ঢাকা: বহুল কাঙ্ক্ষিত দেশের প্রথম মেট্রোরেলের ভূমি উন্নয়ন কাজ ও বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকায় অনেক মানুষের বসবাস। কিন্তু যাতায়াতের অবস্থা ততটা ভালো ছিল না। এখন সে স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। আমাদের লক্ষ্য যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করে তাদের যাতায়াত আরও সহজ করা।
রোববার (২৬ জুন) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রকল্প দু’টির নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে দেওয়া এ বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ঢাকায় অতিরিক্ত মানুষের বসবাস। কিন্তু রাস্তাঘাটের অভাব। আবার গাড়িও ব্যবহার হচ্ছে বেশি। এজন্য সাধারণ মানুষ যারা বাসে চড়েন, তাদের জন্য ঢাকা শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত আরও সহজ করা আমাদের লক্ষ্য।
‘সেজন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করছি। ঢাকাকে কেন্দ্র করে বৃত্তাকারে সড়ক, নৌপথ ও রেলপথ নির্মাণ করে যোগাযোগ আরও সুন্দর করার উদ্যোগ নিয়েছি। পুরো ঢাকা ঘিরে সব পথই থাকবে। সে ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই হয়ে গেছে। কাজও শুরু হবে।’
প্রধানমন্ত্রী এসময় মেট্রোরেল প্রকল্পের সুবিধা-খরচসহ বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশন থাকবে। সব ইলেকট্রনিক সিস্টেম হবে। ট্রেনে ওঠানামা দ্রুত হবে। কারও জন্য অপেক্ষা করা যাবে না।
অনুষ্ঠানে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন সড়কের উদ্বোধনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঈদের আগেই সুখবর পাবেন।
তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের দিকে কেউ তাকায় না। কিন্তু আমরা পুরো দক্ষিণাঞ্চলকে উন্নত যোগাযোগের আওতায় এনেছি। সেদিকে অনেক ব্রিজ-সেতু করে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করেছি। পটুয়াখালীর মতো জেলায়ও আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি করছি। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। পুরো দেশে উন্নয়নের ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি এবং করছি।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কও চার লেনে উন্নীত করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কেবল দেশীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকে তাকিয়ে নেই। আঞ্চলিক যোগাযোগেও গুরুত্ব দিয়েছি। বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল মিলে সড়ক যোগাযোগ চুক্তি হয়েছে।
‘সবই প্রতিশ্রুত ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অংশ। আমাদের লক্ষ্য ২০২১ মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা। আর ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে সামিল করা।’
অনুষ্ঠানে প্রকল্প দু’টির ফলক উন্মোচন করে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে দেশ ও জাতির উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এতে অংশ নেন শেখ হাসিনা।
ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়নাধীন উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এ মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য হবে ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার। এটি উত্তরা থেকে শুরু হয়ে পল্লবী-রোকেয়া সরণির পশ্চিম পাশ দিয়ে খামারবাড়ী-ফার্মগেট-হোটেল সোনারগাঁও-শাহবাগ- টিএসসি-দোয়েল চত্বর-তোপখানা রোড হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত যাবে। মেট্রোরেল চালু হলে ঘণ্টায় উভয়দিক থেকে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে।
আর বাস্তবায়নাধীন বিআরটিএ লাইন দিয়ে গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্ট সড়কে ঘণ্টায় ২৫ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে।