শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

ইবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা : গ্রামে বাড়ি তালায় শোকের মাতম

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শনিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৮
  • ৩৪০ বার পড়া হয়েছে

সেলিম হায়দার, তালাঃ
‘একটা রিক্সা চাই, শৈশব ও কৈশোর ফিরে যাবার জন্য’ এটাই ছিল ফেসবুকে মেধাবী ছাত্র নাজমুল হাসানের শেষ স্ট্যাটাস। মৃত্যুর প্রায় দুই ঘন্টা আগে দেয়া স্ট্যাটাসে শৈশবে ফেরার আকুতি জানিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তালা উপজেলার বারাত গ্রামের আব্দুল মালেক গাজী ওরফে ভোলার ছেলে নাজমুল হাসান। সে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগে পড়াশুনা করতো।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের নিজ কক্ষে (২২৯ নং) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। তবে কেন সে আত্মহত্যা করেছে তার সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে মানসিকভাবে বিষন্নতায় ভোগার পাশাপশি সে প্রেসার, হাপানি ও চোখের নানা রোগে আক্রান্ত ছিল বলে জানা গেছে।

শনিবার (২০ অক্টোবর) সকালে নাজমুল হাসানের গ্রামের বাড়ি তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের বারাত গ্রামে গিয়ে দেখা যায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। নাজমুলের মা রোকেয়া বেগম কাঁদতে কাঁদতে পাগল প্রায়। বাবা আব্দুল মালেক গাজী ছেলের শোকে নির্বাক। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার আকাশ বাতাস। তিন ছেলের মধ্যে নাজমুল সবার ছোট। বাড়িতে বাড়িতে ফেরি করে কাপড় বিক্রি করে ছেলের পড়াশুনা চালাতো তার পিতা।

সহপাঠিরা জানায়, নাজমুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সে মেধাবী, সদালাপী ও বেশ অভিমানী ছিল। মানসিকভাবেও বেশ কিছুদিন বিষন্নতায় ভুগছিলো। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে নাজমুল হাসান ক্যাম্পাসে ঘুরতে বের হয়। পরে সে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হলে ফিরে নিজ কক্ষে তার বন্ধুদের ডাকেন। এ সময় তার বন্ধুরা কক্ষের সামনে গেলে দরজা বন্ধ পায়। ডাকাডাকি এক পর্যায়ে সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ফেলে। পরে কক্ষের ভেতরে রশিতে ঝোলানো অবস্থায় নাজমুলকে দেখতে পায় তারা। সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বদিউজ্জামান নাজমুলকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মানসিক হতাশা থেকে নাজমুল আত্মহত্যা করেছে।
ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রতন শেখ বলেন, ‘এটা আত্মহত্যা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। লাশ কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এরপর সেখান থেকে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হবে।’
ইবির আইন ও শরীয়াহ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. রেবা মন্ডল বলেন, ‘ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘটনা পরপরই ঘটছে যা তা রীতিমত অনাকাঙ্খিত দু:খজনক ব্যাপার। এই ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা রুখতে পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও অনেক দায়িত্ব থাকে।
জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘আমি ঘটনা শোনা মাত্রই কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে চলে আসি। এরপর পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই শিক্ষার্থীর রুম পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তার পরিবারকে জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার মর্মহত। এ ধরনের ঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451