মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

দিনভর সদরঘাটে ভিড়, লঞ্চ ছাড়ার অপেক্ষা

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০১৯
  • ২৮৮ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ

দুপুর সাড়ে ১২টা। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ভিড়। সেখানে থাকা লঞ্চগুলোতে বসে গেছেন যাত্রীরা। প্রায় সব লঞ্চই যাত্রীতে পূর্ণ। আরো মানুষ অপেক্ষা করছেন টার্মিনালে। সন্ধ্যার পর ছাড়বে এসব লঞ্চ। সেই অপেক্ষার শুরু সকাল থেকেই।

আজ মঙ্গলবার চাঁদ দেখা গেলে কাল ঈদ। বাড়ি ফেরার শেষ দিন সে অর্থে আজই। এরই মধ্যে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছেড়েছে ঘরমুখো মানুষ। বন্ধ হয়ে গেছে সরকারি-বেসরকারি সকল অফিস আদালত। তাই অনেকটা ফাঁকা হয়ে গেছে রাজধানী ঢাকা শহর।

পোশাক শ্রমিক এবং ব্যবসায়ীরা মূলত আজ ঢাকা ছাড়ছেন। দুপুর ২টার দিকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখাযায়, অ্যাডভেঞ্চার-৯ এবং এম এন মানামী, এমডি ফারহান-৫সহ প্রায় অর্ধশতাধিক লঞ্চ টার্মিনালে লোক উঠাচ্ছে। এসব লঞ্চ ঈদের সময় ছাড়ার বিষয়ে কোনো নির্ধারিত সিডিউল নেই। লঞ্চ যাত্রী পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান লঞ্চ কর্মচারীরা। তবে নির্ধারিত সিডিউল না থাকলেও সকাল থেকে পূর্ণ হওয়া এসব লঞ্চ ছাড়া হবে সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১০টার মধ্যে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) কর্মকর্তারা জানান, ঘরমুখী যাত্রীদের একটি অংশ আগেই বাড়ি ফিরছে। বিশেষ করে পরিবারের নারী-শিশুদের আগেভাগেই বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মূলস্রোত গতকাল গেছে তবে আজ  মঙ্গলবার ও সন্ধ্যা নাগাদ ভিড় বাড়ছে। লঞ্চগুলো সন্ধ্যার পর ছাড়া হবে।

গাজীপুর চাকরি করেন ইমরান হোসেন। তিনি বলেন, ‘ভোর ৫টা থেকে ১০টা পর্যন্ত লঞ্চঘাট এলাকা বন্ধ ছিল। যে কারণে হাজার হাজার মানুষ বৃষ্টির মধ্যে সমস্যায় পড়ে যায়। ১০টার পর গেট খুলে দিলে সবাই লঞ্চে উঠে। পরিবার আগে থেকেই পাঠিয়ে দিয়েছি। গতকাল অফিস ছুটি হয়েছে। এ কারনে আমি একা যাচ্ছি। লঞ্চ কখন ছাড়ে বলতে পারছি না।’

রুমানা নামের এক পোশাক শ্রমিক বলেন, ‘গতকাল অফিস বন্ধ হইছিল। আজকা ঈদ করতে যাইতেছি। অনেক ভালো লাগছে।’

বিআইডব্লিউটিসির তথ্য অনুযায়ী, এবার ঈদে যাত্রী পরিবহনে ২১ জেলার ৪৩টি নৌরুটে ২১৫টি লঞ্চ চলাচলা করছে। গতকাল শতাধিক লঞ্চ এসব রুটে ছেড়ে গেছে।

বরিশালের মুলাদী উপজেলার বাসিন্দা আবু জাফর বলেন, ‘এবার টার্মিনালের চেহারাই পাল্টে গেছে। প্রশাসন বেশ তৎপর। কোথাও কোনো হকার নেই। আগের মতো ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি।’

ঈদকে সামনে রেখে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ সদরঘাটে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে। বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিএনসিসি, ভ্রাম্যমাণ আদালতের দল ও মেডিকেল টিমের সদস্যদের ঘাট এলাকায় দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সাদা পোশাকে পুলিশের বিশেষ টিমকেও টহল দিতে দেখা যায়।

সদরঘাটের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা নদীবন্দরের (সদরঘাট) যুগ্ম পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা) আলমগীর কবির বলেন, ‘এবার আমরা সদরঘাট হকারমুক্ত করেছি। এই হকাররাই বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকে। তা ছাড়া ধারণক্ষমতার চেয়ে বাড়তি যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছাড়তে দেব না,এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। সতর্কবার্তার পরেও যেসব লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী বহন করবে তাদের জরিমানার আওতায় আনা হবে।’ তিনি বলেন, ‘এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে আমরা ৩৭টি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দুটি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক ঘাটে থাকবে। এ ছাড়া সুপেয় পানি, মহিলাদের ব্রেস্ট ফিডিং রুম এবং প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪৩টি রুটে লঞ্চ চলাচল করে। এসব রুটে ৩০-৩৫ লাখ যাত্রী যাতায়াত করে। ঈদে যাত্রীদের বিশেষ সুবিধা দিতে এবার ১৭০-১৭৫টি লঞ্চ যাতায়াত করবে। যাত্রী চাপ বাড়লে লঞ্চের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451