চুয়াডাঙ্গা থেকে সালেকিন মিয়া সাগর:চুয়াডাংগা জেলার দামুড়হুদা উপজেলায়
সুদের টাকা দিতে
না পারায়
সেলিনা বেগম (৩২)
নামের এক নারীকে
গাছের সঙ্গে বেঁধে
মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে।
সেলিনা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা
কলোনী পাড়ার আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে
কার্পাসডাঙ্গা কলোনী পাড়ার বাসিন্দা
এলাকার প্রভাবশালী মহিলা কথিত সুদখোর
রাবেয়া বেগম (বিন্দু মাসি) (৫০) ও তার
লোকজন এই নির্যাতন চালায়। এ ঘটনায় পুলিশ
শুক্রবার দুপুরে সোনাহার নামের এক
নারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, চুয়াডাঙ্গার
দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা
কলোনী পাড়ার মৃত নঈম উদ্দিনের স্ত্রী
এলাকার চিহিৃত সুদখোর রাবেয়া বেগমের
(বিন্দু মাসি) কাছ থেকে বছর খানেক আগে
প্রতিবেশী দরিদ্র আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী
সেলিনা বেগম সুদের ওপর ৩০ হাজার টাকা
নেয়। চড়া সুদের ওই টাকা এক বছরে সুদেমূলে
মোট ৮০ হাজার টাকা দাবি করে রাবেয়া
বেগম।
এ নিয়ে কয়েকদিন আগে গ্রাম্য সালিশ
বৈঠকও হয়। সালিশ বৈঠকে ৬৫ হাজার টাকা
পরিশোধের জন্য গ্রাম্য মাতুব্বররা
সেলিনাকে জানায়। সে মোতাবেক দরিদ্র
সেলিনা বেগম এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ওই
৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে।
৬৫ হাজার টাকা হাতে পেয়ে সুদখোর
মহিলা রাবেয়া বেগম আরও ২৫ হাজার
টাকা দাবি করে। দরিদ্র সেলিনা বেগম ওই
২৫ হাজার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুদখোর রাবেয়া বেগম
তার লোকজনকে সাথে নিয়ে সেলিনা
বেগমকে চুলের মুঠি ধরে জোরপূর্বক টেনে
হেচড়ে উঠিয়ে নিয়ে এসে বাড়ির
উঠোনে একটি নারকেল গাছের সঙ্গে রশি
দিয়ে বেঁধে প্রকাশ্যে অমানুষিক নির্যাতন
চালায়।
এ সময় সেলিনার শিশুকন্যা কবিতা (১২) ও
শিশুপুত্র মুরাদকে (৮) চিৎকার ও
কান্নাকাটিতে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে
এসে প্রায় ১ ঘণ্টা পর সেলিনা বেগমকে মুক্ত
করেন।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু
জিহাদ জানান, নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ
সেলিনার দেবর আহসান আলী শুক্রবার
সকালে থানায় মামলার পর রাবেয়ার
সহযোগী সোনাহার নামে এক নারীকে
গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের উপস্থিতি
টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়া অপর দু আসামি
রাবেয়া বেগম ও তুকীকে গ্রেপ্তার করতে
পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।