বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে তান্ডব পুলিশের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক ডিসির কাছে স্মারকলিপি

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
  • ১৭৬ বার পড়া হয়েছে

 

টি.আই সানি গাজীপুরঃ
গাজীপুরের টঙ্গীতে তাবলীগ জামায়াতের দুই পক্ষের সংঘর্ষকালে পুলিশের
ভূমিকা ছিল রহস্যজনক বলে দাবী করেছে জোবায়ের অনুসারীরা। সোমবার
জোবায়ের অনুসারী মুরুব্বীরা তাবলীগের সাথীদের উপর সা’দ অনুসারীদের
হামলার প্রতিবাদে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে ৬দফা দাবি সম্বলিত
স্মারকলিপি দিয়েছে। এদিকে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র
করে শনিবারের সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় টঙ্গী পশ্চিম থানায় আরো একটি
মামলা হয়েছে। এ নিয়ে ওই দিনের ঘটনায় মোট দু’টি মামলা দায়ের করা হলো।
সোমবার দুপুরে জেলা শহর জয়দেবপুরে জোবায়ের অনুসারিরা ইজতেমা মাঠে
মুসুল্লীদের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে তারা জেলা
প্রশাসকের কাছে ৬ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করেন। এতে মাওলানা
আশেকে মুস্তফা, মুফতি মাসউদুল করীম, মুফতি লেহাজ উদ্দিন ভূইয়া, মুফতি
নূরুল ইসলাম, মূফতি আতাউর রহমান, মাওলানা ফজলুর রহমান প্রমূখ নেতৃত্ব
দেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গত শনিবার টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে জামাতবন্দি
হয়ে কাজরত অবস্থায় তাবলীগের সাথী ও মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষকদের উপর মাওলানা
সা’দ অনুসারীরা সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এসময় সেখানে উপস্থিত পুলিশ
দাঁড়িয়ে নিরব ভূমিকা পালন করেছে। শুধু তাই নয় ওই দিন গেইট ভেঙ্গে ভেতরে
ঢুকতে পুলিশ সা’দ পন্থীদের সহায়তা করেছে। ঘটনা শুরুর আগে প্রশাসনের
সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেছিল আপনারা ভেতরে শান্তিপূর্ণভাবে
অবস্থান করেন আমরা নিরাপত্তা প্রহরায় আছি। বাহির থেকে কেউ ভেতরে প্রবেশ
করতে পারবে না। কিন্তু বাস্তব চিত্র দেখা গেল ভিন্ন। সরকার জোড় ইজতেমা
স্থগিত করার পরও সারা দেশ থেকে হাজার হাজার সাদ পন্থী টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে
কিভাবে একত্রিত হলো।
হামলাকারীরা ভেতরে ঢুকেই যাকে সামনে পেয়েছে তার উপরই ঝাপিয়ে পড়েছে।
শত শত ছাত্র ও সাথীকে রক্তাক্ত করেছে। ওইদিন হামলায় নিহত হয়েছে মুন্সিগঞ্জের
ইসমাইল মন্ডল এবং আহত হয়েছেন সহ¯্রাধিক।
আমীর নিযুক্ত না করলেও মাওলানা সা’দ নিজেকে তাবলীগের আমীর দাবি করেন
এবং কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী বক্তব্য দিতে থাকেন। যাতে ভারতের দারুল উলুম
দেওবন্দসহ হকপন্থী আলেম সমাজ আপত্তি তুলেন। এসব নিয়ে তাবলীগের দাওয়াতের
কাজে মতবিরোধ দেখা দেয়। দেওবন্দের আস্থা অর্জন না করা পর্যন্ত বাংলাদেশে
দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে সাদের কোন সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না। এ সিদ্ধান্তের
ফলে দাওয়াত তাবলীগের সাথীদের মাঝে বিভক্তি ঘটে। তারই ধারাবাহিকতায়
শনিবার টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে তারা তান্ডব চালায়।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক পুলিশের বিরুদ্ধে
অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শনিবার সংঘর্ষের দিন ময়দানের ভেতর থেকেই
প্রথমে বাইরে মুসুল্লীদের উপর ঢিল ছুড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে
যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।
৬ দফা দাবি:
১) শনিবারের হামলার নির্দেশদাতা সাদ পন্থী ওয়াসিফুল ও শাহাবুদ্দিন
নাসিমগংসহ হামলার হামলার সঙ্গে জড়িত সকলকে ২৪ঘন্টার মধ্যে আইনের
আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান
২)নিহত ও আহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা
৩) টঙ্গী ময়দান এতদিন যেভাবে শুরা ভিত্তিক পরিচালিত তাবলীগের সাথী ও ওলামে
কেরামের অধীনে ছিল তাদের কাছেই হস্তান্তর করতে হবে।
৪)অতিসত্বর কাকরাইলে সকল কার্যকলাপ হতে ওয়াসিফ ও নাসিমগংকে বহিস্কার
করতে হবে।
৫) সারা দেশে ওলামায়ে কেরাম ও শুরাভিত্তিক পরিচালিত তাবলীগ সাথীদের উপর
হামলা, মামলা বন্ধ করে পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
৬) টঙ্গীতে আগামী বিশ্বইজতেমা পূর্বঘোষিত ১৮,১৯ ও জানুয়ারি
অনুষ্ঠানের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

টঙ্গীতে ইজতেমা ময়দানে সংঘর্ষের ঘটনায় আরেক মামলা

এদিকে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র
করে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় টঙ্গী পশ্চিম থানায় আরো একটি মামলা দায়ের
করা হয়েছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক জানান, টঙ্গীতে
বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে হামলা ও হতাহতের ঘটনায়
রবিবার রাতে জোবায়ের পন্থি মাওলানা আব্দুল ওহাব ওই মামলা দায়ের করেছেন।
এতে সাদপন্থী ওয়াসিফুলসহ ২৮জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত দেড় শতাধিক
মুসল্লিকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে একইদিন দুপুরে টঙ্গী পশ্চিম
থানার এসআই রাকিবুল হাসান বাদি হয়ে পুলিশী কাজে বাধা ও হামলায় পুলিশ
আহত হওয়ার অভিযোগে একই থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাত ২০-
২৫হাজার ব্যাক্তিকে আসইম করা হয়েছে। পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ
করা হয়- শনিবার ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থি ও জোবায়ের পন্থিদের সংঘর্ষ
চলাকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে পুলিশের কাজে বাধা দেয়া এবং হামলা
চালানো হয়। এতে এক মুসল্লি নিহত এবং পুলিশসহ দুই শতাধিক মুসল্লি
আহত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451