শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

দ্বিতীয় ধাপের ভোট আজ, ‘অনিয়ম হলেই ব্যবস্থা’ উপজেলা নির্বাচন

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০১৯
  • ২৫৯ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ

চলমান পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের পাঁচ বিভাগের ১৬ জেলার ১১৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আজ সোমবার। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচনে কেউ অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসি।

দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু করতে কঠোর অবস্থানে ইসি। এরই ধারাবাহিকতায় পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে ছয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দিয়েছে ইসি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তিন পার্বত্য জেলায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়াসহ দুই সাংসদকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।

আজ রোববার বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এসব তথ্য জানান।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘সারা দেশে পাঁচ ধাপে ৪৮০ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হবে। আপনারা জানেন, দ্বিতীয় ধাপে ১৭টি জেলার ১২৯টি উপজেলায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী সময়ে আদালতের আদেশে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া গোপালগঞ্জের পাঁচটি উপজেলার নির্বাচন তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, এটা আমরা শিফট করে দিয়েছি। দিনাজপুর জেলার সদর উপজেলার নির্বাচন চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছয়টি উপজেলা পরিষদে তিন পদের সব প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছে। সুতরাং এই ছয়টিতে আর ভোটগ্রহণের প্রয়োজন হবে না। সবমিলিয়ে আগামীকাল ১৮ মার্চ ১১৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে।’

ছয় ওসির অব্যাহতির বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘ওসিদের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সেখানকার থানার ওসিকে (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) বদলির প্রস্তাব করেছি। নির্বাচন কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দিয়ে ওখানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।  নির্বাচন কমিশন সেগুলো অনুমোদন দিয়েছেন।’

ইসি সচিব বলেন, ‘পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে আগামীকাল ১৮ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। এই নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণ হয়, সেজন্য নির্বাচন কমিশন থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আজকেও বিকেল ৩টায় নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।’

সচিব বলেন, ‘আগামীকাল যে নির্বাচন হবে সেটা যেন শান্তিপূর্ণ হয় এবং কোথাও যেন অনিয়ম না হয়, সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেছে। কেউ যদি অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

১১৬ উপজেলার মোট ভোটার ও প্রার্থী

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার রয়েছেন এক কোটি ৭৯ লাখ নয় হাজার ছয়জন। মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা সাত হাজার ৩৯টি। মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হচ্ছেন- এক হাজার ৩২৫ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ৩৭৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ৫৪৮ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ৪০০ জন।

৪৮ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত

৪৮ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ২৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ১৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ১২ জন। যে ছয়টি উপজেলার সব পদেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে সেগুলো হলো চট্টগ্রামের রাউজান, মিরেরসরাই, নোয়াখালীর হাতিয়া, ফরিদপুর সদর, পাবনা সদর ও নওগাঁ সদর।

তিন পার্বত্য জেলায় সেনাবাহিনীর সহায়তা চেয়েছে ইসি

দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানের ২৫ উপজেলার ভোটের মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোটের লক্ষ্যে এই তিন পার্বত্য জেলার উপজেলাগুলোতে নির্বাচনী দায়িত্বে সেনাবাহিনীকে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এই বিষয়ে সচিব বলেন, ‘তিন পার্বত্য জেলাতে আমরা সেনা বাহিনীর সহায়তা চেয়েছি। আপনারা জানেন, এখানে বিরাজমান কিছু পরিস্থিতি আছে। শান্তি চুক্তির পক্ষে বিপক্ষে কিছু সমস্যা আছে। পাহাড়িদের মধ্যে যে উত্তেজনা থাকে, সেগুলোকে প্রশমিত করার জন্য সেনা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি এবং সেভাবে তাদের সহযোগিতা থাকবে। সেনা বাহিনী এসব জায়গায় ১৭, ১৮ ও ১৯ মার্চ দায়িত্ব পালন করবে।’

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ভোটের আগে ও পরে দুইদিনসহ মোট পাঁচদিন মাঠে থাকছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর অংশ হিসেবে শনিবার পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, আর্মড পুলিশ, ব্যাটালিয়ান আনসার সদস্যরা মাঠে নেমেছেন। আচরণবিধি প্রতিপালন ও বিশৃঙ্খলা ঘটনা রোধে মাঠে রয়েছেন নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশ থাকবে সাধারণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রভেদে। সাধারণ কেন্দ্রে ১৪ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৫-১৬ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে।

আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেল গঠন

নির্বাচন উপলক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেল গঠন করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। সেলের সদস্যরা নির্বাচনের এক দিন আগে থেকে পরের দিন পর্যন্ত ইসিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবহিত করার পাশাপাশি নির্বাচন সামগ্রী তদারকি করবেন।

দুই সাংসদকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগে গতকাল সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়াকে গাইবান্ধা-৫ ও কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সারওয়ার কমলকে নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ছয় ওসিকে অব্যাহতি

যেসব থানার ওসিদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, গাইবান্ধার ফুলছড়ি, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, বগুড়ার শিবগঞ্জ, নওগাঁর মান্দা ও বান্দরবানের আলীকদম থানা। তাদের পরিবর্তে এসব থানায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

যেসব উপজেলায় ভোট হবে

রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁও জেলার সদর, পীরগঞ্জ, হরিপুর, বালিয়াডাঙ্গী ও রাণীশংকৈল উপজেলা; রংপুর জেলার গংগাচড়া, তারাগঞ্জ, পীরগাছা, বদরগঞ্জ, কাউনিয়া ও পীরগঞ্জ উপজেলা; গাইবান্ধা জেলার গাইবান্ধা সদর, সাদুল্লাপুর, গোবিন্দগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও পলাশবাড়ী উপজেলা; দিনাজপুর জেলার কাহারোল, বোচাগঞ্জ, চিরিরবন্দর, ফুলবাড়ী, বিরামপুর, হাকিমপুর বীরগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, বিরল, পার্বতীপুর, খানসামা ও ঘোড়াঘাট উপজেলা।

রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলার সদর, নন্দীগ্রাম, সারিয়াকান্দি, আদমদীঘি, দুপচাঁচিয়া, ধুনট, শাজাহানপুর, শেরপুর, শিবগঞ্জ, কাহালু, গাবতলী ও সোনাতলা উপজেলা; নওগাঁ জেলার নওগাঁ সদর, আত্রাই, নিয়ামতপুর, সাপাহার, পোরশা, ধামইরহাট, বদলগাছী, রাণীনগর, মহাদেবপুর, পত্মীতলা ও মান্দা উপজেলা; পাবনা জেলার পাবনা সদর, আটঘরিয়া, বেড়া, ভাংগুড়া, চাটমোহর, ফরিদপুর, ঈশ্বরদী, সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলা।

সিলেট বিভাগের সিলেট জেলার সদর, বিশ্বনাথ, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, গোপালগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা; মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, রাজনগর, সদর, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা।

ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর জেলার সদর, বোয়ালমারী, চরভদ্রাসন, সদরপুর, সালথা, আলফাডাঙ্গা, মধুখালী, নগরকান্দা ও ভাঙ্গা উপজেলা।

চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা; চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, মীরসরাই, রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলা; রাঙামাটি জেলার রাঙামাটি সদর, লংগদু, নানিয়ারচর, কাপ্তাই, জুরাছড়ি, বাঘাইছড়ি, কাউখালী, বরকল, রাজস্থলী ও বিলাইছড়ি উপজেলা; বান্দরবান জেলার সদর, রোয়াংছড়ি, আলীকদম, থানচি, লামা, রুমা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা; খাগড়াছড়ি জেলার সদর, মানিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, দীঘিনালা, মহালছড়ি, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা ও রামগড় উপজেলা এবং কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায়

 

।-সুত্র,এন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451