামের পদ্মার ভাঙনে সব হারানো মুক্তিযোদ্ধা আসলাম আলী ও এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা সবুরা খাতুন।

ভারতের ফারাক্কা বাঁধ খুলে দিয়ে সৃষ্টি করা কৃত্রিম প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সজাগ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

পদ্মার পানি ঢুকে পড়ায় চর গোলাপনগর ঢাকাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রোকেয়া খাতুন।

ভাঙনকবলিত অসহায় মানুষকে পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়েছেন ভেড়ামারা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শান্তি মণি চাকমা। তিনি জানান, পদ্মার পানিতে যাদের ফসল নষ্ট হয়েছে এবং বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে এমন ৩৫০ পরিবারকে আগামীকাল ১০ কেজি চাল দেওয়া হবে। কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে এবং তাদের পুনর্বাসনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ইউএনও।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451