শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন

সাধারন মানুষের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালসহ উপজেলার হাসপাতাল গুলিতে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের দৌরাত্ব বৃদ্ধি : অসহায় রোগিরা

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৮
  • ৩৪২ বার পড়া হয়েছে

এম শিমুল খান, নিজস্ব প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলিতে বর্তমানে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের দৌরাত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের কারনে বর্তমানে অসহায় হয়ে পড়েছে দুর দুরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগিরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও জেলা সিভিল সার্জন অফিসের নিষেধ থাকা শর্তেও বর্তমানে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ব দিন দিন বেড়েই চলছে।
সরেজমিন গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ডাক্তারের কক্ষের সামনে টিকিট হাতে দাড়িয়ে আছে প্রায় ৫০ থেকে ১০০ জন রুগি জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে আগত এদের অধিকাংশ মানুষই নিম্ন আয়ের ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা ভিজিট দিয়ে কোন প্রাইভেট ক্লিনিকে বা ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে ডাক্তার দেখানো তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। যার কারনে তারা চিকিৎসা নিতে সরকারি হাসপাতালে গুলিতে আসে চিকিৎসা সেবা নিতে। কিন্তু সেখানে এসেও তারা সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের জন্য। বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা একজন একজন করে ডাক্তারদের রুমে প্রবেশ করে। তারা গড়ে একজন ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় নষ্ট করে ফেলে ডাক্তারের সাথে নতুন ওষুধ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলাপ করতে গিয়ে। যার ফলে চিকিৎসা নিতে আসা হতভাগা গরীব মানুষ গুলো সরকারি ভাবে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে আরো দেখা যায়, বিভিন্ন জায়গা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা হতভাগা গরীব মানুষ গুলো ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে আছে অথচ ডাক্তার রুগি না দেখে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে খোস গল্পে মসগুল রয়েছে। বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি কতৃক উপহার সামগ্রী গ্রহন ও তাদের কোম্পানির ওষুধ সম্পর্কে ধারনা নিতে ব্যস্ত থাকেন ডাক্তাররা। অথচ বিভিন্ন জায়গা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা হতভাগা গরীব মানুষ গুলো ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে আছে সেদিকে কোন খেয়ালই নেই তাদের।
মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা উজানি গ্রামের আব্দুর রহিম বলেন, আমি চিকিৎসা নিতে এসেছি অথচ সকাল থেকে দাড়িয়ে আছি ডাক্তার সাহেব আমাকে ডাকছেন না। আমি দেখলাম সকাল থেকে ৭-৮জন লোক সার্ট-প্যান্ট জুতা পরে ডাক্তার স্যারের অফিসে একবার ডুকে আরেক বার বের হয়। কিন্তুু জিজ্ঞাসা করলে কোন উত্তর দেয় না। পরে জানতে পারলাম তারা বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোক ছিল। তাদের কারনে আমি ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে আছি চিকিৎসা নিতে পারছিনা।
মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা কদমপুর গ্রামের রহিমা খাতুন বলেন, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোকদের কারনে এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা আমার মত অনেক মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে থাকে। অনেকে আবার চিকিৎসা সেবা না নিয়েই চলে যায়। এ অবস্থা চলছে দীর্ঘ দিন যাবত এ হাসপাতালে। এর একটা সুরাহা হওয়া উচিৎ।
কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রামদিয়া গ্রামের আবু তালেব বলেন, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোকদের এ অত্যাচার চলছে অনেক দিন যাবত। আমরা তাদের কারনে ঠিক মত ডাক্তার দেখাতে পারিনা। আপনারা ভাল করে পত্রিকায় লিখবেন যাতে করে তাদের অত্যাচার থেকে সাধারন রুগিরা নিস্তার পায়।
কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা বেথুড়িয়া গ্রামের আমেনা বেগম বলেন, আমি চিকিৎসা নিতে এসেছি অথচ সকাল থেকে দাড়িয়ে আছি ডাক্তার সাহেব আমাকে ডাকছেন না। আমি দেখলাম সকাল থেকে ৭-৮ জন লোক সার্ট-প্যান্ট জুতা পরে ডাক্তার স্যারের অফিসে একবার ডুকে আরেক বার বের হয়। কিন্তুু জিজ্ঞাসা করলে কোন উত্তর দেয় না। পরে জানতে পারলাম তারা বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোক ছিল। তাদের কারনে আমি ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে আছি চিকিৎসা নিতে পারছিনা।
কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা তারাশি গ্রামের মানিক মুন্সি বলেন, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোকদের এ অত্যাচার চলছে অনেক দিন যাবত। আমরা তাদের কারনে ঠিক মত ডাক্তার দেখাতে পারিনা। আপনারা ভাল করে পত্রিকায় লিখবেন যাতে করে তাদের অত্যাচার থেকে সাধারন রুগিরা নিস্তার পায়।
কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা কয়খা গ্রামের আসমা আক্তার বলেন, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোকদের কারনে এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা আমার মত অনেক মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে থাকে। অনেকে আবার চিকিৎসা সেবা না নিয়েই চলে যায়। এ অবস্থা চলছে দীর্ঘ দিন যাবত এ হাসপাতালে। এর একটা সুরাহা হওয়া উচিৎ।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা পাটগাতি গ্রামের আব্দুল ওদুদ বলেন, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোকদের কারনে এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা আমার মত অনেক মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে থাকে। অনেকে আবার চিকিৎসা সেবা না নিয়েই চলে যায়। এ অবস্থা চলছে দীর্ঘ দিন যাবত এ হাসপাতালে। এর একটা সুরাহা হওয়া উচিৎ।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা লেবুতলা গ্রামের মোমেনা বেগম বলেন, আমি চিকিৎসা নিতে এসেছি অথচ সকাল থেকে দাড়িয়ে আছি ডাক্তার সাহেব আমাকে ডাকছেন না। আমি দেখলাম সকাল থেকে ৭-৮ জন লোক সার্ট-প্যান্ট জুতা পরে ডাক্তার স্যারের অফিসে একবার ডুকে আরেক বার বের হয়। কিন্তুু জিজ্ঞাসা করলে কোন উত্তর দেয় না। পরে জানতে পারলাম তারা বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোক ছিল। তাদের কারনে আমি ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে আছি চিকিৎসা নিতে পারছিনা।
যদি বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা ডাক্তারদের কে হয়রানি না করে তাহলে চিকিৎসা সেবার মাত্রা আরো অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন মহলের অনেকেই।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল গুলিতে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ঠুকতে না দেওয়ার বিষয়টি আরো কড়াকড়ি করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ স্বাস্থ্য বিভাগের উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছে অভিজ্ঞ মহল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451