মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

সরিষাবাড়ীতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, আন্তঃজেলা সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০১৬
  • ৪৩৮ বার পড়া হয়েছে

জাহিদ হাসান সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি:  জামালপুর:জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদী অববাহিকায় পানি কিছুটা কমলেও উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় জেলার নীচু অঞ্চল সরিষাবাড়ী পৌরসভাসহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নেই বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ডায়রিয়াসহ নানা পানিবাহিত রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুতগতিতে। পানিবন্দি মানুষদের বিশুদ্ধ পানি ও তীব্র খাবার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। নারী-শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষদের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিপাকের সৃষ্টি হয়েছে গবাদি পশু-পাখি নিয়ে। প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা না থাকায় হাহাকার করছে শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক বন্যার্ত মানুষ।
এদিকে বেসরকারী সংস্থার ত্রাণ তৎপরতাও তেমন লক্ষ্য করা যায় নি বন্যার্ত এলাকায়। তবে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রোববার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল এবং কলেজ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ৭ হাজার রুটি সংগ্রহ করে বন্যার্তদের মধ্যে বিতরন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদ এ.জেড. মোরশেদ আলী জানান, ‘এ পর্যন্ত ১০৫ মে. টন সরকারি চাল বরাদ্দ এসেছে। ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে অধিক বন্যার্ত পরিবারের মধ্যে মাথাপিছু ১০ কেজি করে চাল বিতরন করা হচ্ছে।’ তবে সমাজের বিত্তশালী ও বেসরকারী সংস্থাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে বিভিন্ন সড়ক ও বেরি বাঁধ ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। জামালপুর-সরিষাবাড়ী রেল লাইনের বেশ কিছু স্থানে বন্যার পানি ওঠায় শনিবার থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। জেলা সদরে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম সরিষাবাড়ী-জামালপুর রোডের ফুলবাড়িয়া এলাকার দুই স্থানে শনিবার প্রবল ¯্রােতে ভেঙে গেছে। এছাড়া সরিষাবাড়ী-মাদারগঞ্জ রোডের কয়েক স্থানে পানি ওঠায় বন্ধ হয়ে গেছে আন্তঃজেলা ও জেলা সদরে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। উপজেলা প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন জানান, ‘সাতপোয়া ইউনিয়নের ঝালুপাড়া-চর সরিষাবাড়ী-ঘোড়ামারা রোড, পোগলদিঘা ইউনিয়নের মালিপাড়া-চরগিরিশ রোড ও পিংনা ইউনিয়নের নরপাড়া রোড বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে এলজিইডির সদ্য সমাপ্ত সড়ক তিনটি বন্যায় প্রায় ৮০ ভাগ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলার পাঁচটি বেরি বাঁধের সবগুলোই পানিতে ডুবে গেছে।’ এদিকে পোগলদিঘা ইউনিয়নের গাছ বয়ড়া বেরি বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে কয়েকটি গ্রাম। কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর-বড়বাড়িয়া বেরি বাঁধসহ কয়েকটি বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ওই ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম। মহাদান ইউনিয়নের তালতলা বেরি বাঁধ ভেঙে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে অন্তত ১০টি গ্রাম। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অন্তত ২০টি সড়ক পানিতে ডুবে এবং ভেঙে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঘর থেকে বের হতে না পারায় এলাকার মানুষ যাতায়াতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
অপরদিকে নদীতে পানি কমতে শুরু করলেও পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে নতুন করে। আরামনগর ও শিমলা বাজারের অধিকাংশ স্থান ডুবে গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খাদ্য গুদাম, ঐতিহাসিক গণময়দানসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কাজ-কর্মে স্থবিরতা নেমে এসেছে। উপজেলা পরিষদ সুত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয় ও চলাচলের রাস্তায় পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে অন্তত ৬০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ৩০টি স্কুল-মাদরাসায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451