শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

শীতকালীন আগাম সবজি চাষে ব্যাস্ত সময় পার করছে কৃষক

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৮
  • ৪৬৬ বার পড়া হয়েছে

 

মেহেদী হাসান উজ্জল, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
শষ্য ভান্ডার খ্যাত দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার প্রতিটি এলাকায় অধিক লাভের আশায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যাস্ত সময় পারকরছেন কৃষকেরা। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় উঁচু জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষক পরিবার গুলোতে ব্যাস্ততা বেশ বেড়েছে।
কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে জমিতে হাল চাষ,চারা রোপণ, ক্ষেতে পানি ও ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করাসহ নানা কাজে ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা । শুধু নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। শীতের শুরুতে রাজধানাী ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী জেলা গুলোতে বিভিন্ন জাতের সবজি পাঠায় এ উপজেলার কৃষকরা।
সবুজে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তৃর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি আলু,সীম,ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুন, মুলা, করলা, পটোল, পালং ও লাল শাকসহ রকমারি শীতকালীন সবজির চারা। তাই মাঠে মাঠে এসব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যাস্ত কৃষকরা। কাক ডাকা ভোরে কোদাল, নিড়ানী, বালতি, স্প্রে মেশিন ইত্যাদি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছে এখন কৃষকরা। ক্ষেতে নেমে পড়েন সবজি পরিচর্যায়। বিকেল অবধি মাঠেই চারার গোড়ায় পানি ঢেলেই ফিরছেন সবাই বাড়ী। তাদের কেউ দাঁড়িয়ে কোদাল চালাচ্ছেন, অনেকেই গাছের গোঁড়ালির পাশ দিয়ে ঘোরাচ্ছেন নিড়ানী, কেউবা খালি হাতেই গাছগুলো ঠিক করছেন। কেউ বা নেতিয়ে পড়া চারার স্থলে সতেজ চারা প্রতিস্থাপন করছেন,আবার কেউ সার ছেটাচ্ছেন। এভাবে শীতকালীন সবজি নিয়ে চলছে কৃষকের কর্মযজ্ঞ। বেড়েই চলছে কৃষকদের কাজের চাপ।
খয়েরবাড়ী বালুপাড়া গ্রামের কৃষক শাইনুর ইসলাম বলেন, ধান চাষে তেমন একটা সুবিধা করতে পারছেন না তারা। কোনোভাবেই লোকসান ঠেকাতে পারছেন না,তাই রকমারি সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন উপজেলার অনেক কৃষক।
উপজেলার বেতদিঘি ইউনিয়নের কৃষক আব্দুর কারিম বলেন, সবজি চাষের জন্য খুব বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। তুলনামূলক ভাবে মূলধনও কম লাগে। পরিশ্রমও তুলনামূলক কম। তবে সেবায় ক্রটি করা যাবে না। কিন্তু রোগবালাই দমনে সবজি ক্ষেতে সবসময় তদারক করতে হয়। স্বল্প সময়েই সবজি বিক্রি উপযোগী হয়ে ওঠে। প্রায় প্রতিদিনই বাজারে সবজি বিক্রি করা যায়।সেই সাথে পরিবারের চাহিদা মেটানোও সম্ভব হয়। ক্ষেতে সবজি থাকা পর্যন্ত প্রত্যেক কৃষকের হাতে কমবেশি টাকা থাকে। যা অন্য ফসলের বেলায় সম্ভব না। এছাড়া চলতি মৌসুমে সবজির দামও বেশ ভালো। সবমিলিয়ে সবজি চাষকেই লাভজনক মনে করছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এটিএম হামিম আশরাফ বলেন, বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আলু ২হাজার ১৫ হেক্টর, সীম, বেগুন, লালশাক, মুলা শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো ১৬শ ৫ হেক্টর ও অন্যান্য সবজী ৬শ হেক্টরসহ প্রায় ৪হাজারেরও অধিক জামিতে শাক-সবজি চাষ-আবাদ চলছে। সবজির কদর সারাদেশেই রয়েছে। তবে তা আগাম চাষ করতে পারলে আরও বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করলে কীটনাশকমুক্ত সবজি চাষ করা সম্ভব। সবজি ক্ষেতে পোকামাকড় আক্রমণ করবেই। সেজন্য কীটনাশক ব্যবহার না করে আধুনিক বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে পোকামাকড় দমন করা সম্ভব।
কৃষকদের সবজি চাষে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে । সবজি চাষে যুক্ত উপজেলার কৃষকরা এবার বেশ উৎফুল্ল। কারণ তারা প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূল থাকায় এবার উৎপাদিত ফসলের ফলন ও দাম বেশ ভালো পাবেন বলে তিনি মনে করছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রাতদিন নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। কৃষকদের সেক্সফোরেমন পদ্ধতির ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এ পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে সবজি ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহার অনেকটাই কম থাকায় সবজি গুনগত মানে সেরা হওয়ায় চাহিদাও অনেক বেশি । চাষিরা এখন বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষাবাদ করে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে বলেও জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451