মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

এবার শুধুই তামিমের সেই ট্রফিটা

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় বুধবার, ৪ মার্চ, ২০২০
  • ২৮৩ বার পড়া হয়েছে
অসংখ্য পুরস্কারের ভিড়েও তামিমের ট্রফিকেসে একটা শূন্যতা ছিলই। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেললেও সেটির কোনো স্মারক যে ছিল না সেখানে! জিম্বাবুয়েকে উপলক্ষ করেই আরও একবার একই অর্জনের ট্রফি এল তাঁর কাছে

চার্লস কভেন্ট্রিকে কি একটু মিস করলেন তামিম ইকবাল? কিংবা সাকিব আল হাসানকে! সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে কাল কি তাঁর একবারের জন্যও মনে হয়নি, ‘আরে! এটা তো কুইন্স স্পোর্টস ক্লাবের মতোই!’

১৫৪-এর পর ১৫৮। বুলাওয়ের পর সিলেট। নিজের গড়া ইতিহাস নতুন করে লিখলেন তামিম। লিখলেন নিজেকে ফিরে পাওয়ার আনন্দময় সব শব্দে। বড় রান না পাওয়ার সমালোচনা আর মন্থর ব্যাটিংয়ের অপবাদ ঘোচানো ইনিংস দিয়ে সিলেটে যেন তামিম ফিরিয়ে আনলেন সাড়ে ১০ বছর আগের বুলাওয়েকে।

২০০৯ সালের আগস্ট, বাংলাদেশ দল জিম্বাবুয়ে গেল ৫ ওয়ানডের সিরিজ খেলতে। সঙ্গে একমাত্র সাংবাদিক হিসেবে এই প্রতিবেদক। বুলাওয়ের সেই সিরিজের চতুর্থ ম্যাচটা ইতিহাসে বাঁধাই হয়ে থাকবে কভেন্ট্রি-তামিমের দ্বৈরথ শিরোনামে, যাতে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী তামিম।

কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠে সেদিন সাঈদ আনোয়ারের ওয়ানডে-সর্বোচ্চ ১৯৪ রানের রেকর্ড ছুঁয়েছিলেন কভেন্ট্রি। ম্যাচের এক দিন পর তাঁর সঙ্গে এই প্রতিবেদকের দেখা হয়েছিল টিম হোটেলের লবিতে। অভিনন্দন জানাতেই শুকনো হাসি হাসলেন, যার অনুবাদ করে নিতে কষ্ট হয়নি। রেকর্ড গড়ে আর লাভ কী হলো! সেটি তো ঢাকা পড়ে গেছে তামিম ইকবালের ব্যাটের আড়ালে।

বাংলাদেশের সামনে ৩১৮ রানের পাহাড় গড়েছিল জিম্বাবুয়ে। এর আগে সর্বোচ্চ ২৭৪ রান পর্যন্তই তাড়া করে জেতা বাংলাদেশ সেদিন তামিমের ব্যাটে ৩১৮ রানের পাহাড়ও টপকে গেল। তাঁর অতিমানবীয় ১৫৪ রানে ১৩ বল হাতে রেখেই এসে যায় ৪ উইকেটের জয়। তামিমের সেই ১৫৪ কালকের আগপর্যন্তও হয়ে ছিল ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।

কভেন্ট্রি এখন দলে নেই। তবে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে তামিম কাল নতুন ইতিহাসটি গড়লেন সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই। এবার ১৫৮, ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের নতুন রেকর্ড। ২০ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কার ইনিংসে তামিম যেন দিতে চেয়েছেন দুঃসময় কাটিয়ে ওঠার দুরন্ত ঘোষণা।

অনেকটা এ রকমই দুঃসময় তিনি পার করেছিলেন ২০০৯ সালের জিম্বাবুয়ে সফরের আগেও। টানা ১৩ ওয়ানডেতে ফিফটি ছিল না। জিম্বাবুয়ে গিয়ে বন্ধ্যত্ব কাটে প্রথম দুই ওয়ানডের ফিফটিতে। কিন্তু মোহাম্মদ আশরাফুল আর সাকিবের সেঞ্চুরির ওই দুই ম্যাচে ৬৩ আর ৭৯ করে মন ভরেনি তামিমের! কভেন্ট্রির সঙ্গে জিম্বাবুয়েকেও হতাশায় ডোবানো সেঞ্চুরিটি হয়তো ছিল সেই ক্ষুধা থেকেই।

সেদিনের আগপর্যন্ত কানাডার বিপক্ষে সাকিবের ১৩৪ রান ছিল ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। ম্যাচের দুই দিন পর বুলাওয়েতে বসে এই প্রতিবেদককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাঠের একটা ঘটনা বলছিলেন তামিম, ‘সাকিবকে হাসতে হাসতে বললাম (ব্যাটিংয়ে সাকিব আল হাসান তখন তামিমের সঙ্গী), তোর রেকর্ডটা ভেঙে ফেলব নাকি। সাকিব বলল, ভাঙ।’

দল হারলেও কভেন্ট্রির জন্য সান্ত্বনা হয়েছিল ম্যান অব দ্য ম্যাচের ট্রফি। ম্যাচসেরা হয়েছিলেন তামিম, কভেন্ট্রি দুজনই। কিন্তু ট্রফিটা তামিম দিয়ে দিয়েছিলেন কভেন্ট্রিকে। কারণ তাঁর ইনিংসটি ছিল বিশ্ব রেকর্ডে ভাগ বসানো। তামিম বলেছিলেন, ‘ট্রফিটা ওর জন্যই বেশি মূল্যবান। ভাগ্যে থাকলে এ রকম ট্রফি আরও আসবে।’

অসংখ্য পুরস্কারের ভিড়েও তাই তামিমের ট্রফিকেসে একটা শূন্যতা ছিলই। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেললেও সেটির কোনো স্মারক যে ছিল না সেখানে! তামিমকে ভাগ্য আসলেই ঠকায়নি। জিম্বাবুয়েকে উপলক্ষ করেই আরও একবার একই অর্জনের ট্রফি এল তাঁর কাছে। এবার আর তামিমের অর্জনে ভাগ বসানোর কেউ নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451