শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

নুসরাতকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে : মানবাধিকার কমিশন

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৯
  • ৪৭৭ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক আল মাহমুদ ফায়জুল কবীর (অভিযোগ ও তদন্ত) বলেছেন, ‘যেখানে নুসরাতের ভাই নোমানকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি সেখানে চারটি বাইরের লোক কীভাবে প্রবেশ করেছে? মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এটা বলতে পারেনি। খুবই পরিকল্পিতভাবে সকলের চোখের অন্তরালে এটা ঘটানো হয়েছে। যেহেতু পরীক্ষার সময় ১৪৪ ধারা ছিল, ওই সময়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে নুসরাতকে হত্যার জন্য এরা ছাদে ওত পেতে ছিল।’

আজ শুক্রবার নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনাস্থল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ফায়জুল কবীর। তিনি বলেন, ‘প্রশাসন সতর্ক থাকলে নুসরাতের ভাগ্যে এমন ঘটনা ঘটত না।’

পোড়া শরীর নিয়ে টানা পাঁচদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেন নুসরাত। গত বুধবার মারা যান তিনি।

আজ ওই মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক ফায়জুল কবীর। এ সময় তিনি বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

ফায়জুল কবীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেখানে জীবনের অধিকার নেই খোনে মানবাধিকার ভূলুন্ঠিত হয়। সাক্ষীদের দেওয়া তথ্য থেকে বলা যায় ঘটনার মাস্টারমাইন্ড অধ্যক্ষ সিরাজউদদৌলা। ইতোপূর্বেও এ অধ্যক্ষ ছাত্রীদের সাথে অশোভন আচরন করেছেন। কিন্তু অন্যরা তা নীরবে সয়ে গেলেও রাফি নারী জাতির সম্মান ইজ্জত রক্ষার জন্য সাহসী ভূমিকা রেখেছে।

 

ফেনীর সোনাগাজীতে নুসরাতের মাদ্রাসা পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক আল মাহমুদ ফায়জুল কদের ।

ফায়জুল কবীর আরো  বলেন, ‘গত ২৭ মার্চ রাফির সঙ্গে অধ্যক্ষের  যে ঘটনা হয়েছে তার জের ধওে ৬ এপ্রিল নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে। ২৭ মার্চের ঘটনাটির জন্য মাদ্রাসা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক হলে ৬ এপ্রিলের ঘটনা ঘটত না। সিরাজউদদৌলা  সমাজের প্রভাশালী ব্যক্তিদের দিয়ে আড়াল করে রেখেছিল, প্রকাশ হতে দেয়নি।’

২৭ মার্চ ঘটনার পর নুসরাতের সঙ্গে সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) ব্যবহার প্রসঙ্গে পরিচালক বলেন, ‘থানায় একটি মেয়ে আশ্রয় নিতে এসে সম্ভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে কতটুকু কথা বলতে পারে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বোঝা উচিত ছিল।’

নুসরাত এবার সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলিম (এইচএসসি সমমান) পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তিনি সোনাগাজীর উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের মাওলানা এ কে এম মুসা মানিকের মেয়ে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। গত ৬ এপ্রিল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাদ্রাসা ভবনের ছাদে দুর্বৃত্তরা তাঁর গায়ে আগুন দেয়। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফেনী সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

পরিবারের অভিযোগ, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ দৌলা গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহানের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। নুসরাত বিষয়টি বাসায় জানালে তাঁদের মা সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সোনাগাজী থানা পুলিশ অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে।

এরপর মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় অধ্যক্ষের লোকজন। কিন্তু নুসরাত অপারগতা প্রকাশ করেন।

এরই মধ্যে অধ্যক্ষসহ কয়েকজনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451