শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

একটু চলছে আরকি

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শনিবার, ৪ জুন, ২০১৬
  • ৪৯৯ বার পড়া হয়েছে

লক্ষ্মীপুর থেকে- সকাল ৯টা ৫৪ মিনিট। পশ্চিম শোশালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রামগঞ্জ উপজেলারদরবেশপুর ইউনিয়নের একটি ভোটকেন্দ্র। কিন্তু নেই কোনো ভোটার। কেন্দ্রে সাংবাদিকে এসেছেন শুনেই বের হয়ে আসেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন। এসেই হাত বাড়িয়ে করমর্দন করেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। কিন্তু তাঁর হাত মুঠিবদ্ধ। হাতে কী জানতে চাইলে তিনি হাত পেছনে লুকিয়ে ফেলেন। বারবার জানতে চাওয়া হয়, হাতে কি সিল? জোরাজুরির একপর্যায়ে কিন্তু হেসে বলেন, ‘হ্যাঁ, এই আর কি, এই চলতেছে।’এর পরপরই সাংবাদিক আসছেন শুনে ভোটার সেজে চার-পাঁচজন লাইনে দাঁড়িয়ে যান।এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ১ হাজার ৬১৫। আর সকাল ৯টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে প্রায় ৭০০।কেন্দ্রের বাইরে হামিদ আলী নামের এক ভোটার অভিযোগ করে বলেন, ‘ভাই, ভোট দিতে গেছিলাম। কিন্তু ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের যে সেক্রেটারি ভাই আছেন, ওনার সামনেই বিচারটা দিলাম।’ অভিযোগ শুনে সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন মুচকি মুচকি হাসতে থাকেন। একই অভিযোগ করেন নুরুন্নবী নামের আরেক ভোটার।কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা দিলীপ কুমার পাল বলেন, ‘আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।’ অল্প সময়ের মধ্যে এত ভোট পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, সকালের দিকে ভোটার ছিল, এখন কম।কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক শওকত আল মামুন বলেন, বাইরের পরিস্থিতি দেখার দায়িত্ব তাঁর। ভেতরেরটা দেখবেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা।ভাদুর ইউনিয়নের হানুবাইশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে গিয়ে একই দৃশ্য দেখা যায়। কোনো ভোটার ছিলেন না। নৌকার প্রার্থী জাহিদ হোসেন ভূঁইয়া এবং তাঁর লোকজন কেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে অবস্থান নিয়ে আছেন।সাংবাদিক এসেছেন শুনে সাত-আটজন লাইনে দাঁড়িয়ে যান। জানতে চাইলে বলেন, তাঁরা ভোটার। কিন্তু তাঁদের মধ্যে মো. আবদুল্লাহ, মো. রাসেল অলি, কাওসার আহমেদ প্রত্যেকের বয়স খুবই কম। তারা অষ্টম-নবম শ্রেণির ছাত্র। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উঠে ভোটারদের দেখতে যান। তিনি ফিরে এসে বলেন, ‘এদের জিজ্ঞেস করেছেন? এরা জানিয়েছে, এরা ভোটার।’
দরবেশপুর ইউনিয়নের আইয়েননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানে কেন্দ্রের ভেতর দুটি কক্ষে সুমন ও পলাশ নামের দুজন নৌকা প্রার্থীর লোক। তাঁরা এজেন্ট না হওয়ার পরও ভোটারদের তাঁদের সামনেই নৌকা প্রতীতে ভোট দিতে বলছিলেন।
আর নৌকা প্রার্থীর এজেন্ট মনির হোসেন নারী ভোটারদের বুথে ঢুকে নিজেই ব্যালট পেপারে সিল মারছিলেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা পিন্টু চন্দ্র দাস কোনো কিছুরই সদুত্তর দিতে পারেনি।আজ রামগঞ্জে ভাদুর, দরবেশপুর, নোয়াগাঁও, ভোলাকোট ও ভাটরা—এই পাঁচটি ইউনিয়ন ছাড়াও লক্ষ্মীপুর সদরের চরমনিমোহন ও কমলনগরের চরকাদিরা ইউনিয়নেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451