শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে ভয়ংকর ‘কিশোর গ্যাং’

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৩২৭ বার পড়া হয়েছে

এলাকায় ঝুট ব্যবসা নিয়ে ঝামেলা। শক্তি দেখাতে ডাক পড়ে আবুল হোসেনের। ‘কিশোর গ্যাং’ নিয়ে হাজির হয়ে যান। প্রতিপক্ষকে শাসিয়ে পথ পরিষ্কার করে দেন। এমন নানা অপকর্ম করলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলেন না। কিন্তু এবার রক্ষা হয়নি এই যুবলীগ নেতার। এক কিশোরকে অপহরণের পর গ্যাঁড়াকলে পড়েছেন। মুক্তিপণের দাবিতে মারধরে কিশোরের মৃত্যুর পর পুলিশের হাতে তিন সহযোগীসহ ধরা পড়েছেন আবুল হোসেন।

আবুল হোসেন ওরফে আপন (৩০) ঢাকার সাভারের আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তিনি কন্ডা এলাকার বাসিন্দা। ধরা পড়া তাঁর তিন সহযোগী হলেন আশুলিয়ার পবনারটেকের মো. আদিল (২২), শ্রীপুর এলাকার কামরুল ইসলাম (২১) ও জিরানী বাজারের রুবেল ইসলাম (২১)। গতকাল শনিবার তাঁদের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আবুল হোসেনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। আদিল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্য দুজনের রিমান্ড শুনানি গতকাল হয়নি।

এলাকায় ঝুট ব্যবসা নিয়ে ঝামেলা। শক্তি দেখাতে ডাক পড়ে আবুল হোসেনের। ‘কিশোর গ্যাং’ নিয়ে হাজির হয়ে যান। প্রতিপক্ষকে শাসিয়ে পথ পরিষ্কার করে দেন। এমন নানা অপকর্ম করলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলেন না।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, নিহত সবুজ (১৬) লালমনিরহাটের কাজী কলোনি গ্রামের মিছির আলীর ছেলে। অভিমান করে বন্ধু জাহিদুল ইসলামের (১৪) সঙ্গে বাড়ি ছাড়ে সে। ওই দুজন সোমবার আশুলিয়ায় চলে আসে। এরপর অপহরণের শিকার হয়। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ না পেয়ে সবুজকে পিটিয়ে হত্যা করে।

পুলিশ বলছে, আশুলিয়ার পবনারটেক এলাকায় সবুজের বোনের বাসা। সবুজ ও জাহিদুল সোমবার রাত দেড়টার দিকে ঢাকা ইপিজেড বাসস্ট্যান্ডে নামে। এরপর তারা হেঁটে শ্রীপুরের দিকে যাচ্ছিল। তাদের ধারণা ছিল, ওই দিকেই পবনারটেক। পথে কামরুলের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি ওই দুজন কোথায় যাচ্ছে জানতে চান। সব শুনে কামরুল তাদের প্রতি সমবেদনা জানান। রাতটুকু থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন। এরপর কামরুল তাদের শ্রীপুর মোজার মিল এলাকায় নির্জন ডোবার পাড়ে নিয়ে যান। মুঠোফোনে আবুল হোসেনসহ অন্তত ১৩ জনকে ডেকে আনেন। তাঁরা সবুজের মাকে ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিতে বলেন। টাকা পাঠাতে দেরি করায় দুজনকেই মারধর করেন। মঙ্গলবার সকালে সবুজ মারা যায়। জাহিদুল অচেতন হয়ে পড়ে। মৃত ভেবে তাদের ডোবার পাড়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যান সবাই। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বলেন, সবুজের বোন বিউটি আক্তার বুধবার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে শুক্রবার রাতে বিভিন্ন স্থান থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল তাঁদের ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তুলে সাত দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। আবুল হোসেনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। আর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আদিল। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। কামরুল ও রুবেলের রিমান্ড শুনানি গতকাল হয়নি।

কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে আবুল

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যুবলীগের নেতা আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভূরি ভূরি। এলাকায় ঝুটের ব্যবসা নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ রয়েছে। এই ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে শক্তি প্রদর্শনের দরকার পড়ে। তাঁরা টাকার বিনিময়ে আবুল হোসেনের কিশোর গ্যাংয়ের সহায়তা নেন। টাকার বিনিময়ে জমি দখলেও সহায়তা করে এই গ্যাংয়ের সদস্যরা। তারা অপহরণের মতো কর্মকাণ্ডেও যুক্ত।

ওসি কামরুজ্জামান বলেন, আবুল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে আসছিলেন। তাদের ভয়ে ভুক্তভোগীরা নীরবে সব সহ্য করতেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451