শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

দেশে বেশিরভাগ নারী ইভটিজিংয়ের শিকার!

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ২২ আগস্ট, ২০১৬
  • ২০৯ বার পড়া হয়েছে

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধিঃ

বাংলাদেশে বেশিরভাগ নারী বিভিন্নভাবে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়! এটি সামাজিক ব্যাধি ও

অপরাধ এবং এটি বড় একটি সমস্যা। সুত্র জানায়, শুধু বাংলাদেশেই নয়,সকল দেশে,সকল সমাজেই

এ অপরাধ সংগঠিত হয়ে থাকে। ইভটিজিং অপরাধের বিভিন্নতা আছে কি? উত্তর: না। দেশের

যুবসমাজ, মাদক সেবন ও জুয়া খেলার টাকা জোগার করতে যেমনঃ যুবকরা মিথ্যা বলে এবং

জড়িয়ে পড়ছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, অপহরণ, নারী ও শিশু পাচার,

হত্যা,গুম,খুনসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে। ইভটিজিং অন্যরকম একটি অপরাধ। এ যেন দেখার কেউ

নেই।

জানা গেছে, দেশের হাজারো সমস্যার মধ্যে এটি প্রধান সমস্যা। সাম্প্রতিক কালে মারাত্বক এ

সমস্যায় জর্জরিত হয়ে অনেক কিশোরী-তরুণীর আত্মহরনের মতো নির্মম পথ বেছে নেওয়া এবং

সেই সাথে প্রতিবাদ করায় মমতাময়ী মা, অভিভাবকদের মৃত্যুতে সৃষ্টি হয় গভীর উদ্ধেগ ও উৎকণ্ঠা।

ইভটিজিং কি? “ইভটিজিং” শব্দটি হলো যৌন হয়রানির একটি অমার্জিত(ংষধহম) ভাষা। এ

শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ ‘নারীকে উত্যক্ত করা’। এতেই শব্দটির ভাবার্থ সীমিত নয় বরং এটি মূলত

এক ধরণের ইউফেমিজম ( ঊঁঢ়যবসরংস)ঃ অর্থাৎ নারীকে উত্যক্ত করার আড়ালে থাকে যৌনতার

নির্লজ্জ প্রবৃত্তি করা।

বিশেষ করে আমাদের দেশের মেয়েরা নানাভাবে ইভটিজিংযের শিকার হচ্ছে,যদিও আমাদের এই

উপমহাদেশে মেয়েদের উত্যক্ত করাকে ‘ইভটিজিং’ বলা হয়, তথাপি পৃথিবীর অন্যান্য দেশে

“ইভটিজিং”কে সেক্সয়াল হ্যারাসমেন্ট বলা হয়ে থাকে। ১৯৭৫ সালে আমেরিকার কর্ণেল

অ্যাস্টিভিক্টর সেক্সয়াল হ্যারাসমেন্ট শব্দটি উদ্ভাবন করেন বলে সাংবাদিক সুসান ব্রাউনমিলার

১৯৯৯ সালে তাঁর হে ড়ঁৎ গবসড়রৎ ড়ভ জবাড়ষঁঃরড়হ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, এরকম অনেক উল্টা পাল্টা

শব্দ। বিশেষ করে “ইভটিজিং” এর ধরণ ও কলা কৌশলঃ মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, দেয়াল লিখন,

পোস্টারিং তথা প্রযুক্তির অপব্যবহারের অপকৌশলসহ বাচনিক, অবাচনিক কিংবা শারীরিক উপায়ে

বখাটেরা “ইভটিজিং” করে থাকে। এর সাথে যোগ করেছে কিছু কথিত মাষ্টার কর্তৃক ছাত্রীদের

নানাভাবে এই ইভটিজিং করে। বাচনিকঃ কিশোরী বা তরুণীর প্রতি অশালীন মন্তব্য (ইধফ

পড়সসবহঃং) হুমকি প্রদান, শিস বাজানো,উদ্দেশ্যপূর্ণ যৌন আবেদনময়ী গান, অবৈধ যৌন

সম্পর্কের দাবী বা অনুরোধ এবং পোষাক শিল্প কারখানায়, যাত্রীবাহি গাড়িতেও এই ইভটিজিং

করা হয়। শারীরিক ঃ প্রকাশ্যে কোনো স্থানে যেমন ঃ বাসে, মার্কেটে, রাস্তায়, বাড়ি কিংবা

মেলায়, স্কুল বা কলেজে কিশোরী- তরুণীর শরীরে হাত দেয়া বা উদ্দেশ্যমূলক ভাবে স্পর্শ করা, গাঁ

ঘেঁষে দাড়ানো বা বসা, জড়িয়ে ধরা, চুমু খাওয়া, শারীরিক সম্পর্কের মতো অপ্রত্যাশিত

যৌন কর্মকান্ডে ব্যবহার ইচ্ছাকৃত শারীরিক সম্পর্কের মতো ধাক্কা দেওয়া বা খাওয়া, ব্লাকমেইল

বা চরিত্র হরনের উদ্দেশ্যে স্থির বা চলমান চিত্র ধারণ করা।

ইভটিজিং এর কু-প্রভাব ও নানা সমস্যা ঃ ‘ইভটিজিং’ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের চরম সমস্যায়

ফেলেছে। মেয়েদের ব্যক্তি স্বাধীনতা সহজেই হরণ হচ্ছে ইভটিজিংয়ের কারণে, এর প্রভাব শুধুমাত্র

ভুক্তভোগী নারীর উপরই নয় বরং আছড়ে পরে পুরো পরিবারের উপর। মানসিকভাবে ব্যাধিগ্রস্ত হয়ে

পড়ে সকলেই, যার সমাপ্তি ঘটে আত্মহরনের মধ্য দিয়ে। আইন ও সারিশ কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী,

২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ১৭ জন নারী ইভটিজিংয়ের কারণে আত্মহত্যা

করেছেন। মেয়ের অপমান সহ্য করতে না পেরে কারো বাবা, কারো মা আত্মহত্যাও করেছেন। ২০০১

সালে নারায়নগঞ্জের চারুকলা ইনস্টিটিউটের মেধাবী ছাত্রী সিমি আত্মহত্যার আগে চিরকুটে

৪ জন বখাটের নামসহ লিখেছিলেন “এদের অপমানে একজন মেয়েকে রাস্তায় ফেলে নির্যাতন,ধর্ষণ

করার চেয়েও নির্মম। ২০০০ সাল থেকে ২০১৬ ইং সাল পর্যন্ত অনেক নারী ইভটিজিংয়ের শিকার

হয়েছেন। বিভিন্ন সংস্থার তথ্যে জানা গেছে, দেশের প্রায় প্রতিটি এলাকায় ১০০% এর মধ্যে

৬০% যুবতী নারী ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে থাকে। সংবাদপত্রে যা খবর পাওয়া যায়, তার চেয়ে ৫০

ভাগ নারীর ইভটিজিং এর খবর বিভিন্ন কারণে গোপন থাকে। অনেকেই মনে করেন, ইভটিজিংয়ের

মূল কারণ, নারীর বেপর্দা, অশালীন পোষাক ও অবাধ চলাফেরা, স্যাটেলাইট টিভি ও অনিয়ন্ত্রিত

প্রদর্শন এবং সুস্থ সাংস্কৃতি চর্চার অভাব।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451