সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ঃ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে আমন ধানের ক্ষেতে পাতা পোড়া ও খোল পঁচা রোগ ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় চারা রোপণ থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত সেচ দিতে কৃষককে মোটা অংকের টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। তার উপর শীষ আসার আগ মুহুর্তে ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে পাতা পোড়া ও খোল পঁচা রোগে। কৃষকদের অভিযোগ ক্ষেতে ব্যাপকভাবে পাতা পোড়া ও খোল পঁচা রোগ ছড়িয়ে পড়লেও তা প্রতিরোধে উপজেলা কৃষি অফিসের দিক নির্দেশনা বা পরামর্শ পাচ্ছেন না তারা। নিজ বুদ্ধি ও ঔষধ কোম্পানীর লোকজন, কীটনাশক ব্যবসায়ীদের পরামর্শে ঔষধ প্রয়োগ করে প্রতিকারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমতবস্থায় কাঙ্খিত ফলন নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন উপজেলার কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, উপজেলার পানিমাছকুটি কদমের তল, বিলুপ্ত ছিটমহলের হাবিবপুর, কামালপুর, শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের তালুক শিমুলবাড়ী, বড়ভিটা ইউনিয়নের চর বড়লই, কাশিপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর, ফুলবাড়ী ইউনিয়নের কুটিচন্দ্রখানা গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকার জমির আমন ক্ষেতে ব্যাপকভাবে পাতা পোড়া ও খোল পঁচা রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। এ রোগের প্রাদুরর্ভাবে ধানক্ষেতের অধিকাংশ গাছের পাতা পুড়ে মরে যাচ্ছে, পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পাতার নিচের অংশের খোল। দুর থেকে দেখলে মনে হয় ক্ষেতের ধান পেকেছে কিন্তু কাছে গেলে স্পষ্ট হয় ক্ষেত রোগাক্রান্ত ।
শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের বারাইতারী গ্রামের কৃষক মুকুল মিয়া, আব্দুর রশিদ, হেলাল উদ্দিন, ছিটমহাল হাবিবপুর গ্রামের কৃষক ফজলুল হক, কুজরত আলী, কাশিপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের কৃষক ইয়াকুব আলী, মফিজুল ইসলাম, আইয়ুব আলী জানান, চারা রোপণের পর কয়েক দফা সেচ এবং সঠিক পরিচর্যা করায় শুরু থেকে ক্ষেতের অবস্থা ভালই ছিল । কিন্তু গত এক সপ্তাহের মধ্যেই পাতা পোড়া ও খোল পঁচা রোগের আক্রমনে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। রাতারাতি বিবর্ণ হয়ে ধান গাছ মরে যাচ্ছে। কীটনাশক দিয়েও কাজ হচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি অফিসার মাহবুবুর রশিদ জানান, এ বছর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ১১ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৭৫ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের ধান চাষ করা হয়েছে যা ইতিমধ্যেই কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। কোন কোন আমন ধান ক্ষেতে পাতা পোড়া ও খোল পঁচা রোগ আক্রমন করেছে এটা সত্য। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই। কৃষকদেরকে ঔষুধ প্রয়োগ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা না পাওয়ার বিষয়ে কৃষকদের অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, কৃষকদেরকে খুঁজে খুঁজে পরামর্শ দেয়া সম্ভব নয়। প্রত্যেক এলাকায় আমাদের কেন্দ্র আছে, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সেখানে প্রতি সপ্তাহে কৃষকদেরকে জড়ো করে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন। কোন কৃষকের সমস্যা হলে সেখানে গিয়ে পরামর্শ নিতে পারবেন।